এইদিন ওয়েবডেস্ক,কলকাতা,২৭ জুন : কসবা ল’ কলেজের ভিতরে ছাত্রীকে গণধর্ষণে অভিযুক্ত তৃণমূল ছাত্র পরিষদেরনেতা মনোজিৎ মিশ্রকে আড়াল করার অভিযোগ উঠেছে পুলিশের বিরুদ্ধে। অভিযোগ, এফ আই আরে অভিযোগকারীনিকে দিয়ে অভিযুক্তের নাম মুছে M লিখতে বাধ্য করেছে পুলিশ। যদিও মনোজিতের ফেসবুক পেজে একের পর এক তৃণমূল নেতার সঙ্গে ছবি প্রকাশ্যে এসেছে । অভিষেক ব্যানার্জি থেকে মন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্যের সঙ্গে দেখা গিয়েছে অভিযুক্ত মনোজিৎ মিশ্রকে৷
রেখে শ্রীরামপুরের তৃণমূল কংগ্রেস সাংসদ কল্যাণ ব্যানার্জির কিছু মন্তব্য ঘিরে নতুন করে বিতর্কের জন্ম দিয়েছে । কসবা ল’ কলেজের ভিতরে ছাত্রীকে গণধর্ষণের ঘটনায় নিরাপত্তা নিয়ে কল্যানকে সাংবাদিকরা প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, ” রাত জাগো দিন জাগো নিরাপত্তা নিয়ে কি আছে ? সব জায়গায় তেই একই অবস্থা । পুরুষের মানসিকতার পরিবর্তন না হলে এই ধরনের ঘটনা ঘটতে থাকবে । আপনাদের পলিটিক্যাল এজেন্ডা আছে তাই মাইক নিয়ে আসছেন মিডিয়া থেকে । নিরাপত্তা সবই রয়েছে । কিন্তু একজন বন্ধু যদি বান্ধবীকে রেপ করে সেখানে নিরাপত্তা কি করে দেবে বলুন তো আমাকে ? কলেজের ভেতরে যদি করে সেখানে কি পুলিশ থাকবে ? আরে ভাই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কি পুলিশ থাকবে আপনি বলুন না ? নিরাপত্তা কে দেবে ? নিরাপত্তা তো তার সহকর্মীরা দেবে । এখানে তো সহকর্মীরাই রেপ করছে। তাহলে অন্যায়টা কারা করছে ?’ কল্যাণের কথায়, প্রাক্তনরা যদি কলেজে ঢুকে থাকে তাহলে নিশ্চয়ই কোন লিংক আছে ।’
এদিকে তৃণমূল সাংসদদের এই প্রকার মন্তব্যের তীব্র প্রতিবাদ করেছেন বিজেপির সর্বভারতীয় আইটি ইনচার্জ অমিত মালব্য । তিনি কল্যাণ ব্যানার্জীর বক্তব্যের ভিডিওটি এক্স-এ শেয়ার করে লিখেছেন, ‘লজ্জা! কসবায় এক কলেজ ছাত্রীকে গণধর্ষণের ঘটনায়, যেখানে একজন টিএমসিপি নেতা এবং তার সহযোগীরা জড়িত, টিএমসি সাংসদ কল্যাণ ব্যানার্জি নির্লজ্জতার সমস্ত সীমা অতিক্রম করেছেন। মহিলাদের নিরাপত্তা সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হলে, তিনি এটিকে কেবল “রাজনৈতিক এজেন্ডা” বলে উড়িয়ে দিয়েছেন। আরজি কর ধর্ষণ মামলায়, যেখানে নাগরিকরা শক্তিশালী রাত জাগো প্রতিবাদের মাধ্যমে অভয়ার জন্য ন্যায়বিচার দাবি করছেন, তিনি আন্দোলনকে উপহাস করেছেন এবং তীব্রভাবে দাবি করেছেন যে যদি কোনও কলেজের ভিতরে এই ধরনের অপরাধ ঘটে, তবে পুলিশ এবং সরকারের কোনও দায় নেই।’
তিনি আরও লিখেছেন,’আরও খারাপ, তিনি অপরাধটিকে তুচ্ছ করে বলেছিলেন যে এটি “সহপাঠীদের দ্বারা” সংঘটিত হয়েছে। তাহলে সহপাঠীদের দ্বারা ধর্ষণ এখন গ্রহণযোগ্য? যদি এই সরকার দাবি করে যে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের অভ্যন্তরে নিরাপত্তা নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে তাদের কোনও ভূমিকা নেই, তাহলে সরকার থাকার অর্থ কী? পশ্চিমবঙ্গ পুলিশের ভূমিকা কি এখন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাসভবন পাহারা দেওয়া এবং তৃণমূল নেতাদের উপর ছাতা ধরে রাখা, যখন বাংলার মেয়েরা ন্যায়বিচারের জন্য কাঁদছে? এটি কেবল অসংবেদনশীলতা নয় – এটি সহযোগিতা। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অধীনে, বাংলা অনাচারে ভেঙে পড়েছে। এবং কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের মতো নেতারা প্রমাণ করেন যে তৃণমূল কংগ্রেস কোনও চিন্তা করে না।’
প্রসঙ্গত,কসবার আইন কলেজে গার্ডরুমে টেনে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে তৃণমূলের যুবনেতা তৃণাঙ্কুর ভট্টাচার্যর ঘনিষ্ঠ টিএমসিপি নেতা মনোজিৎ মিশ্রর বিরুদ্ধে। ইতিমধ্যেই তাকে ও আরও দুই অভিযুক্তকে গ্রেফতার করা হয়েছে। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, বুধবার সন্ধ্যা সাতটা থেকে ১০টা ৫০-এর মধ্যে ওই গনধর্ষণের ঘটনাটি ঘটে। এরপর কসবা থানায় আসেন নির্যাতিতা। কলেজেরই দুই কর্মী ও একজন প্রাক্তন পড়ুয়ার বিরুদ্ধে গণধর্ষণের অভিযোগ দায়ের করেন তিনি। কিন্তু শাসকদলের প্রভাবশালী ছাত্র নেতা হওয়ায় মূল অভিযুক্ত মনোজিৎ মিশ্রকে বাঁচানোর চেষ্টার অভিযোগ উঠছে পুলিশের বিরুদ্ধে ।।