প্রদীপ চট্টোপাধ্যায়,বর্ধমান ১৭ মে : বিনা নোটিশে নারদ মামলায় রাজ্যের দুই হেভিওয়েট মন্ত্রী,এক বিধায়ক ও এক প্রাক্তন মন্ত্রীকে গ্রেপ্তারের প্রতিবাদে পুড়লো প্রধানমন্ত্রী ও রাজ্যপালের কুশপুতুল।লকডাউন উপেক্ষা করে সোমবার দুপুরে পূর্ব বর্ধমানের জামালপুর বিধানসভার তৃণমূল নেতা কর্মিরা মেমারি তারকেশ্বর রোড অবরোধ করেন। সেখানেই তারা প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়ের কুশপুতুল দাহ করেন ।পাশপাশি এই গ্রেপ্তারির প্রতিবাদে এদিন রাজ্যের মন্ত্রী তথা পূর্ব বর্ধমান জেলা তৃণমূলের সভাপতি স্বপন দেবনাথ পূর্বস্থলীর হেমায়েতপুরে ধর্ণায় বসেন ।বিরোধীরা তৃণমূলের প্রতিবাদ বিক্ষোভে নামা নিয়ে যদিও কটাক্ষ করতে কশুর করেনি ।
কেন্দ্রীয় বাহিনীকে সঙ্গে নিয়ে সিবিআই সোমবার সাতসকালে রাজ্যের দুই মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম, ও সুব্রত মুখোপাধ্যায়কে বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করে।একই কায়দায় তৃণমূলের বর্তমান বিধায়ক মদন মিত্র ও প্রাক্তন বিধায়ক শোভন চট্টোপাধ্যায়কেও সিবিআই গ্রেপ্তার করে। এই খবর জানাজানি হতেই তোলপাড় পড়ে যায় রাজ্য জুড়ে। অনৈতিক ভাবে সিবিআই মন্ত্রী ও বিধায়কদের গ্রেপ্তার করেছে বলে অভিযোগ তুলে এদিন পথে নেমে প্রতিবাদে শরব হয় তৃণমূল। পূর্ব বর্ধমান জেলার বিভিন্ন ব্লকের তৃণমূল কর্মীরাও লকডাউন উপেক্ষা করে এই গ্রেপ্তারির প্রতিবাদে পথে নামে ।
দলের দুই হেভিওয়েট মন্ত্রী ও বিধায়ককে সিবিআইয়ের গ্রেপ্তারের প্রতিবাদে এদিন বেলা
১১ টা নাগাদ জামালপুর বিধানসভার তৃণমূলের নেতা কর্মীরা মেমারি তারকেশ্বর রোড অবরোধ করে। পথ অবরোধ বিক্ষোভের
নেতৃত্ব দেন জামালপুর বিধানসভার তৃণমূল বিধায়ক অলোক মাঝি ,ব্লক তৃণমূল সভাপতি
মেহেমুদ খাঁন ও ব্লকের তৃণমূল যুব সভাপতি ভূতনাথ মালিক। লকডাউন উপেক্ষা করে বহু দলীয় কর্মী ও সমর্থকে সঙ্গে নিয়ে তৃণমূলের নেতারা জামালপুরের পুলমাথা এলাকায় প্রায় ঘন্টা খানেক মেমারি তারকেশ্বর রোড অবরোধ করে রাখেন। পরে সেখানেই তাঁরা প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপাল জগদীপ ধনখাড়ের কুশপুতুল দাহ করেন ।
বিধায়ক অলোক মাঝি ও ব্লক তৃণমূল
সভাপতি মেহেমুদ খাঁন এদিন এক সুরে বলেন, “বিধানসভা ভোটে বিজেপির ভরাডুবি হয়েছে । সফল হয়নি বিজেপির বাংলা জয়ের স্বপ্ন । তাই প্রতিহিংসা চরিতার্থ করতে নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বাধীন কেন্দ্রের বিজেপি সরকার সিবিআই ও বাংলার রাজ্যপাল কে কাজে লাগিয়ে বিনা নোটিশে রাজ্যের দুই মন্ত্রী, এক বর্তমান বিধায়ক ও এক প্রাক্তন বিধায়ককে গ্রেপ্তার করেছে ।এই গ্রেপ্তারি অনৈতিক । তার প্রতিবাদ জানাতে এদিন পথে নামতে বাধ্য হয়েছেন বলে মেহেমুদ খাঁন জনিয়েছেন ” ।
তৃণমূলের বিধায়ক ও মন্ত্রীদের গ্রেপ্তারের খবর পাওয়ার পর এদিন রাজ্যের প্রাণিসম্পদ বিকাশ দপ্তরের মন্ত্রী স্বপন দেবনাথও প্রতিবাদে সরব হন।দলের কর্মী, সমর্থক ও কালনা বিধানসভার তৃণমূল বিধায়ক দেবব্রত বাগকে সঙ্গে নিয়ে স্বপন দেবনাথ কালনার বৈদ্যপুর মোড়ে পথ অবরোধ করে প্রতিবাদ জানান । পরে দুপুরে পূর্বস্থলীর হেমায়েতপুরে
তৃণমূল কংগ্রেসের পার্টি অফিসের সামনে প্রতীকী ধর্ণায় বসেন ।একই ঘটনার প্রতিবাদে মেমারি শহর তৃণমূল যুব সভাপতি শুভঙ্কর সাঁতরার নেতৃত্বে তৃণমূলের কর্মীরা এদিন বিকালে প্রতিবাদ বিক্ষোভে সামিল হয় ।গলসিতে তৃণমূল কর্মীরা জাতীয় সড়কে টায়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভ দেখায়। একই ভাবে এদিন প্রতিবাদে সামিল হন জেলার অন্য বিধানসভা এলাকার তৃণমূল কর্মীরাও।
মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ এদিন জানান বিজেপি ভোটে হারের প্রতিশোধ স্পৃহা থেকে অনৈতিকভাবে তৃণমূল কংগ্রেসের মন্ত্রী বিধায়কদের গ্রেপ্তার করেছে। বিজেপির এই ঘৃণ্য চক্রান্তের বিরুদ্ধে ধিক্কার জানাতেই ধর্ণায় বসেছেন বলে স্বপন দেবনাথ জানান ।
তৃণমূলের এই প্রতিবাদ প্রসঙ্গে জেলা বিজেপির সাধারণ সম্পাদক রামকৃষ্ণ চক্রবর্তী
বলেন,“নারদ মামলায় সিবিআই এর গ্রেপ্তারি নিয়ে তৃণমূল অহেতুক রাজনীতি করছে । গ্রেপ্তারি আইন মাফিক হয়েছে না হয়নি তার বিচার আদালত করবে । আইন আইনের পথে চলবে ।কিন্তু কোভিড বিধি লঙ্ঘন করে লকডাউন ভেঙে তৃণমূলের নেতা কর্মীরা এদিন যে ভাবে পথে জমায়েত করলেন সেটাই অপ্রত্যাশিত বলে রামকৃষ্ণবাবু মন্তব্য করেছেন ।’।