এইদিন ওয়েবডেস্ক,কলকাতা,২৫ জুলাই : আদালতকে কি লোকসভা বা রাজনীতির প্রাঙ্গন ভেবে বসেছেন আইনজীবী তথা তৃণমূল সাংসদ কল্যাণ ব্যানার্জি ? হয়তো তাই ! কারন আজ শুক্রবার কাঁকুড়গাছির বিজেপি কর্মী অভিজিৎ সরকার খুনে শুক্রবার অভিযুক্ত দুই পুলিশ অফিসারের জামিন মামলার শুনানিতে বিচারপতি শুভ্রা ঘোষের সঙ্গে রীতিমতো তর্কাতর্কি শুরু করে দেন কল্যাণ। আর তাতে অসন্তুষ্ট হয়ে কল্যাণ ব্যানার্জিকে তীব্র ভর্ৎসনার মুখে পড়তে হল । বিচারপতি তাকে বলেছেন, ‘অনেকক্ষণ ধরে আদালত সম্পর্কে নানান মন্তব্য করছেন। আপনার লেকচার আদালত শুনবে না। আমি এই মামলা ছেড়ে দিচ্ছি। অন্য কোনও বেঞ্চে যান।’ অর্থাৎ কল্যাণকে তীব্র ভর্ৎসনার পর মামলাই ছেড়ে দিলেন বিচারপতি শুভ্রা ঘোষ।
প্রসঙ্গত,২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনের ফল ঘোষণার দিন ২ মে বিকালে কাঁকুড়গাছিতে বিজেপি কর্মী অভিজিৎ সরকারকে পিটিয়ে খুনের অভিযোগ ওঠে। ওই খুনের ঘটনায় ঘাতকদের দিয়েই প্রমান লোপাটের অভিযোগ ওঠে তৎকালীন নারকেলডাঙা থানার ওসি শুভজিৎ সেন,এসআই রত্না সরকার ও হোমগার্ড দীপঙ্কর দেবনাথের বিরুদ্ধে । ওই ৩ তিন পুলিশ কর্মী বর্তমানে জেলে । আজ তাদের জামিন মামলার শুনানি ছিল কলকাতা হাইকোর্টে । রাজ্যের পক্ষে সওয়াল করেন আইনজীবী তথা তৃণমূল সাংসদ কল্যাণ ব্যানার্জি ।
তিনি দাবি করেন, দুই পুলিশ আধিকারিককে সিবিআই প্রথমে সাক্ষী হিসেবে দেখিয়েছিল, পরে হঠাৎ চূড়ান্ত চার্জশিটে তাঁদের অভিযুক্ত করা হয়েছে। অভিযোগ, আদালতের নির্দেশ ছাড়াই তাঁদের হেপাজতে নেওয়া হয়েছে, যা আইনসংগত নয়। মামালাকারীর পক্ষের আইনজীবী কল্যাণ এদিন তাঁর মক্কেলদের অন্তর্বর্তী জামিন চেয়ে সওয়াল করেন। কিন্তু বিচারপতি শুভ্রা ঘোষ তাদের জামিন দিতে অস্বীকার করেন । কিন্তু তারপরেও কল্যাণ অন্তর্বর্তী জামিনের জন্য বারবার আবেদন করেন এবং বিচারপতির উদ্দেশ্যে বলেন,
‘আমাদের বিচারপতিদের কৃপার দিকে তাকিয়ে থাকতে হয়। এটাই দুর্ভাগ্য।’ আর এতে চরম ক্ষুব্ধ হন বিচারপতি শুভ্রা ঘোষ । তিনি কল্যাণকে তীব্র ভ্যর্তসনা করে মামলা থেকেই সরে দাঁড়ান ।
উল্লেখ্য,বিজেপি কর্মী অভিজিৎ সরকার খুনে নাম জড়িয়েছে বেলেঘাটার তৃণমূল বিধায়ক পরেশ পাল, কলকাতা পুরসভার মেয়র পারিষদ (বস্তি) স্বপন সমাদ্দার এবং ৩০ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলার পাপিয়া ঘোষের । সম্প্রতি সিবিআইয়ের তরফে আদালতে পেশ করা চার্জশিটে তাঁদের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। সিবিআই ওই তিন তৃণমূল নেতা-নেত্রীকে ১৮ জুলাইয়ের মধ্যে হাজিরা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিল ।।কিন্তু তার আগে কলকাতা হাইকোর্টে আগাম জামিনের আবেদন করেন তাঁরা । ১৬ জুলাই বিচারপতি জয় সেনগুপ্তের এজলাসে আগাম জামিনের আবেদনের শুনানি হয় ।।

