এইদিন আন্তর্জাতিক ডেস্ক,১৭ সেপ্টেম্বর : গাজায় শতাব্দী প্রাচীন মসজিদ ক্ষেপণাস্ত্র মেরে গুঁড়িয়ে দিল ইসরায়েল । বলা হচ্ছে যে মসজিদটি ১৩শ শতাব্দীতে নির্মিত৷ সেখানে ফিলিস্তিনি সন্ত্রাসী গোষ্ঠী হামাসের বেশ কিছু সন্ত্রাসী সেখানে আত্মগোপন করলে মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) ইসরায়েল ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে মসজিদটি গুঁড়িয়ে দেয় । তবে ঠিক কত সংখ্যক সন্ত্রাসী নিকেশ হয়েছে তা এখনো স্পষ্ট নয় ।
জানা গেছে,মিশর শাসন করার সময় মামলুকরা ১২ শতকের শেষদিকে ওই মসজিদ নির্মান করেছিলেন। শেখ আব্দুল্লাহ আল আয়বাকির নামানুসারে এর নাম রাখা হয়েছিল আয়বাকি মসজিদ। এটি গাজায় আয়বাকি মসজিদ নামে পরিচিত ছিল। গাজার মানুষের কাছে এই মসজিদটি ছিল একটি গৌরবের প্রতীক । হামাস সন্ত্রাসীরা মসজিদটিতে আত্মগোপন করে ইসরায়েলে হামলার পরিকল্পনা করত বলে অভিযোগ । ইসরায়েলের কথায়,যেকারণে মসজিদটি ধ্বংস করা অনিবার্য হয়ে পড়েছিল ।
উল্লেখ্য,কয়েকদিন ধরে গাজায় মারাত্মক হামলা চালাচ্ছে ইসরায়েল ডিফেন্স ফোর্স । ফলে বিগত দুই বছরের মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ হামলার শিকার হচ্ছে গাজা শহর । ইসরায়েলি বাহিনীর প্রবল বোমাবর্ষণ ও গুলির মুখে হাজার হাজার মানুষ বাড়িঘর ছেড়ে পালাতে বাধ্য হচ্ছে । অনেকেই আশঙ্কা করছে যে হয়তো আর কখনও ফেরা হবে না ধ্বংসস্তূপে পরিণত হওয়া তাদের ঘরে।
মঙ্গলবার ইসরায়েলি সেনারা বোমাবর্ষণের পর ট্যাংক ও পদাতিক বাহিনী নিয়ে শহরে প্রবেশ করে। ওই দিনই অন্তত ৯১ ফিলিস্তিনি সন্ত্রাসী নিকেশ হয়। হামাস পরিচালিত স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ দাবি করেছে, উপকূলীয় সড়কে পালানোর চেষ্টা করা একদল মানুষের গাড়িতেও হামলা চালায় ইসরায়েল । যদিও তেল আবিব বলেছে যে এটা মিথ্যা দাবি করা হচ্ছে । আসলে সন্ত্রাসীরাই নিরাপদ আশ্রয়ে পালাচ্ছিল ।
আজ বুধবার গাজার অন্তত ১৭টি ভবন ধ্বংস করা হয়েছে। এর মধ্যে পূর্ব তুফাহ্ এলাকায় অবস্থিত ৭৫০ বছরের পুরোনো আল-আয়বাকি মসজিদও রয়েছে। ইসরায়েলি হামলায় মসজিদটি গুঁড়িয়ে যাওয়ার দৃশ্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে।
ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কাটজ এক্স-এ লিখেছেন, গাজা জ্বলছে। মানবাধিকার সংস্থা ইউরো-মেড মনিটর জানিয়েছে, ইসরায়েলি সেনারা অন্তত ১৫টি বিস্ফোরকভর্তি রোবট ব্যবহার করছে, যা একেকটি সর্বোচ্চ ২০টি বাড়িঘর ধ্বংস করতে সক্ষম।
গতকাল জাতিসংঘের তদন্ত কমিশন আনুষ্ঠানিকভাবে জানিয়েছে, গাজায় ইসরায়েল গণহত্যা চালাচ্ছে। এখন পর্যন্ত ইসরায়েলি হামলায় ৬৫ হাজারের বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে । যার সিংহভাগই সন্ত্রাসী বলে দাবি ইসরায়েলের । এছাড়া প্রায় দুই লাখ মানুষ আহত হয়েছে । হামাস প্রেমী কাতার ভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ফিলিস্তিনি জনগোষ্ঠীকে ধ্বংস করার জন্য ইসরায়েলি নেতৃত্বের ‘বিশেষ অভিপ্রায়’ স্পষ্ট।।

