এইদিন ওয়েবডেস্ক,ওয়াশিংটন,২১ মার্চ : আমেরিকায় পড়াশোনা করতে যাওয়া ভারতীয় ছাত্র বদর খান সুরির ভিসা বাতিল করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে ইসলামিক সন্ত্রাসী সংগঠন হামাসের সাথে যুক্ত থাকার অভিযোগ রয়েছে। তাকে গ্রেপ্তারও করা হয়েছে। এখন ট্রাম্প সরকার তার বিরুদ্ধে আরও পদক্ষেপ নেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে। এদিকে, তার আইনজীবীরা তাকে রক্ষা করতে ব্যস্ত।
গণমাধ্যমের খবর অনুযায়ী, সোমবার (১৭ মার্চ, ২০২৫) ভার্জিনিয়া রাজ্যে বদর খানকে গ্রেপ্তার করা হয়। মার্কিন নিরাপত্তা এজেন্সিগুলি তাকে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে যায় । বর্তমানে তাকে একটি আটক কেন্দ্রে রাখা হয়েছে। ডোনাল্ড ট্রাম্প সরকার বদর খান সুরির ভিসাও বাতিল করেছে। এদিকে তাকে মুক্তি দেওয়ার জন্য সরকারের কাছে একটি আবেদন করা হয়েছিল। তবে, ট্রাম্প প্রশাসন এই বিষয়ে কঠোর পদক্ষেপ নেয় এবং একটি বিশেষ আইন ব্যবহার করে তার নির্বাসনের আদেশ জারি করে ।
বদর খান সুরি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জর্জটাউন বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন গবেষক। তিনি এখানে শিক্ষকতাও করতেন। সে একজন আমেরিকান মহিলাকে বিয়ে করেছে। বদর এখানকার আল ওয়ালিদ বিন তালাল মুসলিম-খ্রিস্টান সেন্টারের একজন গবেষণা পণ্ডিত ছিলেন। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা,পাসপোর্ট এবং অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা দেখাশোনাকারী ডিপার্টমেন্ট অফ হোমল্যান্ড সিকিউরিটি (ডিএইচএস) বদর খানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা কঠোর পদক্ষেপ নিতে শুরু করেছে। ডিএইচএস তার বিবৃতিতে বলেছে,’বদর খান সুরি জর্জটাউন বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন ছাত্র ছিলেন যিনি হামাসের প্রচারণা এবং সোশ্যাল মিডিয়ায় ইহুদি-বিদ্বেষ প্রচার করছিলেন। সুরির একজন হামাস সন্ত্রাসীর সাথে সম্পর্ক রয়েছে, যে হামাসের একজন উপদেষ্টা।’ আরও বলা হয়েছে,’পররাষ্ট্রমন্ত্রী ১৫ মার্চ, ২০২৫ তারিখে একটি নির্দেশ জারি করেন যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে সুরির কর্মকাণ্ড তাকে আইএনএ ধারা ২৩৭(a)(৪) এর অধীনে নির্বাসনের আওতায় ফেলেছে ।’ জর্জটাউন বিশ্ববিদ্যালয়ও বদর খান সুরি সম্পর্কে একটি বিবৃতি জারি করেছে। বিশ্ববিদ্যালয় জানিয়েছে যে তারা সুরির বিরুদ্ধে অভিযোগ সম্পর্কে অবগত ছিল না।
এদিকে সুরি সম্পর্কে আরও তথ্য উঠে এসেছে। জানা গেছে যে তিনি ২০২০ সাল পর্যন্ত দিল্লির জামিয়া মিলিয়া ইসলামিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করছিলেন । হামাসকে সমর্থন করার কারণে আমেরিকা থেকে তাড়িয়ে দেওয়ার ঘটনায় সুরি হলেন দ্বিতীয় ভারতীয় ছাত্র ।
মাত্র কয়েকদিন আগে, ভারতীয় ছাত্রী বামপন্থী রঞ্জনী শ্রীনিবাসনের বিরুদ্ধেও একই অভিযোগ আনা হয়েছিল। তবে, তাকে গ্রেপ্তার করা হয়নি। এর পর, রঞ্জনী শ্রীনিবাসন নিজেই গোপনে আমেরিকা ত্যাগ করে পালিয়ে আসেন। তিনি একটি মার্কিন ডিএইচএস অ্যাপ ব্যবহার করে নিজেকে নির্বাসিত করেছিলেন। এর পর রঞ্জনী কানাডা চলে যান৷
রঞ্জনী শ্রীনিবাসন কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে নগর পরিকল্পনায় ডক্টরেট ছাত্র হিসেবে এফ-১ স্টুডেন্ট ভিসায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে এসেছিলেন। তার কিছু প্রবন্ধ প্রকাশিত হয়েছে যেখানে তিনি তথাকথিত ব্রাহ্মণ্যবাদী মানসিকতার বিরোধিতার নামে ঘৃণা ছড়ান । রঞ্জনী শ্রীবাস্তব আমেরিকায় যাওয়ার আগে ভারতের আহমেদাবাদের সিইপিটি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেছিলেন।।