এইদিন ওয়েব ডেস্ক,কাটোয়া,১৬ নভেম্বর ঃ প্রিয় অভিনেতার অভিনয়ে মুগ্ধ হয়ে নিজের শরীর চিড়ে রক্ত দিয়ে চিঠি লিখেছিলেন কাটোয়া পুরসভার ১১ নম্বর ওয়ার্ডের ঘোষহাটের বাসিন্দা সৌমিত্র অনুরাগী অসিতবরণ দত্ত । অল্প সময়ের মধ্যে প্রত্যুত্তরও পেয়েছিলেন তিনি । সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় নিজের প্যাডে ও নিজের হাতে অসিতবরণবাবুকে চিঠি লিখেছিলেন ৷ প্রত্যুত্তরে তিনি তাঁর গুনমুগ্ধের প্রতি লিখেছিলেন,”সুজনেষু, আপনার চিঠি ও রক্তাক্ষরে লেখা শুভেচ্ছাবাণী পেয়ে আমি শিহরিত ও মুগ্ধ ।জানিনা কোন সুকৃতীর ফলে আমি এই আনুকূল্যের অধিকারী।আমার নমস্কার ও ধন্যবাদ নেবেন।” ২০১৬ সালের ২৩ জানুয়ারি তারিখে সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের সই করা ওই চিঠিটা অসিতবরণবাবু সযত্নে রেখে দিয়েছেন ।
অসিতবরনবাবু গৃহশিক্ষকতা করেন । তার পাশাপাশি লেখালেখিরও অভ্যাস রয়েছে বছর পঞ্চাশের সংস্কৃতি মনস্ক এই ব্যক্তিটির । স্থানীয় কয়েকটি ম্যাগাজিন ও ছোট পত্রপত্রিকাতে নিয়মিত লেখালেখি করেন অসিতবরনবাবু ।
অসিতবরনবাবু জানিয়েছেন, লেখালেখি ছাড়াও ছোটবেলা থেকেই তাঁর চিঠি লেখার শখ রয়েছে । দেশ বিদেশের কবি, সাহিত্যিক, শিল্পী থেকে শুরু করে রাস্ট্রনেতাদেরও তিনি চিঠি লিখেছেন । প্রত্যুত্তরও এসেছে ৷ সেই সমস্ত চিঠি তিনি সযত্নে রেখে দিয়েছেন ।
তিনি বলেন, ‘ঝিন্দের বন্দী’ সিনেমায় সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের অভিনয় আমায় মুগ্ধ করেছিল । তারপর থেকে আমি তাঁর অভিনীত প্রায় সব ছবিই দেখেছি । ওনার অভিনয় দেখে আমি এতটাই অনুপ্রানিত হয়েছিলাম যে ২০১৫ সালের ডিসেম্বর মাসে নিজের শরীর চিড়ে রক্ত দিয়ে সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়কে চিঠি লিখেছিলাম । অবশ্য উত্তর পেতে দেরি হয়নি । একমাস পূর্ণ হওয়ার আগেই আমি সৌমিত্রবাবুর কাছ থেকে প্রত্যুত্তর পেয়ে যাই ।’
রবিবার সংবাদমাধ্যমে প্রিয় অভিনেতার মৃত্যুর খবর শোনার চোখের জল ধরে রাখতে পারেননি তিনি । সোমবার বাড়িতে সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের প্রতিকৃতি ফুল মালা দিয়ে সাজিয়ে সপরিবারে শোকপালন করলেন অসিতবরণবাবু ।এদিন বাড়িতে প্রিয় অভিনেতাকে শ্রদ্ধা জানানোর পর্ব শেষ হওয়ার পর সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের হাতে লেখা সেই চিঠি দেখান অসিতবরনবাবু ৷ প্রিয় অভিনেতার স্মৃতি রোমন্থন করতে গিয়ে অশ্রুসিক্ত হয়ে পড়ে তাঁর দুই চোখ ।