সূচনা গাঙ্গুলি,শিয়ালদহ,২৬ মার্চ : নিজগুণে যে ক’টি সাহিত্য পত্রিকা গোষ্ঠী বাংলা সাহিত্য জগতের পাঠক হৃদয়ে নিজেদের একটা আলাদা জায়গা করে নিয়েছে তার অন্যতম হলো খড়দহর ‘মৌনমুখর’ সাহিত্য পত্রিকা গোষ্ঠী । গত তিন বছর ধরে নবীন-প্রবীণ কবি প্রতিভার সৃষ্টি সমৃদ্ধ সাহিত্য পত্রিকা তারা প্রকাশ করে চলেছে। প্রসঙ্গত এই পত্রিকা গোষ্ঠীর দু’টি সাহিত্য পত্রিকা আছে। প্রতিটি পত্রিকা বছরে দু’বার প্রকাশিত হয়। বিভিন্ন জেলা থেকে আগত প্রায় ৭০ জন কবি-সাহিত্যিক ও সাহিত্য জগতের বেশ কয়েকজন বিশিষ্ট ব্যক্তির উপস্থিতিতে শনিবার (২৫ মার্চ ২০২৩) শিয়ালদহের কৃষ্ণপদ ঘোষ মেমোরিয়াল ট্রাস্ট হলে আয়োজিত এক আড়ম্বর পূর্ণ অনুষ্ঠানের মাধ্যমে পত্রিকা গোষ্ঠীর অন্যতম ‘কন্যাশ্লোক’ পত্রিকার তৃতীয় বর্ষের পঞ্চম সংখ্যার মোড়ক উন্মোচিত হয়। ষাট জন মহিলা কবি-সাহিত্যিকের ভিন্ন স্বাদের কবিতা, গল্প ও প্রবন্ধ দিয়ে এই সংখ্যাটি সাজানো আছে।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির আসন অলংকৃত করেন ‘মনন’ পত্রিকা গোষ্ঠীর কর্ণধার তথা বিশিষ্ট বাচিক শিল্পী পার্থ বসু ও শ্রীমতি রাতুলা বসু। এছাড়াও অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সংগীতা বরুয়া, শেফালী দেবনাথ, মিনু রায়, শম্পা গুহ, বাচিক শিল্পী তথা কবি অন্তরা সিংহরায় সহ আরও অনেকে।
নিষেধাজ্ঞা জনিত কারণে প্রদীপ প্রজ্জ্বলন বা শঙ্খধ্বনি না হলেও মৌমিতা চ্যাটার্জ্জীর উদ্বোধনী সঙ্গীততের মধ্যে দিয়ে অনুষ্ঠানের শুভ সূচনা হয়। তারপর প্রায় তিন ঘণ্টার অনুষ্ঠানটি পত্রিকা প্রকাশ, উপস্থিত কবিদের মূল্যবান বক্তব্য, বাচিক শিল্পীদের আবৃত্তি পাঠ, কবিতা কোলাজ, গান প্রভৃতিতে পরিপূর্ণ ছিল। অনুষ্ঠানের অন্যতম আকর্ষণ ছিল ‘মনন’ বাচিক সংস্থা পরিবেশিত শ্রুতিনাটক যেটা মুহূর্তের মধ্যে অনুষ্ঠানের পরিবেশটাই পাল্টে দেয়। অনুষ্ঠানে দর্শকদের উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মত।
এর আগে উদ্যোক্তাদের পক্ষ থেকে গলায় উত্তরীয় ও হাতে ‘কন্যাশ্লোক’ পত্রিকাটি তুলে দিয়ে অতিথিদের বরণ করে নেওয়া হয়। এছাড়াও হাতে তুলে দেওয়া হয় একতাড়া। এবারের সংকলনে প্রকাশিত প্রবন্ধ, গল্প ও কবিতা – এই তিনটি বিভাগে সেরা তিনজনকে সম্মাননা প্রদান করা হয়। তাদের মাথায় পড়িয়ে দেওয়া হয় সোনালী মুকুট ও হাতে দেওয়া হয় হস্তশিল্প মেলায় প্রস্তুত ‘দুর্গার কোলে গণেশ’ মূর্তি। ‘কন্যাশ্লোক’ পত্রিকার সভাপতি সন্দীপ রায় ও সম্পাদক পত্রালি গুহ বিশিষ্ট গুণীজনদের হাতে কন্যাশ্লোক পত্রিকাটি তুলে দেন।
পত্রিকা গোষ্ঠীর সভাপতি সন্দীপ রায় বললেন, মহিলাদের নিজস্ব ভাবনা প্রকাশ করার জন্য তারা এই পত্রিকাটি প্রকাশ করেন। যদিও তিনি লিঙ্গ বৈষম্যে বিশ্বাসী নন। তাইতো ‘সম্পাদিকা’-র পরিবর্তে ‘সম্পাদক’ শব্দটি ব্যবহার করা হয়। তার আশা এমন একদিন আসবে পত্রিকার নামের আগে ‘কন্যাশ্লোক’ শব্দ বন্ধনী উঠে যাবে। প্রকৃত অর্থে সেটা সবার হয়ে উঠবে।।