এইদিন ওয়েবডেস্ক,বর্ধমান,২৩ জুন : ‘শিকার উৎসব’ পালনের নামে নির্বিচারে পশুপাখি হত্যার অভিযোগে ৩০ জনকে গ্রেফতার করেছে পূর্ব বর্ধমান জেলার কেতুগ্রাম থানার পুলিশ । শনিবার বিকেলে কেতুগ্রামের কুমোরপুর গ্রামের কাছে রেলগেট থেকে অদূরে মোটরচালিত ভ্যানে বেশকিছু পশুপাখি শিকার করে নিয়ে যাওয়ার সময় স্থানীয় পরিবেশপ্রেমী সংগঠনের স্বেচ্ছাসেবকরা শিকারিদের একটি দলকে আটকে কাটোয়া বনবিভাগকে খবর দেয় । এরপর বনবিভাগের কাছ থেকে খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে আসে পুলিশ । গোসাপ, বেজি,কাঠবেড়ালি,বনবিড়াল এবং বিভিন্ন পাখি মিলে তিন শতাধিক পশুপাখি সহ ৩৮ জনের একটি দলকে পুলিশ আটক করে । তাদের মধ্যে গ্রেফতার করা হয় মোট ৩০ জনকে । ধৃতদের বিরুদ্ধে ভারতীয় বন আইন এবং বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ আইনের ধারায় মামলা রজু করে আজ রবিবার কাটোয়া মহকুমা আদালতে তোলা হয় । যদিও প্রত্যেকের জামিন মঞ্জুর করেন বিচারক । এনিয়ে হতাশা প্রকাশ করেছেন বর্ধমান বনবিভাগের সহকারী বিভাগীয় বন আধিকারিক সোমনাথ চৌধুরী । তিনি বলেন,’আমরা কাটোয়া আদালতে জামিনের বিরোধিতা করে অভিযুক্তদের বিচারবিভাগীয় হেফাজতে নেওয়ার জন্য ফের আবেদন জানাব। প্রয়োজনে উচ্চ আদালতে আবেদন করব ।’
প্রসঙ্গত,উপজাতি সম্প্রদায়ের অন্যতম একটা ধর্মীয় রীতি হল ‘শিকার উৎসব’ । বছরের একদিন সম্প্রদায়ের লোকজন বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে ঘুরে নির্বিচারে পশুপাখি হত্যা করে বেড়ায় । এই প্রথার বিরুদ্ধে দীর্ঘ দিন ধরেই সরব হচ্ছেন পশুপাখিপ্রেমী ও পরিবেশবিদরা । শিকার রুখতে তারা ব্যক্তিগত উদ্যোগে সজাগ দৃষ্টিও রাখেন । তবুও চোরা শিকার চলেই আসছে । তবে শুধু উপজাতি সম্প্রদায়ের মধ্যেই এই প্রকার ‘নিষ্ঠুর’ রীতি প্রচলিত নেই । পশুপাখিদের প্রতি নিষ্ঠুরতা সমাজের সকল সম্প্রদায়ের মধ্যেই আছে । রসনা তৃপ্তি বা ধর্মীয় রীতি পালনের নামে নৃশংসভাবে এবং নির্বিচারে পশুপাখি হত্যার ঘটনা প্রতিনিয়ত ঘটে চলেছে সমাজে । অনেককে গর্ব করে পশু হত্যার নৃশংস বর্বরোচিত দৃশ্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোস্টও করতে দেখা যায় । কিন্তু দেশে তেমন কোনো কঠোর আইন না থাকায় অভিযুক্তদের আইনের আওতায় আনা সম্ভব হয়না । যেকারণে পশুপাখির প্রতি নৃশংসতার বিরুদ্ধে কঠোর আইন প্রণয়নের দাবি উঠছে বিভিন্ন মহল থেকে ।।