দিব্যেন্দু রায়,কাটোয়া(পূর্ব বর্ধমান),২৭ জুন : টিউশন না পড়ার অপরাধে প্রাণীবিদ্যা অনার্সের ষষ্ঠ সেমিষ্টারের পরীক্ষায় ১১ পড়ুয়াকে একটি নির্দিষ্ট বিষয়ে ফেল করানোর অভিযোগ উঠল পূর্ব বর্ধমান জেলার কাটোয়া কলেজে । এই অভিযোগ তুলে সংশ্লিষ্ট বিভাগের ৩ শিক্ষক শিক্ষিকার বিরুদ্ধে আজ বৃহস্পতিবার কলেজের অধ্যক্ষের কাছে গণ অভিযোগ জমা দিলেন অকৃতকার্য পড়ুয়ারা ৷ অভিযোগপত্রে তারা জানিয়েছেন যে টিউশন না পড়ার অপরাধে ৩ শিক্ষক শিক্ষিকা মিলে ‘সি সি ১২ জেনেটিক্স’ এবং ‘সি সি ১১ মলিকিউলার বায়োলজি’ বিষয়ে ওই ১১ জন ছাত্রছাত্রীকে ফেল করিয়ে দেওয়া হয়েছে । তাদের দাবি, কলেজের প্রাণীবিদ্যা বিভাগের ওই তিনজন শিক্ষক শিক্ষিকা ছাড়া অন্যান্য শিক্ষক যাঁরা রয়েছেন তাদের মাধ্যমে ওই উত্তরপত্র ফের যাচাই করা হোক ।
জানা গেছে,এবারে কাটোয়া কলেজের প্রাণীবিদ্যা অনার্সের ষষ্ঠ সেমিষ্টারে ১৮ জন ছাত্রছাত্রী পরীক্ষা দিয়েছিলেন । কিন্তু ফলাফল ঘোষণার পর দেখা যায় যে তাদের মধ্যে ১১ জন ‘সি সি ১২ জেনেটিক্স’ এবং ‘সি সি ১১ মলিকিউলার বায়োলজি’ বিষয়ে অকৃতকার্য হয়েছেন । অকৃতকার্য পড়ুয়াদের কথায়,’ইন্টারন্যাল-এ ১৫ নম্বর এবং হোম সেন্টারে প্র্যাকটিক্যালের ২০ নম্বর মিলে মোট ৩৫ নম্বর কলেজের হাতে থাকে । একটি পেপারে মোট মার্কস থাকে ৩৫ এবং বাইরের সেন্টারে থিওরির ৪০ নম্বর সহ মোট ৭৫ নম্বর থাকে । এই ৭৫ নম্বরের মধ্যে কেউ ২৬ পেলেই সে ওই বিষয়ে সহজেই পাশ করে যায় । থিওরিতে শূন্য পেলেও কলেজের হাতে যে ৩৫ নম্বর থাকে তার মধ্যে ২৬ নম্বর দিলে কেউ অকৃতকার্য হত না । কিন্তু কলেজ সেই নম্বর না দিয়ে ইচ্ছাকৃতভাবে ফেল করিয়ে দিয়েছে ।
তাদের অভিযোগ, প্রাণীবিদ্যা বিভাগের একজন শিক্ষিকা বাড়িতে টিউশন পড়ান । তাঁর সঙ্গে আরও দুই শিক্ষক যুক্ত আছেন । তারা আমেদের আগেই হুমকি দিয়েছিলেন যে তাদের কাছে টিউশন না পড়লে ফেল করিয়ে দেওয়া হবে । কিন্তু আমারা তাদের কাছে আমরা টিউশন পড়তে রাজি হয়নি । আর সেই কারনে প্রতিহিংসা বশত আমাদের ফেল করিয়ে দেওয়া হয়েছে ৷’ যদিও পড়ুয়ারা যে তিন শিক্ষক শিক্ষিকার বিরুদ্ধে অভিযোগের আঙুল তুলেছেন তাদের মধ্যে কৌশিক সরকার এই অভিযোগ অস্বীকার করে জানিয়েছেন যে তিনি বাড়িতে টিউশন পড়ান না।
কলেজের অধ্যক্ষ নির্মলেন্দু সরকার বলেন,’ কলেজের দুটি নির্দিষ্ট কমিটির দ্বারা পড়ুয়াদের অভিযোগ খতিয়ে দেখার পর পড়ুয়াদের অভিযোগ পত্র সংশ্লিষ্ট কমিটির কাছে পাঠিয়ে দিয়েছি।’ তিনি আরও বলেন,’আইন অনুযায়ী কর্মরত কোনো শিক্ষক শিক্ষিকা টিউশন পড়াতে পারেন না । এই বিষয়ে যদি সুনির্দিষ্ট অভিযোগ আসে তাহলে পুলিশের মাধ্যমে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’।