এইদিন ওয়েবডেস্ক,কলকাতা,২৮ মার্চ : মালদার মোথাবাড়িতে “জিহাদিরা” নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেছে বলে অভিযোগ তুললেন রাজ্য বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী । তিনি মোথাবাড়িতে ‘জরুরি ভিত্তিতে’ সিএপিএফ মোতায়েনের নির্দেশ দেওয়ার জন্য রাজ্যপালের কাছে আবেদন জানান । শুভেন্দু অধিকারী এক্স-এ একটা ভিডিও পোস্ট করেছেন । যেখানে এক ব্যক্তিকে রক্তাক্ত অবস্থায় দেখা গেছে । ভিডিওতে কাউকে বলতে শোনা গেছে, ‘ঘোষেদের গাড়িতে হামলা হয়েছে । ব্যাপক ইঁট ছোড়া হয়েছে ।’
শুভেন্দু অধিকারী জানিয়েছেন,’আমি পশ্চিমবঙ্গের মাননীয় রাজ্যপালকে একটি চিঠি লিখে অনুরোধ করেছি যে তিনি যেন পশ্চিমবঙ্গ সরকারকে জরুরি ভিত্তিতে মালদা জেলার মোথাবাড়িতে সিএপিএফ মোতায়েন করার নির্দেশ দেন। জিহাদিরা নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেছে এবং তারা অবিরামভাবে লুটপাট, মারধর এবং ভাঙচুর চালাচ্ছে। তাদের লক্ষ্য হিন্দু, তারা যেই হোক না কেন। পনির বহনকারী একটি পণ্যবাহী গাড়ির চালকের অবস্থা দেখুন। তার কোনও দোষ ছাড়াই তাকে নির্মমভাবে মারধর করা হয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের একমাত্র সমাধান হল জরুরি কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করা, কারণ পুলিশ ভাঙচুর এবং গুন্ডামি নিয়ন্ত্রণ করতে ব্যর্থ হয়েছে।’
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হওয়া কিছু ভিডিওতে পুলিশের সামনেই গাড়িতে হামলা চালাতে দেখা যায় । সেই ভিডিও পোস্ট করে শুভেন্দু অধিকারী লিখেছেন,তোষণবাজ মুখ্যমন্ত্রী রাজ্যের হিন্দুদের অস্তিত্ব বিপন্ন করে তুলছেন । মালদহ জেলার মোথাবাড়ি অঞ্চলে বেছে বেছে হিন্দুদের দোকানপাট ভাঙচুর ও লুঠ করা হয়েছে। মূল রাস্তা দখল করে জেহাদিরা যথেচ্ছাচারে কি ভাবে গাড়ি ভাঙচুর করছে দেখুন। জেহাদিদের সামনে পড়ে ‘নিধিরাম সর্দারের’ ভূমিকায় অবতীর্ণ হওয়া মমতা পুলিশকে দেখুন, হাত জোড় করে যেনো করুণা প্রার্থনা করছে ! সংখ্যালঘু তোষণ করতে করতে গ্রেটার বাংলাদেশের ব্লু প্রিন্ট ক্রমশ বাস্তবায়ন করার পথে এগিয়ে চলেছে তোলামূল সরকার। তবে আমিও প্রতিজ্ঞা করলাম, এর শেষ দেখে ছাড়বো। আইনি পথে যেমন হাওড়া, শ্রীরামপুর, ডালখোলা, খিদিরপুর, রিষড়া, মোমিনপুরের জেহাদিদের বাগে এনেছি ঠিক একই ভাবে এদের কেও শিক্ষা দেবো।’
বিজেপির যুবনেতা ও হাইকোর্টের আইনজীবী তরুনজ্যোতি তিওয়ারি মালদা জেলা পরিষদের সদস্য সায়েম চৌধুরীর বক্তব্যের ভিডিও শেয়ার করেছেন এক্স-এ । যেখানে তাকে বলতে শোনা গেছে, মোথাবাড়িতে একটা ভুল কথা ছড়ানোর জন্য একটা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে । আস্তে আস্তে জিনিসটা জনসাধারণ বুঝতে পারছে। টোটাল ম্যাটারটাই সাজানো, রটানো । এরকম কোন ঘটনাই নাই । মসজিদে এরকম কোন ঘটনাই ঘটেনি । আমাদের নামাজ অনেক আগেই শেষ হয়ে যায় । সাড়ে নটার পর ওরা রাম পুজোর কিছু জিনিস বিসর্জন করতে আসছিল । কেউ আবিরও ছেটায়নি, কেউ ফটকাও ফাটায়নি মসজিদে । একটা ভুল তথ্য দিয়ে এলাকায় পরিস্থিতি খারাপ করার চেষ্টা করা হচ্ছে । আমি কালিয়াচক দুই ব্লকের জনসাধারণের কাছে অনুরোধ করবো এরকম কোন সাম্প্রদায়িক ঘটনা ঘটেনি । আমরা এই এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে একসাথে বসবাস করছি এবং করব এবং শান্তি বহাল রাখার চেষ্টা করব ।’ তার কথাই মোথাবাড়ির হিংসার ঘটনা কেউ ফটকা ফাটানোয় বাধা দেওয়ার জন্য ঘটেছে ।
তরুনজ্যোতি লিখেছেন,’বক্তব্যটি শুনবেন এই বক্তব্য হলো SAYEM CHOWDHURY (BABU) র, এই ভদ্রলোক মালদা জেলা পরিষদের একজন সদস্য।
তৃণমূল আশ্রিত কিছু দের ব্যাটারি বলার চেষ্টা করছে যে মোথাবাড়িতে গতকাল কিছু ঘটনা ঘটেছে তার ফলে আজকে তান্ডব চলেছে। স্থানীয় লোকের বক্তব্য শুনুন। আসলে ওখানে আজকে যেটা হল সেটা একদম প্ল্যান মাফিক হলো এবং কেন হল সেটা নতুন করে বলার প্রয়োজন আছে বলে মনে হয় না।। হুমায়ুন কবির ফিরহাদ হাকিমরা যেটা বলেছিল সেটা আজকে করে দেখালো তৃণমূলের দুধ দেওয়া গরুরা । হিন্দু জাগবে কবে ?’
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল কিছু ভিডিওতে প্রচুর ঘরবাড়ি এবং দোকান ভাঙচুর করতে দেখা গেছে । একটা ভিডিওতে বলা হয়েছে যে বেছে বেছে হিন্দুদের বাড়িঘর ভেঙে ফেলা হয়েছে । যেখানে পাশের মুসলিম বাড়ি অক্ষত আছে । তবে হিংসার ঘটনা এখনো পর্যন্ত গ্রেফতারের ব্যাপারে কিছু জানা যায়নি। যে কারণে রাজ্যের শাসকদল এবং পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলছে বিজেপি।।