এইদিন ওয়েবডেস্ক,কেতুগ্রাম(পূর্ব বর্ধমান),১৭ ডিসেম্বর : গুলি চালিয়ে ভয় দেখানোর ঘটনায় অভিযুক্ত বিএসএফ জওয়ানকে ধরতে গিয়ে আক্রান্ত হল পূর্ব বর্ধমান জেলার কেতুগ্রাম থানার পুলিশ । কেতুগ্রাম থানার মোড়গ্রামের বাসিন্দা ফকিরুদ্দিন মল্লিক (৩৩) ওরফে ফক্কর নামে ওই বিএসএফ জওয়ানকে গাড়ি করে তুলে আনার সময় প্রচুর মহিলা ও পুরুষ লাঠি, বাঁশ,রড, রামদা,হাঁসুয়া ইত্যাদি অস্ত্রশস্ত্র হাত্র নিয়ে গাড়িটি ঘিরে ফেলে । তারা পুলিশকে ধরে ব্যাপক মারধর শুরু করে । হামলায় গুরুতর জখম হন কনস্টেবল রৌণক বন্দোপাধ্যায়। বাকি পুলিশ কর্মীরা অল্পবিস্তর আহত হন। এদিকে হামলা চালিয়ে অভিযুক্তকে পুলিশের হাত থেকে ছিনিয়ে নিয়ে চলে যায় । উল্লেখযোগ্য বিষয় হল, হামলাকারীরা অঅধিকাংশ মহিলা । এই ঘটনায় ৯ মহিলা সহ মোট ১০ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ । ধৃতরা হল : সাবিনা বেগম,আঙ্গুরা বেগম,হাকিমা খাতুন, আসমিনা খাতুন, তেহেমেনা খাতুন, কবিরা খাতুন, হানুফা খাতুন, জাবেরা খাতুন, সাবিনা খাতুন এবং আলি হোসেন। ধৃতদের প্রত্যেকের বাড়ি মোড়গ্রামে। সোমবার রাতে তাদের গ্রেফতারের পর আজ মঙ্গলবার কাটোয়া মহকুমা আদালতে তোলা হলে চার মহিলা সহ ৫ জনকে ২ দিনের জন্য পুলিশ হেফাজতে এবং বাকিদের জেল হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক । এদিকে সুযোগ বুঝে চম্পট দিয়েছে এই ঘটনায় মূল অভিযুক্ত ফক্কর ওরফে ফকরুদ্দিন মল্লিক । তার সন্ধানে তল্লাশি শুরু করেছে পুলিশ ।
উল্লেখ্য,এই প্রথম নয়,চারবছর আগেও গ্রাম্য বিবাদের সময় গুলি চালানোর অভিযোগ উঠেছিল ফকিরুদ্দিন মল্লিকের বিরুদ্ধে । সেই সময় গুলিবিদ্ধ হয়ে একজনের মৃত্যু হলে তাকে খুনের দায়ে জেলে যেতে হয় । জামিনে ছাড়া পেয়ে ফের তিনি চাকরিতে যোগ দেন । সম্প্রতি ছুটিতে বাড়ি আসেন ফকিরুদ্দিন । আর বাড়ি ফিরেই ফের গুলি চালিয়ে গ্রামবাসীদের ভয় দেখানোর অভিযোগ উঠল তার বিরুদ্ধে ।
জানা গেছে,কেতুগ্রামের মোড়গ্রামের বাগানপাড়ায় বাড়ি ফক্কর মল্লিকদের৷ তাদের বাড়ির ঠিক পাশেই রয়েছে একটি মাদ্রাসা । রবিবার ওই মাদ্রাসায় পাচিল দেওয়ার কাজ চলছিল । পাচিল দেওয়া নিয়ে ফক্করের পরিবার আপত্তি তোলে । এনিয়ে দু’পক্ষের মধ্যে বাকবিতণ্ডা শুরু হয় । তারই মাঝে পাচিল দেওয়ার কাজ করা রাজমিস্ত্রিদের ভয় দেখাতে আগ্নেয়াস্ত্র দেখিয়ে ফাঁকায় গুলি ছোড়ে ফক্কর । এমনকি সে মাদ্রাসার ভিতরে ঢুকে আগ্নেয়াস্ত্র দেখিয়ে হুমকি পর্যন্ত দিয়ে এসেছে বলে অভিযোগ । এই ঘটনায় ব্যাপক আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে গ্রাম জুড়ে ।
জানা গেছে,ঘটনার খবর পেয়ে রবিবার রাতেই তাঁর বাড়ি থেকে ফকরুদ্দিন মল্লিককে ধরে ফেলে পুলিশ । তাকে গাড়িতে তুলে থানায় নিয়ে আসার মুহুর্তে প্রচুর সশস্ত্র মহিলা এসে গাড়িটি ঘিরে ফেলে । তাদের সাথে যোগ দেয় আরও কিছু সশস্ত্র পুরুষ । তারা পুলিশকে ব্যাপক মারধর করে ফকরুদ্দিনকে ছাড়িতে নিয়ে যায় । পরে এই ঘটনায় কেতুগ্রাম থানার পুলিশ একটি স্বতপ্রণোদিত মামলা দায়ের করে । তার ভিত্তিতে ১০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয় । মূল অভিযুক্তসহ বাকিদের সন্ধান চলছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।।