এইদিন ওয়েবডেস্ক,কোচবিহার,০৬ আগস্ট : প্রায় এক বছর আগে কলেজে নিয়ে যাওয়ার নাম করে গাড়িতে তুলে এক কলেজ ছাত্রীকে গণধর্ষণের ঘটনায় অভিযুক্ত জামির হোসেন, ফিরোজ আলম ও রাসেল মিঁয়াকে ২৫ বছরের কারাদণ্ড দিল কোচবিহারের জেলা আদালত । আজ শুক্রবার অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা বিচারক নায়ার আজম খান কারাদণ্ডের পাশাপাশি প্রত্যেক অভিযুক্তকে ১ লক্ষ টাকা করে জরিমানা করেছেন
ঘটনাটি ঘটে ২০২১ সালের ২১ শে ডিসেম্বর । বাড়ি থেকে কলেজ যাওয়ার সময় জামিল হোসেনের খপ্পরে পড়ে যায় ওই তরুণী । ঘটনার বিবরণে এদিন মামলার সরকারি আইনজীবী চঞ্চল কুমার চক্রবর্তী জানিয়েছেন, ঘটনার দিন নির্যাতিতা দুপুর বারোটার সময় কলেজে যাচ্ছিল । সেই সময় রাস্তাতে একই কলেজের সিনিয়ার জামির হোসেনের সঙ্গে তার দেখা হয় । সে একটা চারচাকা গাড়িতে ছিল । গাড়িটা চালাচ্ছিল ফিরোজ আলম । জামির ওই তরুণীকে গাড়িতে ওঠার জন্য বলে । তরুণী সরল বিশ্বাসে তার গাড়িতে উঠে । কিন্তু গাড়িটা কলেজে না গিয়ে শীতলকুচি থেকে দুই কিলোমিটার দূরে বামুনডাঙ্গা বলে একটা জায়গায় নিয়ে যায় । ওই গ্রামে জামির হোসেনের পিসির বাড়ি । ঘটনার দিন বাড়ি ফাঁকা ছিল । তারা মেয়েটিকে নিয়ে গাড়িটা সেই গ্রামের দিকে নিয়ে যায় । মেয়েটি সন্দেহ হলে প্রতিবাদ করে । তখন তার মুখে গাড়িতে থাকা ছোট বালিশ চাপা দিয়ে ধরে জামির । ওই অবস্থায় গাড়িটা তারা জামিরের পিসির বাড়িতে নিয়ে যায় ।
তিনি জানান,এখানে আগে থেকেই উপস্থিত ছিল রাসেল মিঁয়া। তিনজন মিলে তাকে জোর করে গাড়ি থেকে নামায় । তারপর বাড়িতে নিয়ে গিয়ে প্রথমে জামির হোসেন তাকে ধর্ষণ করে । সেই অশ্লীল ভিডিও করে রাখে ফিরোজ আলম ও রাসেল মিঁয়া । পরে তারা সেই ভিডিও দেখিয়ে তরুণীকে হুমকি দেয় তাদেরও যদি ধর্ষণ করতে না দেওয়া হয় তাহলে তারা ভিডিওটা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল করে দেবে । এভাবে ওই দুজন ব্ল্যাকমেলিং করে তরুণীর ওপর উপর্যুপরি পাশবিক নির্যাতন চালায় । তার শরীরের বিভিন্ন অংশ ক্ষতবিক্ষত করে । ফলে তরুণী শারীরিক ও মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে যায় । আজ বিচারক তিন ধর্ষকের ২৫ বছর করে সশ্রম কারাদণ্ড এবং ১ লক্ষ টাকা করে জরিমানা করেছেন । তিনি আদালতের এই রায় সন্তোষ প্রকাশ করেন ।
জানা গেছে, তিন ধর্ষক তরুণীকে হুমকি দেয় যে পুলিশ অভিযোগ দায়ের করলে তারা অশ্লীল ভিডিওটা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল করে দেবে । কিন্তু তরুণী তাদের সেই হুমকিতে ভয় না পেয়ে শীতলকুচি থানায় এ নিয়ে একটি এফআইআর দায়ের করেন । তার ভিত্তিতে তিনি অভিযুক্তকে গ্রেফতার করে পুলিশ । পুলিশের তদন্তে উঠে আসা বিভিন্ন তথ্য প্রমান এবং নির্যাতিত তরুনীর ডাক্তারি পরীক্ষার রিপোর্টে অভিযোগের সত্যতার প্রমাণ পাওয়া গেছে । যার ভিত্তিতেই ওই তিন ধর্ষককে দোষী সাব্যস্ত করে আদালত ।।