এইদিন ওয়েবডেস্ক,চট্টগ্রাম,২০ সেপ্টেম্বর : পার্বত্য চট্টগ্রামের খাগড়াছড়ি দিঘীনালায় চাকমা হিন্দু ও বৌদ্ধ জনগোষ্ঠীর ওপর হামলার অভিযোগ উঠেছে সেদেশের মুসলমান সম্প্রদায়ের লোকজনদের বিরুদ্ধে । আদিবাসীদের মারধর করে বাড়িঘর ও দোকানে ব্যাপক লুটপাট করা হয়েছে । লেপ-তোষক-বালিস পর্যন্ত লুটপাট চালানো হয় । সেই ভিডিও ভাইরাল হয়েছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে । আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয় বেশ কিছু ঘর বাড়ি ও দোকানে । উলটে খাগড়াছড়িতে উপজাতীয় হিন্দু ও বৌদ্ধদের ওপর নির্বিচারে গুলি চালানোর অভিযোগ উঠেছে বাংলাদেশের সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে । গুলি চালায় দাঙ্গাকারী মুসলিমরাও । আহত হয়েছে বেশ কয়েকজন । একজন আহতের ছবিসহ বর্ননা দিতে গিয়ে অর্নব দেওয়ান নামে এক আদিবাসী নিজের ফেসবুক পেজে লিখেছেন,’কি দোষ ছিল এই ডাব ব্যবসায়ী( নাম অজানা) তিনিই থাইল্যান্ড থেকে MA পাশ করে চাকরি না পেয়ে ডাব ব্যবসায় নিয়োজিত। কি অন্যায় করেছিল সেই ডাব ব্যবসায়ীটি ? সে এখনো খাগড়াছড়ি হাসপাতালে মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছে ন। ওনাকে একটু সহযোগীতা করুন ।’
ঘটনার সূত্রপাতের বিষয়ে তিনি জানিয়েছেন,গতকাল খাগড়াছড়ি সদরে বাঙ্গালি এবং পাহাড়িদের গণপিটুনির শিকার হয়ে এক সেটেলার চোর আহত হয় এবং পরবর্তীতে মারা যায়। তারই জের ধরে গতকাল বিকালে সাম্প্রদায়িক হামলার চেষ্টা করা হয়। কিন্তু এলাকাবাসীদের সচেতনায় সেই চেষ্টা প্রতিহত করা হয়। কিন্তু আজ একই ঘটনার প্রেক্ষাপটে খাগড়াছড়ির দীঘিনালা উপজেলায় আবার সাম্প্রদায়িক হামলা চালানও হয় এবং ফলাফল আদিবাসীদের দোকানপাট এবং ঘরে আগুন ।’
অনন্য আজাদ নামে একজন ফেসবুক ব্যবহারকারী লিখেছেন,’সেনাবাহিনী রীতিমত উন্মাদ হয়ে উঠেছে খাগড়াছড়িতে, অনবরত গুলি ছুঁড়েই যাচ্ছে। সেনাবাহিনীর কাজ গুলি ছোড়া নয়, বরং সংঘাত থামানো। সেনাবাহিনীই যদি সন্ত্রাসের ভূমিকা পালন করে, তাহলে আদিবাসীদের টিকে থাকার জন্য লড়াই করা যৌক্তিক।’ পাশাপাশি তিনি সতর্ক করে লেখেন, ‘যেদিন পাহাড়ের আগুন সমতলে পৌঁছাবে, সেদিন বাঙালি হারেহারে টের পাবে ছাদ ছাড়া মানুষ কত অসহায়।’
জিদিত চাকমা আক্ষেপ করে নিজের পেজে লিখেছেন, ‘দীঘিনালা জ্বলছে! আমার মায়ের জন্মভূমি। নব্বইয়ের কাছাকাছি আমার বৃদ্ধা নানী আবার গৃহ থেকে বিচ্যুত হলেন। সেই আশির দশক থেকে এই আজ পর্যন্ত প্রায় বিশ বারের মতন নিজের ঘর থেকে পালিয়ে যেতে হয়েছে শুধু জীবনকে বাঁচানোর জন্য। হ্যাঁ, সংখ্যাটা বিশ বারের কাছাকাছি। কখনো পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে ঘর, কখনো দখল করে নেওয়া হয়েছে জমি, যার ফলে জীবনের একটা গুরুত্বপূর্ণ সময় নানীকে কাটিয়ে আসতে হয়েছে ভারতের দুর্বিষহ শরণার্থী জীবন। এখন আবারো নব্বই বছরের কাছাকাছি জীবনে আরেকবার পালিয়ে যেতে হচ্ছে আমার অসুস্থ নানীকে।’এদিকে বৃহস্পতিবার সাম্প্রদায়িক হামলার পর খাগড়াছড়িতে উপজাতীয় চাকমা জনগোষ্ঠীরা জুম্মল্যান্ড ও চাকমাল্যান্ড আলাদা রাজ্য ঘোষণা করেছে বলে দাবি করা হচ্ছে ।।