বার্ধক্যের ভারে ক্লান্ত ঋষিবর
জ্ঞানে প্রজ্ঞায় শ্রেষ্ঠ তিনি
যাজ্ঞবল্ক নাম,
বানপ্রস্থে যাবেন ঋষি
ছাড়ি প্রিয়জন
ছাড়ি সংসার ধাম।
ছায়া সুনিবিড় অতি মনোরম
আদর্শ সে আশ্রম
সুখ শান্তির নীড়,
মৈত্রেয়ী আর কাত্যায়নী
দুই স্ত্রী ঋষির
জীবন নদীর দুই তীর।
বৃক্ষতলে বসি ঋষিবর
ডাক দিলেন স্ত্রী
বিদুষী মৈত্রেয়ীরে,
কহিলেন তিনি চিন্তিত মুখে
কম্পিত কণ্ঠ নিয়ে
অতিশয় ধীরে ধীরে।
যাবো চলে আমি বানপ্রস্থে
ছাড়ি সংসার সম্পত্তি
চির দিনের তরে,
ভাগ করে লও যা আছে মোর
দুই স্ত্রী মিলে
সমান সমান করে।
শুনি নির্বাক হলেন ক্ষণকাল
বিদুষী মৈত্রেয়ী
অত:পর কাহিলেন ধীরে,
চিন্তা না করুন নাথ
না হবে কোনো সংশয়
কহিলেন নত শিরে।
কহিলেন ঋষিবর স্নেহে
কোমল নেত্রপাত করি
মৈত্রেয়ী কহো মোরে,
কিবা চাও কত চাও তুমি
মোর অবর্তমানে
দিবো উজাড় ক’রে।
শুনিয়া মৈত্রেয়ীর ক্ষণিক
বাক্য নাহি সরে বসি
স্বামীর চরণতলে,
সবিনয়ে করিলেন নিবেদন
নিজের চাহিদা টুকু
মৃদু স্বরে ব’লে।
দেবার যদি আছে নাথ
দিন তবে মোরে
জ্ঞান প্রজ্ঞা ধন,
সনাতন যাহা চিরন্তন যাহা
সকলি আপনার মোরে
করুন অর্পণ।
শুনি বিস্ময়ে ঋষি কহেন
ধন রত্ন জমি
লহ ভাগ করি,
কাত্যায়নীর সাথে রহ
এ জীবনে মিলি
হাতে হাত ধরি।
কহিলেন মৈত্রেয়ী তুলি
তার প্রজ্ঞা ভরা আঁখি
রাখি ঋষির আঁখি পরে,
যা দিয়ে আমি অমৃত না হবো
কি লাভ সেসবে
মানব জীবনে ধরে।
পার্থিব লোভ লালসা মোহো
এক নারীর কাছে করলো
পরাজয় স্বীকার,
নারী দিবসে সেই শ্রেষ্ঠা নারী
জ্ঞান প্রজ্ঞায় ত্যাগে
স্মরণীয় সবাকার।
এই আদর্শে সম্প্রীক্ত হবে
প্রতিটি নারী যেদিন
এই ভোগবাদী ভবে,
বৎসরের প্রতিটি দিন
সারা ধরণী জুড়েই
নারী দিবস হবে।।