এইদিন ওয়েবডেস্ক,কাটোয়া(পূর্ব বর্ধমান),০৮ অক্টোবর : কলকাতার আরজি কর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের তরুনী চিকিৎসক ‘তিলোত্তমা’র ধর্ষণ -খুনের ঘটনার পর হাসপাতালের চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের নিরাপত্তা নিয়ে বড়সড় প্রশ্ন চিহ্ন উঠছে । হাসপাতালের আন্দোলনরত পড়ুয়াদের অন্যতম প্রধান দাবি হল নিরাপত্তা । কিন্তু অতবড় ঘটনার পরও যে রাজ্যের সরকারি হাসপাতালগুলিতে ডাক্তার ও স্বাস্থ্যকর্মীদের নিরাপত্তা যে তলানিতে তা একের পর এক ঘটনায় প্রমাণ হয়ে যাচ্ছে । এবারে পূর্ব বর্ধমান জেলার কাটোয়া মহকুমা হাসপাতালের নার্সিং হোষ্টেলে ঢুকে নার্সদের উদ্দেশ্যে অশ্লীল অঙ্গভঙ্গির করার অভিযোগ উঠল হাসপাতালের চতুর্থ শ্রেণীর এক কর্মীর ছেলের বিরুদ্ধে । ঘটনার সময় অভিযুক্ত মদ্যপ অবস্থায় ছিল এবং নার্সদের বেশ কিছু অন্তর্বাসও চুরি করে নিয়ে পালায় বলে অভিযোগ । নার্সরা এতটাই আতঙ্কিত হয়ে পড়েন যে দরজা লাগিয়ে দীর্ঘক্ষণ ঘরের মধ্যে বসে থাকেন । যদিও পরে হাসপাতাল সুপারের অভিযোগের ভিত্তিতে শেখ মুন্না(৩৫) নামে অভিযুক্ত যুবককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ । ধৃত যুবক হাসপাতালের চতুর্থ শ্রেণীর কর্মী মহসিন শেখের ছেলে বলে জানা গেছে ৷ ঘটনার পর থেকে চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন কাটোয়া হাসপাতালের নার্সরা ।
জানা গেছে,কাটোয়া মহকুমা হাসপাতাল চত্বরের দুতলা ভবনের উপরের ঘরে থাকেন হাসপাতালে কর্মরত নার্সরা থাকেন । অন্যদিকে ধৃত যুবক শেখ মুন্নার নিজস্ব একটা অ্যাম্বুলেন্স রয়েছে৷ সেটা সে ভাড়ায় খাটায় ।মহসিন শেখ হাসপাতাল কোয়ার্টারে থাকেন। তার কাছেই থাকে তার ছেলে । ঘটনাটি ঘটে সোমবার বিকেল তিনটে নাগাদ । শেখ মুন্না মদ্যপ অবস্থায় নার্সিং হোষ্টেলে ঢুকে পড়ে । সেই সময় দুজন নার্স দরজা বন্ধ করে বিশ্রাম নিচ্ছিলেন । ঘরের দরজা ভেজানো ছিল । তাদের মধ্যে একজন নার্স শৌচাগারে যাবার জন্য ঘরের বাইরে বের হতে দেখেন শৌচাগার থেকে টলতে টলতে বের হচ্ছে শেখ মুন্না । নার্সকে দেখে যে অশ্লীল অঙ্গভঙ্গি করতে শুরু করে । ওই নার্স তখন আতঙ্কে ছুটে ঘরে ঢুকে দরজা বন্ধ করে দিয়ে চিৎকার করে লোকজন ডাকাডাকি করেন।
নার্স বলেন,’আমি যখন হাসপাতালের কর্মীদের ডাকছিলাম তখনও মুন্না দরজার বাইরে দাঁড়িয়ে সাড়া দিচ্ছিল । পরে সে দোতলায় ও নিচে আমাদের যেসব অন্তর্বাস শুকাতে দেওয়া ছিল সেগুলি নিয়ে পালিয়ে যায় । এরপর অনান্য নার্সরা ছুটে এলে সকলে মিলে আমরা পুরো ঘটনা হাসপাতালের সুপারকে জানাই।’ জানা গেছে,কাটোয়া হাসপাতালের নার্স হোষ্টেলে দিনের বেলায় কোনও নিরাপত্তারক্ষী থাকে না । ফলে দুপুরে বিশ্রামের সময় চরম আতঙ্কের মধ্যে থাকতে হয় তাদের । রাজ্য জুড়ে একের পর এক হাসপাতালে হামলার ঘটনার পরেও কেন কাটোয়া হাসপাতালের নার্স হোষ্টেলে দিনে নিরাপত্তারক্ষী থাকে না তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে । যদিও সোমবার বিকেলের ওই ঘটনার পর দিনে নার্সিং হোষ্টেলে নিরাপত্তারক্ষী মোতায়েনের আশ্বাস দিয়েছেন হাসপাতাল সুপার । আজ মঙ্গলবার ধৃতকে কাটোয়া আদালতে পাঠানো হয়।।