এইদিন ওয়েবডেস্ক,কলকাতা,২৬ জানুয়ারী : রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী একটি ‘ভাগবত পাঠ’ অনুষ্ঠানের ভিডিও এক্স-এ শেয়ার করেছেন । যিনি ভাগবত পাঠ করছেন তাঁর পরিচয় দিয়েছেন হিরন্ময় গোস্বামী মহারাজ হিসাবে । শুভেন্দু অধিকারী জানান যে অনুষ্ঠানটির আয়োজন করা হয়েছিল কলকাতায় বেলেঘাটার সরকার বাজার মাঠ এলাকায় (বালির মাঠ) । এবং ওই মহারাজের হাতে একটা চিরকুট ধরিয়ে দিয়ে জনৈক তৃণমূল কর্মী সতর্ক করেছিল যেন ‘জয় শ্রীরাম’,’ভারত মাতা কি জয়’ ও ‘গোমাতার কি জয়’ তিনি না বলেন । যদিও হিরন্ময় গোস্বামী মহারাজ ওই চিরকুট ধরিয়ে দেওয়া ব্যক্তির সামাজিক ও রাজনৈতিক পরিচয় দেননি । তবে এই প্রকার আবদারে তিনি যথেষ্ট উত্তেজিত হয়ে পড়েছিলেন ।
ভিডিওতে ভাগবত পাঠককে বলতে শোনা গেছে, ‘গো মাতা কি জয়’ বা ‘ভারত মাতা কি জয়’ না হলে আমি থাকতে পারবো না । আমাকে কোনদিন আপনারা নিয়ে আসবেন না । এটা বলতে পারেন যে রাজনীতির কারোর নাম নেবেন না,এতে আপনাদের সমস্যা হতে পারে । কিন্তু ‘গো মাতা কি জয়’, এটা কি কোন রাজনৈতিক বক্তব্য? কোনদিন আপনাদের কাছে আসব না, আমি ভুল করেছি বা আপনারা ভুল করেছেন । মনে রাখবেন ‘গো মাতা কি জয়’ আমি আমৃত্যু বলে যাব৷ ‘ভারত মাতা কি জয়’ হল ভারত মায়ের নামে জয়ধ্বনি । এটা বলতে যদি আপনারা কেউ নিষেধ করেন তাহলে আমি মানতে রাজি নই । আমি কালকে থেকে প্রোগ্রাম বন্ধ করে দিতে রাজি আছি।’
এরপর তিনি যথেষ্ট উত্তেজিত হয়ে যান,’শুনুন, যারা এটা লিখেছেন ‘গো মাতা কি জয়’ বা ‘ভারত মাতা কি জয়’ বলার দরকার নাই, তারা আমার সামনে আসুন৷ সারা পৃথিবীর মানুষ দেখছেন । সনাতনীরা ‘গো মাতা কি জয়’ বা ‘ভারত মাতা কি জয়’ বলতে পারবে না, এটা কেন বললেন আপনি ? রাজনীতির বক্তব্য আমার মুখ থেকে একটাও পাবেন না। কিন্তু ‘গো মাতা কি জয়’ বা ‘ভারত মাতা কি জয়’ বলা আমার অধিকার । এটা আমার জন্মগত অধিকার, সনাতনী হওয়ার অধিকার, ভারতবর্ষের মাটিতে আমার অধিকার ।’ এরপর তিনি চিৎকার করে শ্লোগান তোলেন, ‘গো মাতা কি জয়’, ‘ভারত মাতা কি জয়’, ‘বন্দে মাতরম’ । তিনি চড়া গলায় বলেন,’এ কথাটা কে বলেছেন? কার এমন ক্ষমতা ? কমিটির কে এটা বললেন ‘গোমাতা বলা যাবে না’? এতবড় দুঃসাহস কে দিয়েছে আপনাকে ? এটা ভারতবর্ষের মাটি ভুলে গেছেন ? আপনারা সব জানেন একজন গো ভক্তকে আমরা এখানে বসিয়েছি । তিনি গোমাতা কি জয় বারবার বলবেন৷ এমন দুঃসাহস কে দেখিয়েছেন? আপনাদের প্ল্যাটফর্ম না পেলেও গোটা পৃথিবীজুড়ে আমার প্ল্যাটফর্ম তৈরি করে রেখেছে । আমি চাই আপনারা ক্ষমা চাইবেন৷ গোমাতা কি জয়, ভারত মাতা কি জয় বলা যাবে না ! আপনারা কিন্তু রাষ্ট্রদ্রোহী হয়ে যাচ্ছেন ।’
প্রতিক্রিয়ায় সুবীর অধিকারী লিখেছেন, গতকাল অর্থাৎ ২৫ জানুয়ারি ২০২৫ তারিখ সন্ধ্যায় কলকাতায় বেলেঘাটার সরকার বাজার মাঠ এলাকায় (বালির মাঠ) সনাতনীদের উদ্যোগে ‘ভাগবত পাঠ’ অনুষ্ঠানের আয়োজন হয়েছিল। সেখানে ভাগবত পাঠক হিসেবে অংশগ্রহণ করেন “শ্রী হিরন্ময় গোস্বামী মহারাজ”। তিনিই ভাগবত পাঠ করছিলেন। হঠাৎ ঐ অনুষ্ঠানে তোলামূলের কিছু সমর্থক হিরণ্ময় গোস্বামী মহারাজের হাতে একটি চিরকুট ধরিয়ে দেয় যেখানে লেখা ছিল অনুষ্ঠানে ‘জয় শ্রীরাম’ বলা যাবে না, ‘গোমাতার জয়’ বলা যাবে না শুধু তাই নয় ‘ভারত মাতার জয়’ পর্যন্ত বলা যাবে না। মহারাজ হিরন্ময় গোস্বামী এর তীব্র প্রতিবাদ করেন। যারা চিরকুট দিয়েছিল তাদের তিনি চ্যালেঞ্জ করেন, এবং বলেন চিরকুটে ‘ভারত মাতা কি জয়’ বলা যাবে না যে বা যারা বলছেন তারা যেন সামনে এসে বলেন। মহারাজের এই তীব্র প্রতিবাদের সামনে কেউ এগিয়ে আসার সাহস দেখাননি।’
তিনি আরও লিখেছেন,’গোমাতা সনাতন ধর্মের অঙ্গ, আমরা সনাতনীরা গোমাতার পুজো করি। ঠিক তেমনই আমাদের দেশ, যাকে আমরা মাতৃ রূপে পুজো করি সেই ভারত মাতার নামেও জয়ধ্বনি কোনো অপরাধ নয়, দেশের যে কোনো নাগরিক ভারত মাতার নামে যখন ইচ্ছে যেখানে ইচ্ছে জয়ধ্বনি দিতে পারেন বরং তাতে বাধা দান দেশদ্রোহীতার সমান।রাজ্যের তোলামূলের অবস্থা এখন এমন পর্যায়ে গিয়ে ঠেকেছে যে তারা ভারতমাতার জয়ধ্বনিতেও বাধাদান করতে পিছপা হচ্ছে নাপ আমি ‘ভাগবত পাঠ’ অনুষ্ঠানের উদ্যোক্তাদের বলব এই দেশদ্রোহীদের চিহ্নিত করুন, এদের মুখোশ সকলের সামনে উন্মোচন করার দরকার আছে। প্রয়োজনে এই দেশদ্রোহীদের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।’।