এইদিন আন্তর্জাতিক ডেস্ক,১১ সেপ্টেম্বর : বামপন্থীদের ভন্ডামির প্রবল সমালোচক ছিলেন ইসরায়েল ও মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পপন্থী আমেরিকার সুপরিচিত রক্ষণশীল নেতা চার্লি কার্ক (Charlie Kirk) । মাত্র কয়েকদিন আগেই তিনি বামপন্থীদের সমালোচনা করে লিখেছিলেন, “ইসলাম হলো সেই তরবারি যা বামপন্থীরা আমেরিকার গলা কাটার জন্য ব্যবহার করছে।” কিন্তু তার এই সত্যপলব্ধির মূল্য চোকাতে হল নিজের প্রাণ দিয়ে । বৃহস্পতিবার (১১ সেপ্টেম্বর, ২০২৫) ফ্লোরিডার ইউটা ভ্যালি বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি অনুষ্ঠানে গুলি করে মারা হলে ৩১ বর্ষীয় এই অকুতোভয় যুবককে৷ সবচেয়ে ঘৃণ্য বিষয় হল যে চার্লি কার্কের মৃত্যুতে উদযাপন পর্যন্ত করা হয়েছিল ইউটা ভ্যালি বিশ্ববিদ্যালয়ে । যদিও উদযাপনের পরপরই এমটিএসইউ-এর সহকারী ডিন অফ স্টুডেন্টসকে বরখাস্ত করা হয়েছে। ফ্লোরিডার গভর্নর রন ডিসান্টিস চার্লি কার্কের হত্যার জন্য “দ্রুত মৃত্যুদণ্ডের বিচার” দাবি করেছেন। তিনি বলেছেন, “আমি এই ঘটনা আর কখনো দেখতে চাই না। এর জন্য আমাদের ন্যায়বিচার প্রয়োজন।” চার্লি কার্ক তার স্ত্রী এরিকা এবং তাদের দুই শিশু সন্তানকে রেখে গেছেন।

ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু তার মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করে টুইট করেছেন,’সত্য কথা বলা এবং স্বাধীনতা রক্ষা করার জন্য চার্লি কার্ককে (Charlie Kirk) হত্যা করা হয়েছে । ইসরায়েলের একজন সিংহহৃদয় বন্ধু, তিনি মিথ্যার বিরুদ্ধে লড়াই করেছিলেন এবং ইহুদি-খ্রিস্টান সভ্যতার পক্ষে দাঁড়িয়েছিলেন। মাত্র দুই সপ্তাহ আগে আমি তার সাথে কথা বলেছিলাম এবং তাকে ইসরায়েলে আমন্ত্রণ জানিয়েছিলাম। দুঃখের বিষয়, সেই সফরটি হবে না। আমরা একজন অবিশ্বাস্য মানুষকে হারিয়েছি। আমেরিকার প্রতি তার অসীম গর্ব এবং বাকস্বাধীনতার প্রতি তার সাহসী বিশ্বাস স্থায়ী প্রভাব ফেলে যাবে। শান্তি কামনা করি, চার্লি কার্ক।’
হোয়াইট হাউস থেকে জারি করা এক বিবৃতিতে রাষ্ট্রপতি ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন,”মহান, এমনকি কিংবদন্তি চার্লি কার্কও মারা গেছেন। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের তরুণদের হৃদয়কে চার্লির চেয়ে ভালো আর কেউ বোঝেনি বা বুঝতে পারেনি। তিনি সকলের, বিশেষ করে আমার, ভালোবাসা এবং প্রশংসা পেয়েছিলেন এবং এখন, তিনি আর আমাদের মধ্যে নেই। মেলানিয়া এবং আমার সমবেদনা তার সুন্দরী স্ত্রী এরিকা এবং পরিবারের প্রতি। চার্লি, আমরা তোমাকে ভালোবাসি!”
উটাহ ভ্যালি বিশ্ববিদ্যালয়ের ওই অনুষ্ঠানের ভিডিওটিতে, গুলি চালানোর পর, চার্লি কার্ককে তার ঘাড় ধরে থাকতে দেখা যায়। মাত্র কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই এই ভিডিওটি ১ কোটি ১০ লক্ষ বার দেখা হয়। গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর তাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়, কিন্তু প্রায় দুই ঘণ্টা পরে তিনি মারা যান।
মিডিয়া রিপোর্ট অনুযায়ী, বিশ্ববিদ্যালয়ে চার্লি কার্কের সাথে প্রায় ৩০০০ মানুষ উপস্থিত ছিলেন। চার্লি কার্ক ‘বন্দুক সহিংসতা’ সম্পর্কিত প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার সাথে সাথেই একটি গুলি ছোড়া হয় যা সরাসরি তার বাম দিকের ঘাড়ে লাগে। তিনি কয়েক সেকেন্ড মাইক ধরে রাখার পর পরে পড়ে যান।
গুলি ছোড়ার সাথে সাথেই হুড়োহুড়ি পড়ে যায় । মানুষ চিৎকার করে এদিক-ওদিক দৌড়াতে শুরু করে। কেউ কেউ পিছলে পড়ে যায়, কেউ কেউ বেঞ্চে উঠে দৌড়াতে শুরু করে। এই মামলায় দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল, কিন্তু পরে তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়। বর্তমানে পুলিশ ঘরে ঘরে তল্লাশি চালাচ্ছে।।