প্রথম ঘুষিটা মারলাম তলপেটে
তাঁকে, যার কাছে টিউশন নিতাম না বলে
ক্লাস টেস্টে কম নম্বর পেতাম
তারপর মারলাম চড়
বড়বাবুকে , যার সঙ্গে বখরার লাইনে আসিনি বলে
নেতাসুলভ কায়দায় বদলি করে দেয় গোসাবা
ততক্ষণে মেয়েটা ঘাবড়ে গেছে
গালে ফুটে উঠেছে পাঁচ আঙুলের দাগ
হাড় জিরজিরে বুক থেকে
এক হ্যাঁচাকায় ব্লাউজ নামিয়ে দিতেই নিচু হয়েছে ও
তলপেটে হাঁটু দিয়ে মারবার আগে
ছুঁড়ে দিয়েছি আরেকটা পাঁচশ টাকার নোট
কুড়িয়ে নিয়েছে শান্ত মুখে
গুঁজে রেখেছে বালিশের তলায়
এইবার মারলাম সেই ডাক্তারকে
যার ভুল ইনজেকশনে আমার মা
আমাকে ফেলে চলে গেছে তিন বছর বয়েসে
একা
তারপর থেকে আজও
কোনদিন যেতে পারিনা অন্ধকারে
একা
কোনদিন করতে পারিনি
নকশাল পার্টি
দিতে পারিনি দান শিবিরে গিয়ে
রক্ত
রাত পাহারায় যেতে পারিনি
ছোটবেলা থেকে মা নেই বলে আমি সজ্ঞানে
গুঁজে দিতে পারিনি যে মুখ
জোড়া দুধে
এখন এই মেয়েটা
যার প্রত্যেকটা আঘাত আমার নগদ পয়সায় কেনা
তার বুকে সিগারেট ডলে দেব বলে আমি বার করেছি
লাইটার আর জ্বালিয়ে নিচ্ছি ঠোঁটের কোণে
আড়ে আড়ে দেখছি মেয়েটার ফ্যাকাসে হয়ে আসা মুখ
আর হাতের উলটো পিঠ দিয়ে
কানের গোড়ায় বসাব বসাব করছি সেই বন্ধুর
যে আমার প্রথম প্রেমিকাকে জোর করে চুম্বন করছে
চিলেকোঠায়
বাধা দিচ্ছে ও , চোখ দিয়ে গড়িয়ে নামছে জল , ওদের
বাকি পড়া তিন মাসের ভাড়া যতটা পারি শোধ দেব বলে
পড়িয়েই যাচ্ছি পড়িয়েই যাচ্ছি
ব্যাচের পর ব্যাচ
দরখাস্তের পর দরখাস্ত
ওরাল আর ভাইবা
দিয়েই যাচ্ছি মিছিলে মিছিলে
স্লোগানে স্লোগানে
( অ আ ই ঈ )
আমার মূল শুদ্ধ উপড়ে আসছে
বমি
খালি পেটে নির্জলা লাল জল নিতে নেই কমরেড—
ভুলে গিয়েছি আমি সেই সব সতর্কবানী
লেখাপড়া করে যেই—
আমি তুলে আনছি মজে হেজে যাওয়া পচা কুয়োর ভেতর থেকে
ভুলে যাওয়া গালাগাল
বাথরুম স্লোগান
বলে যাচ্ছি আমি সমানে আর মেয়েটাকে জড়িয়ে ধরে
এইবার হ্যাঁ
এইবার
এদের তো ধর্ষণ করা যেতেই পারে
বলে
পা দুটো ধরেছি ফাঁক করে
শানিয়ে নিয়েছি আমার হাইড্রলিক
তখুনি কে ?
কে ডাকল আমাকে?
ঐ কালো কুঞ্চিত মায়া ঘেরা সুড়ঙ্গের ভেতর থেকে কে আমাকে ডাকল?
আমি কান পাতলাম বিবরের মুখে
আমি কান পাতলাম পেটের ওপরে
আমি কান পাতলাম ওর সারা শরীরে
#
আমাকে ডাকছে সেই সব স্বর
যারা আমাকে একটু আড়াল করে খাতা দেখিয়েছিল বলে
আজ আমি দুটো করে কম্মে খাই
যারা আমাকে একটু আড়াল করে টিপ বোতাম খুলে ঝলক দেখিয়েছিল বলে
আজ এই অবধি আমি লিখতে পারলাম
যারা আমাকে একটু সরে গিয়ে জায়গা দিয়েছিল বলে
আজ আমি এই বেঞ্চির চতুর্থ যাত্রী
যার দ্বিতীয় নিতম্ব দোদুল্যমান তবু পড়ে যাইনি আমি যাঁদের জন্যে
আমি সেই সব সম্পাদকের ডাক শুনতে পেলাম
যারা দু হাত পকেটে ঢুকিয়ে
হাড় কাঁপান শীতের রাতে
রাত ১১টা পর্যন্ত প্ল্যাটফর্মে ওয়েট করত
আমার এই সব অখাদ্য লেখা নেবে বলে দাঁড়িয়ে থাকত যারা
আজও দেশের বাড়ি গেলে আমার মায়ের কথা বলবার সময়
আমার গায়ে মাথায় হাত বুলতে বুলতে হাউ হাউ করে কেঁদে ওঠে যারা
তারা সব কলরব করছে
ডাকছে আমায়
জ্ঞান হারিয়ে হুড়মুড় করে মেঝেতে পড়ে যাওয়ার আগে
আমি পরিষ্কার শুনতে পেলাম
এত মার খাওয়ার পরেও
এত মার খাওয়ার পরেও
মেয়েটা বলছে
এইবার একটু জিরোন বাবু
দুটো পান্তা ভাত আছে
নেবু নেই, শুধু নুন দিয়ে
খেয়ে ল্যান
খালি পেটে মাল টেনে
লেশাটা বড্ড চড়ে গেচে আম্নার।।