এইদিন ওয়েবডেস্ক,বাঁকুড়া,০২ এপ্রিল : এলাকার একটি বাগান থেকে সম্প্রতি কিছু এঁচড় চুরি যায় । আর চুরির অভিযোগ উঠেছিল হাইস্কুলের এক শিক্ষকের ছেলের বিরুদ্ধে । এনিয়ে সালিশিসভা ডাকা হয়েছিল শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেসের স্থানীয় কার্যালয়ে । আর ওই সালিশিসভায় আসার জন্য কয়েকজন তৃণমূল কর্মী ডাকতে গিয়েছিলেন শিক্ষকের ছেলেকে । সেই সময় ওই শিক্ষক এক তৃণমূল কর্মীর মাথায় কাটারির কোপ বসিয়ে দেয় বলে অভিযোগ । শুক্রবার রাতে ঘটনাটি ঘটে বাঁকুড়া জেলার কোতুলপুর থানার ডেওয়া গ্রামে । তুষার মন্ডল নামে ওই তৃণমূল কর্মীকে হাসপাতালে চিকিৎসা করানো হয় । এদিকে নির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে রাতেই ওই শিক্ষককে গ্রেফতার করে কোতুলপুর থানার পুলিশ । পুলিশ জানিয়েছে, ধৃত শিক্ষকের নাম সোমনাথ রায় । শনিবার তাঁকে বিষ্ণুপুর মহকুমা আদালতে তোলা হয় । এঁচড় চুরিকে কেন্দ্র করে শুক্রবার রাতে কার্যত হুলুস্থুল কান্ড বেধে যায় কোতুলপুর এলাকা ।
মথুরাটোপল মাধ্যমিক শিক্ষাকেন্দ্রে শিক্ষকতা করেন কোতুলপুর থানার ডেওয়া গ্রামের বাসিন্দা ধৃত সোমনাথ রায় । জানা গেছে, সম্প্রতি স্থানীয় এক গ্রামবাসীর ফলের বাগান থেকে দু’একটি এঁচড় চুরি যায় । আর তানিয়ে বাগান মালিক দ্বারস্থ হন স্থানীয় তৃণমূল নেতাদের । এনিয়ে শুক্রবার রাতে গ্রামের ডেওয়া বটতলা এলাকায় তৃণমূল কার্যালয়ে সালিশিসভা ডেকেছিল গ্রামের তৃণমূল নেতৃত্ব ।
ডেওয়া গ্রামে তৃণমূলের বুথ সভাপতি অসীম পালের কথায়, ‘আমরা খোঁজখবর নিয়ে জানতে পারি গ্রামবাসী বিনয় হালদার ও দেবাশীষ সরকারের নাবালক ছেলেরা মিলে এই কাজ করেছে । এই ঘটনায় আর কেউ জড়িয়ে ছিল কিনা জানতে ওই দুই কিশোরকে ডেকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় । তখন তারা সোমনাথ রায়ের বড় ছেলের নাম করে । তাই তাকে সালিশিসভায় আসার জন্য প্রথমে ৪ জন তৃণমূল কর্মী সোমনাথবাবুর বাড়িতে যায় । কিন্তু উনি কিছুতেই ছেলেকে পাঠাতে রাজি না হলে আরও কয়েকজন তৃণমূল কর্মী যায় । সেই সময় ওই শিক্ষক একহাতে একটা কাটারি এবং অন্য হাতে একটা হাতুরি নিয়ে আমাদের কর্মীদের উপর চড়াও হয় । কাটারি দিয়ে তুষার মন্ডলের মাথায় কোপ বসিয়ে দেয় ।’
অন্যদিকে অভিযুক্ত শিক্ষক সোমনাথ রায়ের দাবি,কয়েকজন তৃণমূল কর্মী মিলে তাঁর বাড়িতে আক্রমণ চালিয়েছিল । পরিবারের সদস্যদের মারধরের পাশাপাশি মহিলাদের শ্লীলতাহানিও করে তাঁরা । তাই আত্মরক্ষা করতে গিয়েই এই ঘটনা ঘটেছে ।
স্থানীয় সুত্রে জানা গেছে,তৃণমূল কর্মীরা এঁচড় চুরির ঘটনায় সোমনাথবাবুর ছেলে জড়িয়ে আছে বলে দাবি করে তাকে সালিশিসভায় আসার জন্য বলে । কিন্তু চুরির ঘটনায় ছেলে জড়িয়ে থাকার কথা মানতে চাননি সোমনাথবাবু । তখন এনিয়ে দু’পক্ষের মধ্যে তুমুল বাকবিতন্ডা শুরু হয় । তারই মাঝে তৃণমূল কর্মী তুষার মন্ডলের মাথায় কাটারির কোপ বসিয়ে দেন ওই শিক্ষক । তাঁর মাথা থেকে ফিনকি নিয়ে রক্ত বের হতে থাকে । এই দেখে ভয়ে সরে পড়েন আহত তৃণমূল কর্মীর সঙ্গীরা । যদিও তাঁরাই এসে তুষারবাবুকে উদ্ধার করে তড়িঘড়ি বৈডাঙ্গা উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রে ভর্তি করে । পরে এনিয়ে নির্দিষ্ট অভিযোগ দায়ের হলে রাতেই অভিযুক্ত শিক্ষককে গ্রেফতার করে পুলিশ ।।