এইদিন ওয়েবডেস্ক,কাটোয়া(পূর্ব বর্ধমান),২২ ডিসেম্বর : রবিবার ছিল কলকাতা পুলিশের কনস্টেবল পদে নিয়োগের পরীক্ষা। পূর্ব বর্ধমান জেলার কাটোয়ার দাঁইহাট গার্লস হাইস্কুলে করা হয়েছিল একটি পরীক্ষাকেন্দ্র । পরীক্ষা দিতে গিয়ে টুকলি সহ এক মহিলা পরীক্ষার্থী হাতেনাতে ধরা পড়ে । আর তাকে জেরা করে প্রশ্ন ফাঁসের বড়সড় চক্রের হদিশ পেলো কাটোয়া থানার পুলিশ । ওই মহিলা পরীক্ষার্থীর নাম সুতপা হালদার । মঙ্গলকোটের কুলসোনা গ্রামে । মহিলাকে গ্রেপ্তার করে জেরা করতেই চক্রের অন্যতম পান্ডা কাটোয়া থানার মুলটি গ্রামের বাসিন্দা জাকির মণ্ডলের (২৭) হদিশ পায় পুলিশ । পুলিশ জাকিরকে গ্রেপ্তার করে । আজ সোমবার ধৃতদের কাটোয়া মহকুমা আদালতে তোলা হয় । বিচারক জাকিরকে একদিনের জন্য পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন। সুতপাকে একদিনের জন্য জেল হেফাজতে পাঠানো হয়।
জানা গেছে,দাঁইহাট গার্লস হাইস্কুলে পরীক্ষার জন্য সময় পূর্ব বর্ধমান জেলার গুসকরা পুলিশ ফাঁড়ির একজন এএসআই-এর উপর নিরাপত্তার দায়িত্ব পড়েছিল । তিনি জানান যে পরীক্ষার হলে চেকিং করার সময় একজন মহিলা এএসআই এবং মহিলা কনস্টেবল তল্লাশি চালানোর সময় পরীক্ষার্থী সুতপা হালদারের মোজার মধ্যে টুকলি পাওয়া যায় । তার মধ্যে কিছু প্রশ্ন ও উত্তর লেখা ছিল । সঙ্গে সঙ্গে তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়। জেরা করতেই ওই তরুনী জানান যে মুলটি গ্রামের বাসিন্দা জাকির মণ্ডলের কাছ থেকে হোয়াটসঅ্যাপের মাধ্যমে তিনি প্রশ্ন ও উত্তরপত্র পেয়েছেন । জাকির মণ্ডল নিজেও পরীক্ষার্থী৷
জানা গেছে,জাকির মণ্ডলের নাম প্রকাশ্যে আসতেই রবিবার গভীর রাতে মুলটি গ্রামে হানা দিয়ে বাড়ি থেকে তাকে পাকড়াও করে পুলিশ । আর জাকিরকে জেরা করতেই একটা ভুঁইফোড় কোচিং সেন্টারের নাম সামনে আসে৷ কাটোয়া শহরের কাছারিরোডের একটি ভবনে বছর দুয়েক আগে চাকরির পরীক্ষার কোচিং দিতে শুরু করে তারা । সেখানে কোচিং নেওয়ার সময়েই প্রশ্ন ফাঁস চক্রের সঙ্গে যোগাযোগ গড়ে ওঠে বলে পুলিশকে জানিয়েছেন জাকির । সেন্টারটি প্রশ্ন-উত্তর বিক্রি করত । কিন্তু মাস আটেক আগে ওই কোচিং সেন্টার উঠে গিয়ে কাটোয়ার পালিটা রোডে ভাড়াবাড়িতে সেন্টারটি চালু করা হয় । কিছু পরে সেখান থেকেও উঠে যায়। এদিকে ওই চক্রের একজনের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতার সুবাদে তার কাছ ছেকেই জাকির কলকাতা পুলিশের কনস্টেবল পদে পরীক্ষার প্রশ্ন ও উত্তরপত্র পেয়েছিল বলে পুলিশকে জানিয়েছে সে ।
তদন্তে পুলিশ জানতে পারে যে ওই কোচিং সেন্টারের একটি হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ ছিল । সেই গ্রুপে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে অর্থের বিনিময়ে প্রশ্ন-উত্তর আদানপ্রদান হত । বর্তমানে ওই সেন্টারের কোনো অস্তিত্ব নেই । তবে তাদের হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপটি রয়ে গেছে । যেটি চালাচ্ছিল জাকির মন্ডল । জাকির যার কাছ থেকে প্রশ্ন-উত্তর পেয়েছিল তদন্তের স্বার্থে তার নাম পরিচয় প্রকাশ্যে আনেনি পুলিশ । পুলিশের অনুমান,এক চক্রের জাল বহুদুর পর্যন্ত বিস্তৃত । বর্তমানে ধৃত জাকিরকে হেফাজতে নিয়ে জেরা করে চক্রের বাকি পান্ডাদের চিহ্নিত করার চেষ্টা চালাচ্ছে পুলিশ ।।

