এইদিন ওয়েবডেস্ক,ইসলামাবাদ,১১ জুলাই : চার সন্তানকে নিয়ে উত্তরপ্রদেশের গ্রেটার নয়ডায় প্রেমিকের কাছে পালিয়ে আসা ২৮ বছরের পাকিস্তানি মহিলা সিমা গুলাম হায়দারকে তোলপাড় ভারত ও পাকিস্তান । হিন্দু ধর্ম গ্রহণ করে নয়ডার বাসিন্দা প্রেমিক শচীনকে বিয়েও করেছেন তিনি । এখন পুরোপুরি হিন্দু ঘরনী সীমা । সীমার শ্বশুরবাড়িতে তুলসী মঞ্চে প্রনাম করা বা শ্বশুরবাড়ির ঠাকুরঘরে পূজো করার ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হচ্ছে । এদিকে সীমা হায়দারের স্বামী গোলাম হায়দার এক ভিডিও বার্তায় হাত জোড় করে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর কাছে অনুরোধ করেছেন যাতে তার স্ত্রী সীমা এবং চার সন্তানকে পাকিস্তানে ফেরত পাঠানোর ব্যবস্থা করেন । তবে সীমা হায়দার সাফ জানিয়েছেন যে তিনি আর পাকিস্তানে ফিরবেন না । কারন পাকিস্থানে ফিরলেই তিনি খুন হয়ে যেতে পারেন বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন । শচীনও জানিয়েছেন,তিনি কোনো ভাবেই সীমাকে ছাড়বেন না ।
কিন্তু সীমা গুলাম হায়দারের এই প্রকার সোজাসাপটা জবাবে চরম ক্ষুব্ধ হয়েছে পাকিস্থানি জিহাদিরা । এক সশস্ত্র জিহাদি সোশ্যাল মিডিয়ার ভিডিও পোস্ট করে হুঁশিয়ারি দিয়েছে যে সীমাকে অপহরণ করা হয়েছে, যদি সে ফিরে না আসে তাহলে সিন্ধু প্রদেশের হিন্দু মেয়ে, নারীদেরকে তারা অপহরণ করে ধর্ষণ করবে ।’ এছাড়া পাকিস্তানের রাউন্টি কুচির কুখ্যাত সন্ত্রাসবাদী রনো শার সাঙ্গপাঙ্গদের সঙ্গে নিয়ে একটা ভিডিও পোস্ট করে বলেছে, ‘সীমা জাকরানি ও তার সন্তানরা না ফিরলে আমি দুদিনের মধ্যে রাহরকি দরবার মন্দির আক্রমণ করব এবং অন্যান্য দস্যুদের বলব যে তারা যেন হিন্দুদের রেহরকি দরবারে যেতে না দেয় ।’
প্রসঙ্গত,পাকিস্তানের সিন্ধু প্রদেশের বাসিন্দা সীমা গুলাম হায়দার বিবাহিতা । তাঁর ৪ শিশুসন্তান রয়েছে । সীমার স্বামী গোলাম হায়দার কর্মসূত্রে দুবাইয়ে থাকেন । পাবজি গেম খেলার সূত্রে উত্তরপ্রদেশের গ্রেটার নয়ডার বাসিন্দা শচীনের সঙ্গে তার পরিচয় থেকে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে । ২০২০ সাল থেকে তাদের প্রেমপর্ব চলছে । ইতিমধ্যে তারা নেপালি মিলিতও হন । সীমার কথায়,’আমি সন্তানদের পাকিস্তানে রেখে শচীনের কাছে চলে আসতে চেয়েছিলাম । কিন্তু শচীন রাজি হয়নি ।’
সীমা জানিয়েছেন,সেই কারনে তিনি চার সন্তানকে নিয়ে ভারতে আসার সিদ্ধান্ত নেন । কিন্তু অনেক চেষ্টা করেও তিনি ভিসা পাচ্ছিলেন না । তাই বিনা ভিসাতেই তাঁরা ৫ জন পাকিস্তানের সিন্ধু প্রদেশ থেকে প্রথমে দুবাই যান । সেখান থেকে নেপালের কাঠমান্ডু আসেন । নেপালে ৭ হোটেলে থাকার পর সেখান থেকে গ্রেটার নয়ডায় শচীনের বাড়িতে এসে ওঠেন । ভারতে আসার পর তিনি মন্দিরে গিয়ে ইসলাম ধর্ম ত্যাগ করে হিন্দু ধর্ম গ্রহণ করেন । বিয়ে করেন শচীনকে । সীমা মিডিয়ার কাছে জানিয়েছেন, তাকে জোর করে কোর্ট ম্যারেজ করতে বাধ্য করা হয়েছিল । তার স্বামী তাকে অত্যাচার করত । তাই তাদের মধ্যে তালাক হয়ে গেছে ।
এদিকে অবৈধভাবে ভারতে ঢোকার জন্য সীমাকে পুলিশ গ্রেফতার করেছিল । তাঁকে আশ্রয় দেওয়ার জন্য গ্রেফতার করা হয় শচীনকেও । যদিও তারা দু’জনেই বর্তমানে জামিনে মুক্ত রয়েছেন ।।