দিব্যেন্দু রায়,কাটোয়া(পূর্ব বর্ধমান),২০ আগস্ট : পরকীয়ার জেরে স্বামীকে খুনের মামলায় ঘাতক স্ত্রী ও স্ত্রীর প্রেমিককে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিল পূর্ব বর্ধমান জেলার কাটোয়া মহকুমা আদালত । সাজাপ্রাপ্তদের নাম শম্পা মণ্ডল ও তাঁর প্রেমিক নয়ন পাল । মঙ্গলবার কাটোয়া প্রথম অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা আদালতে এই সাজা ঘোষণা করেন বিচারক সুব্রত মুখোপাধ্যায়।যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের পাশাপাশি দু’জনকে ১০ হাজার টাকা করে জরিমানা অনাদায়ে আরও এক বছর কারাদণ্ডের আদেশ দেওয়া হয়েছে ।
শম্পা মণ্ডলের শ্বশুরবাড়ি কাটোয়া থানার বিজয়নগর গ্রামে ৷ তার স্বামীর নাম সুজিত মণ্ডল । সুজিতবাবু একটি মিষ্টির দোকানে কাজ করতেন। ঘটনার প্রায় ১৮ বছর আগে মঙ্গলকোট থানার শ্যামবাজার গ্রামের মেয়ে শম্পার সঙ্গে তাঁর বিয়ে হয়েছিল। এক ছেলে ও এক মেয়ে রয়েছে তাদের । ঘটনাটি ঘটে ২০১৯ সালের ১৭ জুলাই ৷ রাতে ঘরের মধ্যে ছেলে ও মেয়েকে খাটে নিয়ে শুয়েছিলেন শম্পা। মেঝেতে শুয়েছিলেন সুজিতবাবু । পরেরদিন সকালে যখন সুজিতবাবুর নিথর দেহ উদ্ধার হয়। শম্পা দাবি করেছিলেন যে ঘুমের মধ্যেই হৃদরোগে মৃত্যু হয়েছে তার স্বামীর । কিন্তু একথায় বিশ্বাস করতে পারেনি মৃতের পরিবার ।
ওই দিনেই নিহত সুজিত মণ্ডলের বাবা জ্যোতিষচন্দ্র মণ্ডল কাটোয়া থানায় তাঁর পুত্রবধূ শম্পা মণ্ডল এবং নয়ন পালের বিরুদ্ধে তার ছেলেকে খুনের অভিযোগে একটি এফ আই আর রজু দায়ের করেন । তার অভিযোগের ভিত্তিতে দু’জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ । পুলিশের ম্যারাথন জেরায় তারা খুনের কথা কবুল করে । পরে ময়নাতদন্তের রিপোর্ট এলে শ্বাসরোধ করে খুনের বিষয়টি আরও স্পষ্ট হয় ।
শম্পা মণ্ডল কবুল করেন, ঘটনার দিন রাতে খাবারের সঙ্গে স্বামীকে পাঁচটি ঘুমের বড়ি খাইয়েছিলেন তিনি । ঘুমের ট্যাবলেট খাওয়ানোর পর যখন স্বামী প্রায় যখন অচেতন তারপর মধ্যরাতে প্রেমিক নয়নকে ডেকে দুজন মিলে মুখে বালিশ চাপা দিয়ে শ্বাসরোধ করে স্বামীকে খুন করেন । এই মামলায় মোট ১১ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ করা হয়েছিল। তার মধ্যে মূল সাক্ষী নিহতের ছেলে সুদীপ্ত এবং মেয়ে সুদীপ্তা । ওইবছরের ২৮ সেপ্টেম্বর পুলিশ আদালতে চার্জশিট দাখিল করে ।সোমবার দুজনকে দোষী সাব্যস্ত করা হয় । আজ সাজা ঘোষণা করেছে আদালত ।।