জ্যোতি প্রকাশ মুখার্জ্জী,গুসকরা(পূর্ব বর্ধমান),১৩ মার্চ : বৃত্তটা আঁকা শুরু হয়েছিল ২০১৬ সালে, আংশিক স্বপ্ন পূরণ হয় ২০২০ সালের সেপ্টেম্বর মাসে এবং অবশেষে আজ রবিবার ( ১৩ ই মার্চ) কুশল মুখার্জ্জীর চেয়ারম্যান পদে নির্বাচনের মধ্যে দিয়ে সেই বৃত্তটা সম্পূর্ণ হলো – এভাবেই বিষয়টিকে ব্যাখ্যা করলেন পূর্ব বর্ধমান জেলার গুসকরা মহাবিদ্যালয়ের প্রাক্তন সাধারণ সম্পাদক তথা আউসগ্রাম ১ নং ব্লকের তৃণমূল ছাত্র পরিষদের প্রাক্তন সভাপতি গণেশ পাঁজা । তিনি আরও বলেন,’এই নির্বাচনের মধ্যে দিয়ে শহরবাসী ও প্রতিটি তৃণমূল কর্মীর স্বপ্ন পূরণ হল ।
গত ২৭ শে ফেব্রুয়ারি গুসকরা পুরসভার নির্বাচন হয়। ২ রা মার্চ ফল প্রকাশিত হলে দেখা যায় তৃণমূল কংগ্রেস শহরের ১৬ টি ওয়ার্ডেই জয়লাভ করেছে। শহর সভাপতি ও পুর প্রশাসক মণ্ডলীর সদস্য হিসাবে তার অর্থবহ ভূমিকার জন্য চেয়ারম্যান পদে কুশল বাবুর নির্বাচন নিয়ে কোনো সংশয় না থাকলেও ফল বের হওয়ার পর থেকেই চেয়ারম্যান পদের জন্য দু’তিনটি নাম ভাসিয়ে দেওয়া হয়। যদিও শহরবাসীর সঙ্গে সঙ্গে অধিকাংশ কাউন্সিলারের সমর্থন ছিল কুশল বাবুর প্রতি। শেষ পর্যন্ত ১৩ ই মার্চ বোলপুরে সমস্ত কাউন্সিলারের উপস্থিতিতে এলাকার ভারপ্রাপ্ত নেতা অনুব্রত মণ্ডল চেয়ারম্যান পদে কুশল বাবুর নাম ঘোষণা করে সব সংশয় দূর করেন এবং শহরবাসীর আশা পূরণ করেন। কুশল বাবু হলেন গুসকরা পুরসভার ষষ্ঠ চেয়ারম্যান।ভাইস-চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন বেলি বেগম। জানা যাচ্ছে আগামী বুধবার ১৬ ই মার্চ চেয়ারম্যান পদে তিনি শপথ নেবেন।
চেয়ারম্যান পদে তার নাম ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গে তৃণমূল কর্মীরা তো বটেই শহরবাসীর মন খুশিতে ভরে ওঠে। বোলপুর থেকে তিনি শহরে ফিরলে তৃণমূল কর্মীরা তাকে নিয়ে আনন্দে মেতে ওঠে।
কুশল বাবুর রাজনীতিতে প্রবেশ ঘটে প্রয়াত কংগ্রেস নেতা চম্পক গড়াইয়ের হাত ধরে। বেড়ে ওঠেন চঞ্চল গড়াইয়ের ছত্রছায়ায় । ছাত্র রাজনীতির মধ্যে দিয়ে রাজনৈতিক জীবন শুরু হওয়ার পর দলের এক কঠিন পরিস্থিতিতে তিনি শহর সভাপতি হন। ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে গুসকরা শহরে তৃণমূলের বিপর্যয় ঘটে। দলের ফলাফলে হতাশ না হয়ে সুভদ্র ও মিষ্টিভাষী কুশল বাবু একদল তৃণমূল অন্ত প্রাণ কর্মীদের নিয়ে প্রতিটি ওয়ার্ডের মানুষের দরজায় গিয়ে দাঁড়ান। করোনার সময় তার ভূমিকা ছিল অসাধারণ। পুর প্রশাসক মণ্ডলীর অন্যতম সদস্য হিসাবেও নিষ্ঠার সঙ্গে তিনি তার দায়িত্ব পালন করেন এবং শহরবাসীর প্রশংসা আদায় করে নেন। একটা সময় শহরবাসীর মুখে মুখে ঘুরতে থাকে – আপদে বিপদে ডাকলেই পাই, চেয়ারম্যান হিসাবে কুশল মুখার্জ্জীকে চাই। অবশেষে সবার প্রত্যাশা পূরণ হলো। তবে প্রতিটি ক্ষেত্রেই তিনি পাশে পেয়েছেন বিধায়ক ও অনুব্রত মণ্ডলকে ।
চেয়ারম্যান পদে নিযুক্ত হওয়ার জন্য পরিবারের সদস্যরা প্রত্যেকে খুব খুশি হলেও সবচেয়ে খুশি হতে দেখা যায় কুশল বাবুর ভাইঝিকে। রাজনীতির পরিমণ্ডলে বেড়ে ওঠা জেঠু-অন্ত প্রাণ ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্রী কস্তুরি রাজনীতি না বুঝতে পারলেও জেঠু যে কিছু একটা হয়েছে বুঝতে পেরে তার মন খুশিতে ভরে ওঠে।
সমস্ত স্তরের তৃণমূলের নেতা-কর্মী, স্হানীয় বিধায়ক অভেদানন্দ থাণ্ডার, সাংসদ অসিত মাল এবং সর্বোপরি ‘দাদা’ অনুব্রত মণ্ডলের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে কুশল বাবু বলেন – দল যে দায়িত্ব দিয়েছে সেটা নিষ্ঠাভরে পালন করব। দিদির উন্নয়নের সুফল যাতে প্রতিটি শহরবাসী পায় সেই বিষয়ে সতর্ক থাকব। প্রতিটি কাউন্সিলর কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে শহরের উন্নতি করার চেষ্টা করব।’।