এইদিন ওয়েবডেস্ক,কাটোয়া(পূর্ব বর্ধমান),১৪ সেপ্টেম্বর : পূর্ব বর্ধমান জেলার কাটোয়ার ‘ত্রাস’ জঙ্গল শেখের ছেলে জেলবন্দি কুখ্যাত দুষ্কৃতী সাদ্দাম শেখ বর্তমানে বর্ধমান কেন্দ্রীয় সংশোধনাগারে বন্দি । কিন্তু জেলে বসেই ভয় দেখিয়ে তোলাবাজির কাজ কাজ চালিয়ে যাচ্ছে সে । আর তার হয়ে এই দুষ্কর্ম কাটোয়া পুরসভার ভাইস চেয়ারম্যান লখিন্দর মণ্ডলের এক ভাগনা চালিয়ে যাচ্ছিল বলে অভিযোগ । কাটোয়া শহরের এক ব্যবসায়ীর সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে ভাইস চেয়ারম্যানের ভাগনাকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে । ধৃতকে কাটোয়া পুরসভার ১৮ নম্বর ওয়ার্ডের সার্কাস ময়দান এলাকার বাসিন্দা অমিত কুমার মণ্ডল (৩৪) ওরফে বাপ্পা বলে চিহ্নিত করেছে পুলিশ । আজ শনিবার ধৃতকে কাটোয়া আদালতে তোলা হলে ৯ দিনের জন্য পুলিশ হেফাজতে পাঠানো হয় । পাশাপাশি জেলবন্দি সাদ্দাম শেখকেও নিজেদের হেফাজতে নেওয়ার জন্য আদালতে আবেদন করেছে পুলিশ । এদিকে এই ঘটনায় চরম অস্বস্তিতে পড়েছে শাসকদল । ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে কাটোয়ার বিধায়ক রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায় বলেন,’আগেও ওর বিরুদ্ধে এই ধরনের অভিযোগের কথা শুনেছিলাম । আইন আইনের পথেই চলবে ৷’
পুলিশ সূত্রে খবর,জেলে বসেই প্রভাব খাটিয়ে কাটোয়ায় তোলাবাজি চালিয়ে আসছিল সাদ্দাম শেখ । আর সাদ্দামের নির্দেশে তার নাম করে এলাকার ধনী ব্যক্তিদের ভয় দেখিয়ে তোলাবাজির কাজ মূলত অমিত কুমার মণ্ডল করে আসছিল বলে অভিযোগ । সার্কাস ময়দান এলাকারই বাসিন্দা ইমাদুল ইসলাম নামে ওই ব্যবসায়ী শুক্রবার এনিয়ে কাটোয়া থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করলে বিষয়টি প্রকাশ্যে আসে । ইমাদুল ইসলাম পুলিশের কাছে অভিযোগে জানিয়েছেন যে মঙ্গলবার একটি অচেনা নম্বর থেকে তাকে ফোন করে ৫০০০ টাকা দাবি করা হয় । ওই টাকা বাপ্পার হাতে দিতে বলা হয় । টাকা না দিলে তাকে খুনের হুমকিও দেওয়া হয় বলে অভিযোগ তার । ইমাদুলের দাবি তার ফোনের কলার আইডিতে ওই নম্বরে ‘সাদ্দাম শেখ’ নাম দেখতে পেয়েছেন তিনি । এরপর ফের বৃহস্পতিবার আর একটা অচেনা নম্বর থেকে তার কাছে ফোন আসে । যে নম্বরে ‘বাপ্পা, কাটোয়া রবীন্দ্রপল্লী’ নাম উঠে আসে । তাকে টাকা নিয়ে বাপ্পারব মামার(চেয়ারম্যান) পিঁয়াজের আড়তের পাশে একটি রেস্টুরেন্টের সামনে রাস্তায় এসে টাকা দেওয়ার কথা বলা হয় । সেই মোতাবেক তিনি তিন হাজার টাকা তার হাতে দিয়ে আসেন । কিন্তু টাকা নেওয়ার পাশাপাশি বাপ্পা সতর্ক করে তাকে বলে যে জঙ্গল ও সাদ্দাম জেল থেকে ছাড়া পাওয়ার পর তাকে আরও টাকা দিতে হবে।
জানা গেছে,কাটোয়ার ওই ব্যবসায়ীর কাছে অভিযোগ পাওয়ার পরেই দুটি ফোন নম্বরের সূত্র ধরে ঘটনার তদন্তে নামে পুলিশ । প্রথম ফোনের লোকেশন বর্ধমান কেন্দ্রীয় সংশোধনাগারের আশপাশে খুঁজে পায় তদন্তকারী দল । দ্বিতীয় ফোনের লোকেশন কাটোয়া শহরেই ছিল । পাশাপাশি সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ পরীক্ষা করে বাপ্পার সঙ্গে অভিযোগকারীর সাক্ষাৎ করতে যাওয়ার প্রমাণও পায় পুলিশ । এরপর শুক্রবার রাতে কুমার মণ্ডল ওরফে বাপ্পাকে পুলিশ গ্রেফতার করে । এদিকে একজন কুখ্যাত দুষ্কৃতীর হয়ে তোলাবাজির অভিযোগে ভাগনে গ্রেফতারের বিষয়ে প্রতিক্রিয়া জানতে চাওয়া হলে কাটোয়া পুরসভার ভাইস চেয়ারম্যান লখিন্দর মণ্ডল বলেন,’আমি নিজের ব্যাবসা ও পুরসভার কাজ নিয়ে থাকি । ভাগনাকে কেন গ্রেফতার করা হল আমার জানা নেই ।’।