এইদিন ওয়েবডেস্ক,লেবানন,২৫ সেপ্টেম্বর : লেবাননের টিভি চ্যানেলে সরাসরি সম্প্রচারের সময় ইসরায়েলের ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় গোটা বাড়িসহ উড়ে গেলেন সাংবাদিক । যদিও ফাদি বোদায়া নামে ওই সাংবাদিক বরাত জোরে প্রাণে বেঁচে যান । লেবাননের সংবাদ সংস্থা মিরায়া ইন্টারন্যাশনাল নেটওয়ার্কের প্রধান সম্পাদক ফাদি বোদায়া পরে এক্স-এ পোস্ট করে জানান যে তিনি ভাল আছেন। ভিডিওটি লাইভ হওয়ায় ঘটনাটি রেকর্ড করা হয় এবং ভিডিওটি ভাইরাল হয় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ।
ফাদি বোদায়া পোস্ট করেছেন,’যারা ফোন করেছেন, বার্তা পাঠিয়েছেন, পরিস্থিতি সম্পর্কে খোঁজখবর নিয়েছেন তাদের সবাইকে ধন্যবাদ। যারা কিছু অনুভব করেছেন তাদেরও ধন্যবাদ। আল্লাহকে ধন্যবাদ, আমি ভালো আছি। আমরা তাঁর রহমতে আছি। আমরা প্রতিরোধের সমর্থনে আছি। আমরা করব। আমাদের দায়িত্ব চালিয়ে যান, আপনাদেরকে আন্তরিকভাবে ধন্যবাদ।’ কমিটি ফর সেফটি অব জার্নালিস্ট (সিপিজে) তাদের প্রতিবেদনে জোর দিয়ে বলেছে, যুদ্ধবিধ্বস্ত ও অস্থিতিশীল এলাকায় রিপোর্ট করার সময় জীবনের বিশাল ঝুঁকি রয়েছে।
২০২৪ সালের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সিপিজে-এর একটি তদন্তে দেখা গেছে যে যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে কমপক্ষে ১১৬ জন সাংবাদিক এবং মিডিয়া কর্মী নিহত হয়েছেন। সিপিজে ১৯৯২ সাল থেকে তথ্য সংগ্রহ করছে এবং তাদের মতে এটি সাংবাদিকদের জন্য সবচেয়ে বিপজ্জনক সময়। গত বছরের অক্টোবর থেকে ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে যুদ্ধ শুরু হয়। এরপর থেকে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী ও ইরান সমর্থিত সন্ত্রাসবাদী সংগঠন হিজবুল্লাহর মধ্যে আন্তঃসীমান্ত যুদ্ধ চলছে। গত কয়েক বছরের মধ্যে বর্তমানে সবচেয়ে খারাপ অবস্থায় রয়েছে মধ্যপ্রাচ্যের পরিস্থিতি ।
সাম্প্রতিক দিনগুলোতে হিজবুল্লাহর সন্ত্রাসীদের ওপর কিছু সন্দেহজনক হামলা হয়েছে। পেজার এবং ওয়াকি-টকির মতো যন্ত্র বিস্ফোরিত হয়। হামলাগুলো ইসরায়েলের গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদের সুপরিকল্পিত বলে জানা গেছে । হিজবুল্লাহ হামলার পেছনে ইসরায়েলকে দায়ী করেছে। যদিও ইসরায়েল এটা অস্বীকার বা মেনে নেয়নি।
এরপর সোমবার, ইসরাইল দক্ষিণ লেবাননে মারাত্মক ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায়। ইসরাইল-হামাস যুদ্ধ শুরুর পর এটি সবচেয়ে বড় হামলা। লেবাননের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে যে এই হামলায় অন্তত ৩৫৬ জন নিহত এবং ১,২৪৬ জনেরও বেশি মানুষ গুরুতর আহত হয়েছেন। যদিও হতাহতদের সংখ্যা এর চেয়ে অনেক বেশি বলে দাবি করা হচ্ছে । বলা হয়েছে, হামলায় ৫৫৮ জন নিহত হয়েছে। এর মধ্যে ৫০ জন শিশু। গুরুতর আহত হয়েছে হাজারের বেশি মানুষ।
এদিকে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী তাদের বিমান হামলা বাড়াচ্ছে কারণ তারা বলছে যে হিজবুল্লাহর দক্ষিণ ও পূর্ব লেবাননে অস্ত্রের ঘাঁটি রয়েছে। ইসরায়েলি সামরিক কর্মকর্তার মতে, এই অভিযানের উদ্দেশ্য তাদের সামরিক সক্ষমতা হ্রাস করা । সোমবার ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু লেবাননের সাধারণ মানুষের উদ্দেশ্যে একটা ভিডিও বার্তায় বলেছেন, লেবাননের সাধারণ মানুষ আমাদের লক্ষ্য নয় । আমাদের লক্ষ্য সন্ত্রাসী সংগঠন হিজবুল্লাহ । ওই সন্ত্রাসবাদী সংগঠন লেবাননেরও ক্ষতি করে দিয়েছে । ওদের নিকেশ না করা পর্যন্ত আমরা থামবো না । আপনারা এখন নিরাপদ জায়গায় আশ্রয় নিন। হিজবুল্লাহ খতম হওয়ার পর ফের নিজ নিজ বাড়িতে ফিরে আসবেন ।’।