এইদিন ওয়েবডেস্ক,উত্তরপ্রদেশ,১৭ ডিসেম্বর : গত ১৮ জুলাই,উত্তরপ্রদেশের রায়বেরেলি জেলায় হাজার হাজার রোহিঙ্গা এবং বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারীদের জন্ম শংসাপত্র জাল করার ঘটনা প্রকাশ্যে আসে। তারপরে এই বিষয়ে একটি তদন্ত করা হয়েছিল যা এখন শেষ হয়েছে। এযাবৎ মোট ৫২ হাজারের বেশি জাল শংসাপত্র পাওয়া গেছে। এই জালিয়াতির মধ্যে রয়েছে পাকিস্তান, বাংলাদেশ ও নেপাল সহ ভারতের অনেক রাজ্যের লোকের শংসাপত্র। এসব জাল শংসাপত্র বাতিলের ঘোষণা করেছে সরকার।
মিডিয়া রিপোর্ট অনুযায়ী, রায়বেরেলি জেলার সেলুন ব্লকের মোট ১১ টি গ্রামে ব্যাপক হারে ভুয়ো জন্ম শংসাপত্রের খোঁজ পেয়েছে উত্তরপ্রদেশ পুলিশ । এই ১১টি গ্রামের মোট ৫২,৫৯৪টি জাল জন্ম শংসাপত্র পাওয়া গেছে। এই জন্ম শংসাপত্রগুলি বিহার, মধ্যপ্রদেশ, ঝাড়খণ্ড, তামিলনাড়ু, কেরালা এবং পাঞ্জাব রাজ্যের পাশাপাশি বাংলাদেশ, পাকিস্তান এবং নেপালের নাগরিকদের নামে তৈরি করা হয়েছিল। এই সমস্ত জাল সার্টিফিকেট বাতিল করার নির্দেশ দিয়েছেন ডেপুটি ডিরেক্টর পঞ্চায়েতি রাজ শাস্বত আনন্দ সিং।
সেই সঙ্গে জেলার ডিপিআরওকে ভবিষ্যতে জন্ম-মৃত্যু সনদ দেওয়ার ক্ষেত্রে বিশেষ যত্ন নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। অনুসন্ধানে জানা গেছে, অনেক গ্রামে প্রতারকরা একদিনে ৫০০ থেকে ১০০০ জাল জন্ম শংসাপত্র তৈরি করেছে, যেখানে একটি কম্পিউটার ২৪ ঘণ্টায় ১০০টির বেশি শংসাপত্র তৈরি করতে পারে না। মনে করা হচ্ছে যে অনেক রাজ্যে বসে ষড়যন্ত্রকারীরা একই আইডি এবং পাসওয়ার্ড ব্যবহার করে একদিনে এতগুলি শংসাপত্র তৈরি করতে একসাথে কাজ করেছিল।
যে ১১টি গ্রামে জাল জন্ম শংসাপত্র পাওয়া গেছে, তার মধ্যে সবচেয়ে বেশি পাওয়া গেছে পলিপুর এলাকায় । এখানে ১৩৭০৭টি জাল সার্টিফিকেট পাওয়া গেছে। দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে নুরুদ্দিনপুর যেখানে প্রাপ্ত শংসাপত্রের সংখ্যা ১০১৫১। তৃতীয় নম্বর পৃথ্বীপুরের। এখানে ৯৩৯৩ টি জাল শংসাপত্র পাওয়া গেছে। এ ছাড়া সান্দা সাইদানে ৪৮৯৭টি, মাধপুর নিনাইয়ায় ৩৭৪৬টি, লাহুরেপুরে ৩৭৮০টি, গড়ি ইসলামনগরে ২২৫৫টি, অনানিশে ১৬৬৫টি, গোপালপুর ওরফে অনন্তপুরে ২২৫টি ও দুভানে ২টি জাল শংসাপত্র পাওয়া গেছে।
এই জালিয়াতির প্রধান অভিযুক্ত মহম্মদ জিশান, যিনি রায়বেরেলির সেলুনের বাসিন্দা। তার সঙ্গে ষড়যন্ত্রে জড়িত রিয়াজ, সুহেল খান এবং বিজয় সিং যাদবকেও ধরা হয়েছে। মামলার তদন্তে এটিএস-এর পাশাপাশি এনআইএ-কেও যুক্ত করা হয়েছে। এই প্রতারণার সঙ্গে জড়িত অন্য আসামিদের যোগসাজশ খতিয়ে দেখছে তদন্তকারী সংস্থাগুলি।
প্রসঙ্গত, বিষয়টি প্রকাশ্যে আসে যখন ২০০৪ সালের জুলাই মাসে কিছু গ্রামের জনসংখ্যার চেয়ে বেশি জন্ম শংসাপত্র তৈরি করা হয়েছিল। প্রাথমিকভাবে, এমনকি অনেক গ্রামপ্রধানও এই ষড়যন্ত্র সম্পর্কে অবগত ছিলেন না। নিজেকে পরিষ্কার দেখানোর জন্য বিজয় যাদব পুলিশের কাছে এই প্রতারণার অভিযোগ দায়ের করেছিলেন। পুলিশের তদন্তে জানা গেছে বিজয় যাদব তার অফিসিয়াল সিইউজি নম্বর জিশানকে দিয়েছিলেন। প্রতিটি জন্ম শংসাপত্রের অনুমোদন দেওয়ার ওটিপি এই নম্বরে আসত।।