এইদিন ওয়েবডেস্ক,কলকাতা,১৪ অক্টোবর : গত ৯ অক্টোবর লক্ষ্মীপূজোর রাতে মোমিনপুর এলাকায় দুই সম্প্রদায়ের মধ্যে সংঘর্ষ বেধে যায় । বোমাবাজি, ইঁটবৃষ্টির পাশাপাশি বাড়িঘর, বাইক ভাঙচুর এবং অগ্নিসংযোগ কিছুই বাদ যায়নি । এমনকি এক সম্প্রদায়ের লোকজন ইকবালপুর থানা ঘেরাও করেছিল । দুই আইপিএসসহ ৯ পুলিশকর্মী পর্যন্ত আহত হয়েছিলেন । আর সেই সমস্ত হিংসার মুহুর্তের ভিডিও পোস্ট করার অপরাধে সোশ্যাল মিডিয়া সাংবাদিক মানব গুহকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ । পুলিশের দাবি,এই ধরনের ভিডিও সমাজে আরও উত্তেজনা ছড়াতে পারত । কিন্তু পুলিশের এই ভূমিকায় তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী ।
শুভেন্দু অধিকারী ফেসবুকে সাংবাদিকের ছবি পোস্ট করে লিখেছেন,’১৩ বছর আগে ২০০৯-এ ঝাড়গ্রামের সাঁকরাইল থানায় হামলা চালায় মাওবাদীরা। কার্যত থানার দখল নেওয়ার পরে দু’জন পুলিশকর্মীকে হত্যা করে তারা, সরকারি অস্ত্রশস্ত্র লুট করে ও অপহরণ করে ওসি অতীন্দ্রনাথ দত্তকে। দু’দিন পর লালগড়ের ভুলাগাড়ার জঙ্গলে তাঁকে ‘যুদ্ধবন্দি’ ঘোষণা করে (ওসির বুকে কাগজ মাড়িয়ে) মুক্তি দেওয়া হয়।
আপনারা ভাবছেন যে হঠাৎ করে এই পুরনো কথা আলোচনা করছি কেন? কারণ তখন এই বিষয়ে খবর ছাপার জন্যে অথবা ‘যুদ্ধবন্দি’ ওসির ছবি ক্যামেরাবন্দি করার জন্যে কিন্তু সংবাদমাধ্যমের কোনো প্রতিনিধিকে গ্রেফতার হতে হয় নি অথবা কোনো সাংবাদিকের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়নি ।
সম্প্রতি কোজাগরী পূর্ণিমার রাতে লক্ষ্মী পুজোর সময় মোমিনপুরে তাণ্ডব চালানোর পরে এক বিশেষ সম্প্রদায়ের দুষ্কৃতীরা (একাংশ, যাদের কুকীর্তির জন্য পুরো সম্প্রদায় কে কালিমালিপ্ত হতে হয় প্রায়শই) প্রত্যন্ত জঙ্গলমহলে নয়, একেবারে খাস কলকাতা শহরের মধ্যস্থলে অবস্থিত একবালপুর থানার দখল নিয়ে নেয়। মেরুদণ্ডহীন মমতা-পুলিশ নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে থানা থেকে পালায় ।
অথচ এই খবরটি জনসমক্ষে তুলে ধরার জন্য ও এই সংক্রান্ত ভিডিও গুলি শেয়ার করার “অপরাধে” গ্রেফতার করা হয় সোশ্যাল মিডিয়া সাংবাদিক মানব গুহ কে।
আমি রাজ্যের বিরোধী দলনেতা, এই বিষয়ে আমার অবস্থান স্পষ্ট করে জানাচ্ছি, যে সকল সোশ্যাল মিডিয়া সাংবাদিক যেমন মানব গুহ অথবা ওনার মতোই অন্যেরা যেমন পৌলমী নাগ, যাঁরা সরকারের রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে, চোখে চোখ রেখে সততার সঙ্গে সাংবাদিকতা করছেন এবং এমন সব খবর জনগণের সামনে উপস্থাপন করছেন যা মূল ধারার সংবাদমাধ্যম করতে সাহস পায় না, তাদের প্রতি আমার সমর্থন সর্বদা বজায় থাকবে। ওনাদের লড়াই কে আমার কুর্নিশ জানাই ও ওনাদের প্রতি আমার সক্রিয় সমর্থন সর্বদা অটুট থাকবে।’
উল্লেখ্য,মোমিনপুরের হিংসায় এযাবৎ ৪ টি মামলা রজু করেছে পুলিশ । গ্রেফতার করা হয়েছে ৪০ জনকে । ধৃতরা বর্তমানে পুলিশ হেফাজতে । উত্তেজনা প্রশমনে এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছিল । এমনকি এলাকায় সংবাদ মাধ্যমের যাওয়ার উপরেও জারি করা হয়েছিল বিধিনিষেধ ।।