এইদিন ওয়েবডেস্ক,কাটোয়া(পূর্ব বর্ধমান),২২ মার্চ : কিশোর পুত্র ক্যানসারে আক্রান্ত । তার উপর কয়েক মাস আগে তার বাম চোখে টিউমার ধরা পড়ে । টিউমারের অপারেশন করাতে গিয়ে চোখটি নষ্ট হয়ে গেছে । চিকিৎসকরা বলেছেন কিশোরের চোখে পাথর বসাতে হবে । অনেক টাকা খরচা । এদিকে স্বামীও ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে শয্যাশায়ী । এমতবস্থায় স্বামী ও সন্তানকে বাঁচাতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কাতর আবেদন জানিয়েছেন পূর্ব বর্ধমান জেলার কাটোয়ার এক গৃহবধূ ।
দিন দুয়েক আগে ‘সোশ্যাল ওয়ার্কার রাহুল দা’ অসহায় বধূর কাতর আকুতির ভিডিওটি ফেসবুকে পোস্ট করেছেন। ওই পোস্টে লেখা হয়েছে,’সুমন্ত পারমানিক বয়স তার ১১ ! এই ছোট্ট বয়সে লড়ছে ক্যান্সারের সাথে । কিছু মাস আগে তার চোখে টিউমার ধরা পড়ে । টিউমার এ তার এক চোখ বাতিল হয়ে যায় । ডাক্তারে বলেছে তার চোখে পাথর বসাতে হবে নয় চোখ পাল্টাতে হবে । যদি কেউ ডোনেশন করে,তারপর কলকাতায় ভালো ডাক্তার দেখানো । জানা যায় তার ক্যান্সার হয়েছে। একমাত্র পুত্র সন্তানের এই রোগ হওয়ার কথা শুনে মা-বাবা ভেঙ্গে পড়েছেন ।’
আরও জানানো হয়েছে,’জায়গা জমি পুঁজিপাতা সবকিছু দিয়ে তারা দেশের বিভিন্ন প্রান্তে গিয়ে হেমন্তর জন্য ভালো চিকিৎসার খোঁজ করে। এভাবে দিন চলে যায় তাদের কিন্তু সুমন্ত আর ঠিক হতে পারেনি। তার বাবাও ক্যান্সারে আক্রান্ত । এখন বাবা ও ছেলে দুজনেই ক্যান্সারে আক্রান্ত । বাড়ির একমাত্র যে রোজগার করতেন তিনি হয়তো বেশি দিন আর বাঁচবেন না। ছোট্ট ছেলে সুমন্ত ক্লাস ফোরের স্টুডেন্ট এখন সে আর স্কুলেও যেতে পারে না। তার ইচ্ছা ছিল বড় হয়ে ভালো ডাক্তার হবে । তার স্বপ্নটা মনে হয় এই ভাবেই ভেঙ্গে যাবে। মুম্বাইয়ের টাটা ক্যান্সার হসপিটাল তারা চিকিৎসা করায় । সেখান থেকে কেমোথেরাপির জন্য ডাক্তারে সাজেস্ট করে
। একটা মধ্যবিত্ত পরিবারের কাছে কেমোথেরাপি মানে অনেক টাকার খরচ। আমরা যদি কিছু কিছু সামর্থ্য অনুযায়ী ভাইয়ের পাশে দাঁড়াই তাহলে হয়তো ভাই সুস্থ হয়ে যাবে।’
বলা হয়েছে, পরিবারে চারজন সদস্য । মা-বাবা দিদি ও ছোট্ট ভাই সুমন্ত । আপনাদের সাথে বিষয়টা আমি শেয়ার করলাম আপনারা চাইলে নিচে দেওয়া নাম্বারে যোগাযোগ করতে পারেন নাম : – সুমন্ত প্রামাণিক, বাবার নাম : – সুকমল প্রামাণিক, মায়ের নাম : – মধুমিতা প্রামাণিক, বাড়ি : – কাটোয়া , হরিসভা পাড়া, জেলা : – পূর্ব বর্ধমান, থানা : – কাটোয়া, পিন নং : – ৭১৩১৩০,ফোন নং : – 6294533424 ।’
ভিডিওতে মহিলাকে বলতে শোনা গেছে, নমস্কার, কাটোয়ার হরিসভা পাড়া থেকে বলছি । আমার ছেলের চোখে টিউমার থেকে ক্যান্সার ধরা পড়েছে । আমি সবারই কাছে সাহায্য নিয়ে মুম্বাইয়ে ছেলের চিকিৎসা করাতে গিয়েছিলাম । আমার বাড়ি জমি সব বিক্রি করে দিয়েছি । কিচ্ছু নেই আমার । এখানে আমার বাবার বাড়ি । ছেলেকে নিয়ে মুম্বাইয়ে গিয়েছিলাম । ১১ মাস ধরে চিকিৎসা করিয়েছি । সেখানে সাড়ে সাত লক্ষ টাকা খরচা হয়েছে । আরও খরচা হবে । ছেলের চোখ পুরো নষ্ট হয়ে গেছে । ওর কেমোথেরাপি হতে বাকি আছে । বাচ্চাটাকে সুস্থ করার জন্য কিছু সাহায্য করুন আপনারা।’
তিনি আরও বলেন, বাচ্ছাটার চিকিৎসা করাতে গিয়ে ওর বাবারও ক্যান্সার ধরা পড়েছে । অপারেশন করে পেটে কি একটা বাদ দিয়েছে । কথা বলতে পারেনা । নিজে খেতে পারে না । নল দিয়ে খাবার দিতে হয় । ওর বাবারও চিকিৎসা করাতে বাকি আছে। ওর বাবা কাজকর্ম করতে পারেনা ।’ এরপর তিনি হাত জোড় করে বলেন, সবাই মিলে আমাকে সাহায্য করুন । আমি খুব অসহায় । আপনারা যদি সাহায্য করেন খুব উপকার হয়,তাহলে আমি বাচ্চা আর ওর বাবাকে সুস্থ করতে পারি ।’

এইদিন থেকে ফেসবুক পেজে দেওয়া নম্বরে ফোন করা হলে পরিবারের দুর্দশার কথা খুলে বলেন মধুমিতা প্রামাণিক । তিনি বলেন, ‘বহুদিন আগে আমার স্বামীর জিভে মাছের কাঁটা ঢুকে গিয়েছিল । কিন্তু তিনি বিষয়টি গুরুত্ব দেননি । মাঝেমধ্যে ব্যাথা হলে ব্যথা কমানোর ওষুধ খেতেন । ছেলের চিকিৎসা করাতে গিয়ে স্বামীকে পরীক্ষা করা হলে তার জিভে ক্যান্সার ধরা পড়ে । এরপর সেখানে অস্ত্রোপচার করে স্বামীর জিভের অর্ধেক অংশ কেটে বাদ দিতে হয়। তারপর থেকে তিনি কথা বলতে পারেন না এবং নিজে খেতেও পারেন না। সপ্তাহ খানেক আগে মুম্বাই থেকে বাড়ি ফিরে এসেছি আমরা । তারপর থেকে আমার স্বামী শয্যাশায়ী ।’ওই ফেসবুক পেজে অসহায় গৃহবধূর ব্যাংক একাউন্ট নাম্বার টাও শেয়ার করা হয়েছে ।।
ফেসবুক লিঙ্ক : https://www.facebook.com/share/v/15NDrj6ZMW/