এইদিন ওয়েবডেস্ক,চট্টগ্রাম,২৪ সেপ্টেম্বর : পরকীয়া সম্পর্কে জড়িয়ে প্রতারিত হয়ে আত্মঘাতী হয়েছে খুলনার একটি বিউটি পার্লারের কর্মী প্রিয়াঙ্কা বিশ্বাস(৩৫) নামে এক বধূ । গত ৩ সেপ্টেম্বর খুলনা শহরের সানমার ওশান সিটির পাশের ‘নাদিয়া’স মেকওভার’ নামে ওই বিউটি পার্লারের ওয়াশরুমে গলায় ওড়নার ফাঁস দেওয়া অবস্থায় তার ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার করে পুলিশ । ঘটনার তদন্তে নেমে পুলিশ দুই বছরের পরকীয়ার টানাপোড়েন আর প্রতারণার ঘটনার কথা জানতে পারে । এরপর গ্রেপ্তার করা হয় ওই বধূর প্রেমিক জাহাঙ্গীর আলম (৩৫)কে । পেশায় প্রকৌশলী জাহাঙ্গীর আলম (৩৫) চট্টগ্রাম জেলার রাউজান থানার দেওয়ানপুর গ্রামের বাসিন্দা ।
পুলিশ জানিয়েছে,বছর দুই ধরে গোপনে জাহাঙ্গীর আলমের সঙ্গে পরকীয়া সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েছিল প্রিয়াঙ্কা বিশ্বাস । সম্পর্কের অবনতির জেরে চট্টগ্রামের পাঁচলাইশে বিউটি পার্লারের ওয়াশরুমে গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করে প্রিয়াঙ্কা বিশ্বাসকে । তাকে আত্মহত্যায় প্ররোচিত করার জন্য গ্রেপ্তার করা হয়ে মহিলার প্রেমিক মহম্মদ জাহাঙ্গীর আলমকে (৩৫)।
এজাহার সূত্রে জানা যায়, প্রিয়াঙ্কা বিশ্বাসের স্বামী সজীব কান্তি দত্ত জীবিত থাকলেও, জাহাঙ্গীর আলমের সঙ্গে তার গোপন প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে দুই বছর আগে। ২৪ ও ২৫ আগস্ট তারা ঢাকার খিলক্ষেত এলাকায় এক বন্ধুর বাড়িতে এক সাথে ছিলেন এবং ঘনিষ্ঠ সম্পর্কে জড়ান। ঢাকা থেকে ফিরে এসে তাদের সম্পর্কে ফাটল ধরে—কারণ জাহাঙ্গীরের পারিবার তার অন্যত্র বিয়ে ঠিক করে । এই খবরে মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন প্রিয়াঙ্কা । এনিয়ে দুজনের মধ্যে অন্তর্দ্বন্দ্ব শুরু হয়। হোয়াটসঅ্যাপে তর্কবিতর্ক হয় দু’জনের । তার পরেই আত্মঘাতী হন ওই মহিলা ৷
জানা গেছে,৩ সেপ্টেম্বর বিকেলে প্রিয়াঙ্কা তার কর্মস্থল সানমার ওশান সিটির পাশের ‘নাদিয়া’স মেকওভার’ নামে বিউটি পার্লারের ভেতরে যায় । সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়, মৃত্যুর আগে তিনি দীর্ঘ সময় হোয়াটসঅ্যাপে প্রেমিক জাহাঙ্গীরের সঙ্গে কথা বলছেন । পরে বিকেল ৪টা থেকে সাড়ে ৫টার মধ্যে ওয়াশরুমের ঝর্ণার সাথে ওড়না পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করেন। পরিবার তাকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক রাত ১০টা ৪৫ মিনিটে মৃত ঘোষণা করেন।
তদন্তে তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় জাহাঙ্গীর আলমের অবস্থান শনাক্ত করে ২৩ সেপ্টেম্বর কর্ণফুলীর ইছানগর এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তিনি পরকীয়া প্রেম ও ঢাকায় একসাথে থাকার বিষয়টি স্বীকার করেছেন বলে জানিয়েছে তদন্তকারী কর্মকর্তা। জানা গেছে, প্রকৌশলী জাহাঙ্গীর আলম ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অব বিজনেস এগ্রিকালচার টেকনোলজি থেকে পড়ালেখা শেষ করে একটি সিমেন্ট কোম্পানিকে চাকরি করতেন। দুই মাস আগে তিনি কোম্পানিটির চাকরি ছেড়ে দেন।। তবে তিনি সহকর্মীদের জানিয়েছিলেন জার্মানি চলে যাবেন।
পাঁচলাইশ থানার এসআই ফারুক আহমদ জানান, প্রিয়াঙ্কার আত্মহত্যায় জাহাঙ্গীর আলম সরাসরি প্ররোচক হিসেবে ভূমিকা রেখেছেন। তার বিরুদ্ধে দণ্ডবিধির ৩০৬ ধারা (আত্মহত্যায় প্ররোচনা) অনুযায়ী মামলা রুজু হয়েছে। তবে আগে থেকেই জাহাঙ্গীরের বিরুদ্ধে একটি মামলা হয়েছে । আসামিকে আদালতে পাঠানো হয়েছে।।
