দিব্যেন্দু রায়,কাটোয়া(পূর্ব বর্ধমান),২৯ আগস্ট : এতদিন “খেলা হবে” শ্লোগান রাজনৈতিক উদ্দেশ্য ব্যবহৃত হত । এবার এই শ্লোগানকে হুমকি দেওয়ার কাজে ব্যবহার করলেন পূর্ব বর্ধমান জেলার কাটোয়া মহকুমা হাসপাতালের এক ঠিকাদার । আর তিনি হুমকি দিয়েছেন খোদ হাসপাতাল সুপার ডাঃ সৌভিক আলমকে । সুপারের অভিযোগ, কিংশুক মণ্ডল নামে ওই ঠিকাদার হোয়াটস আ্যাপে তাঁকে হুমকি দিয়ে লিখেছে,’খেলা হবে। এই খেলার মাঝে যে আসবে সে ফিনিশ হয়ে যাবে । দেখতে থাকুন। জীবনে কোনও দিন হারিনি । সেটা খেলার মাঠেই হোক। আর জীবনের খেলাতেই হোক। সব জায়গায় চ্যাম্পিয়ন হয়ে এসেছি। এতেও হব । অলরেডি নৈতিকভাবে জিতে গেছি । কিন্তু জানেন তো স্যার কুকুরের লেজ সোজা হয় না,ব্যাকা থাকে । তাই কুকুরগুলোর লেজটাকে সার্জারি করে সোজা করবো ।’
এদিকে এহেন মেসেজ পাওয়ার পরেই সোমবার কাটোয়া থানার দ্বারস্থ হয়েছেন হাসপাতালের সুপার । তিনি ওই ঠিকাদারের বিরুদ্ধে থানায় একটি এফআইআর দায়ের করেছেন । তাঁর অভিযোগ, হাসপাতালের বিরিয়ানির বিল থেকে শুরু করে বনসৃজন,ওষুধপত্র, আসবাবপত্র কেনাকাটা প্রভৃতি বিলে বিস্তর অসঙ্গতির কারনে তিনি পেমেন্ট আটকে দিয়েছিলেন । সেই কারনেই তিনি ওই ঠিকাদারের রোষানলে পড়েছেন । তিনি পুলিশকে জানিয়েছেন, কিংশুক মণ্ডল নামে ওই ব্যক্তি তাঁকে লাগাতার এভাবে হুমকি দিয়ে মানসিক চাপ সৃষ্টি করে চলেছেন । আর তার প্রভাব পড়ছে হাসপাতালের স্বাভাবিক কাজকর্ম এবং সাধারণ মানুষের পরিষেবার উপর । সুপার তার অভিযোগপত্রের প্রতিলিপি স্থানীয় বিধায়ক ছাড়াও প্রশাসনের বিভিন্ন স্তরে পাঠিয়েছেন । যদিও কাটোয়া মহকুমাশাসক অর্চনা পি ওয়াংখের বলেন,’আমি এখনও অভিযোগপত্র হাতে পাইনি । অভিযোগপত্র হাতে পাওয়ার পর বিষয়টি খতিয়ে দেখবো ।’
প্রসঙ্গত,চলতি বছরের ১৬ এপ্রিল কাটোয়া হাসপাতালে সুপার পদে দায়িত্ব নেওয়ার অব্যবহিত পরেই বনসৃজন করা, ওষুধপত্র এবং আসবাবপত্র কেনাসহ একাধিক ঠিকাদারের ৮১ টি বিলে প্রচুর অসঙ্গতি ধরা পড়ে । তার মধ্যে রয়েছে ৩ লাখ টাকারও বেশি বিরিয়ানি খাওয়ার বিল । আর এরপরেই সমস্ত বিলের পেমেন্ট আটকে রেখে বিভাগীয় তদন্ত হয় । এদিকে পালটা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে মামলা করেন ঠিকাদাররা । এই পরিস্থিতির মাঝেই এবার হোয়াটস আ্যাপে হাসপাতাল সুপারকে হুমকির অভিযোগ ঘিরে ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে এলাকায় । যদিও এই প্রসঙ্গে ঠিকাদার কিংশুক মণ্ডলের কোনো মতামত পাওয়া যায়নি । কারন বারবার ফোন করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি ।।