প্রদীপ চট্টোপাধ্যায়,বর্ধমান,১৯ জুন : বিষধর সাপের কামড় থেকে বাঁচার অভিপ্রায়ে গ্রামগঞ্জের মানুষজন দেবী মনসার পুজো ও ঝাপান অনুষ্ঠানের আয়োজন করে থাকেন । একই অভিপ্রায়ে রবিবার পূর্ব বর্ধমানের নাদনঘাটের রায়পুরের বাসিন্দারাও মনসার পুজো ও ঝাপান অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছিলেন।কিন্তু সেই অনুষ্ঠানে সর্প দংশনের কোন ঘটনা না ঘটলেও এক মদ্যপ যুবক যে ঘটনা ঘটান সেটা সর্প দংশনের থেকেও ভয়ঙ্কর । ঝাপানতলাতেই কামড়ে এক মনসা ভক্তের ডান হাতের বুড়ো আঙুলটা কেটে বিচ্ছিন্ন করে দেয় ওই মদ্যপ যুবক। ঘটনা প্রত্যক্ষ করে শিউরে ওঠেন ঝাপান তলায় উপস্থিত থাকা অন্য সকল ভক্তরা ।
মদ্যপের কামড়ে ডান হাতের বুড়ো আঙুল খোয়ানো যুবকের নাম পিযুষ কান্তি ঘোষ। তাঁর বাড়ি নাদনঘাটের রায়পুর এলাকাতেই । এদিন দুপুরে রায়পুর গ্রামে মনসা পুজো উপলক্ষ্যে চলা ঝাঁপান অনুষ্ঠানে এলাকার বহু মানুষ হাজির হয়েছিলেন।সেখানে সকলেই আনন্দ উৎসবে মেতেছিলেন। দেবী মনসার ভক্ত পিযুষ কান্তি ঘোষ ও সেখানে গিয়েছিলেন । আগে থেকেই ঝাপান তলায় উপস্থিত ছিলেন নন্দন পাল নামে এলাকার এক মদ্যপ ব্যক্তি । পিযুষ অভিযোগে জানান, হঠাৎ করেই ঝাপানতলায় নন্দন পাল নামে ওই ব্যক্তি তার উপর চড়াও হয়। এমনকি ওই ব্যক্তি তাঁকে মারতে পর্যন্ত উদ্যত হন ।তা নিয়ে দু’জনের মধ্যে বচসা শুরু হয়। ওই সময়ে আচমকাই তাঁর ডান হাত ধরে টেনে নিয়ে বুড়ো আঙুলটা মুখে ঢুকিয়ে নিয়ে কামড়ে কেটে বিচ্ছিন্ন করেদেন নন্দন পাল । কাটা আঙুল মাটিতে পড়ে থাকে । রক্তে ভেসে যায় তাঁর গোটা হাত ।
পিযুষ জানিয়েছেন,এই ঘটনার পর যন্ত্রনায়
তিনি ঝাপানতলায় দাড়িয়ে আর্তনাদ শুরু করলে তাঁর বাড়ির লোকজন ও স্থানীয়রা ছুটে আসেন । তারই মধ্যে মদ্যপ নন্দন ঝাপানতলা থেকে চম্পট দেয় । তাঁকে কালনার একটি বেসরকারি নার্সিংহোমে নিয়ে যাওয়া হয়।সেখানে কাটা আঙুল জোড়া লাগানো ব্যবস্থাপনা নেই বলে চিকিৎসকরা তাঁকে কলকাতার মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার করেন ।কাটা আঙুল আর জোড়া লাগানো যাবে কিনা তা নিয়েই এখন ঘোর দুশ্চিন্তায় যুবক পিযুষ ঘোষ ও তাঁর পরিবার ।
অভিজিৎ ঘোষ নামে এক গ্রামবাসী বলেন ,
এমন ঘটনা গ্রামের ঝাপান তলায় কোন দিনও
ঘটে নি ।এদিন যা ঘটলো তা শিউরে ওঠার মতোই । অভিযুক্তের দৃষ্টান্তমূলক সাজার দাবী করেছেন পিযুষ ঘোষ ও তাঁর পরিবার । অভিযুক্ত নন্দন পাল যদিও ঘটনার পর থেকেই বেপাত্তা হয়ে গিয়েছেন। ফোন করেও তার সঙ্গে যোগাযোগ করা যায় নি । নাদনঘাট থানার এক পুলিশ অফিসার বলেন ,’ ঘটনা বিষয়ে পরিবারের কেউ এখনও থানায় অভিযোগ দায়ের করেননি । অভিযোগ পেলে যথাযথ আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে ।’।