এইদিন ওয়েবডেস্ক,কোয়েম্বাটোর,১৭ ডিসেম্বর : এসআল উম্মা নামে নিষিদ্ধ সন্ত্রাসী সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা এবং কোয়েম্বাটোর বিস্ফোরণ মামলায় দোষী সাব্যস্ত বাশা সোমবার (১৬ ডিসেম্বর ২০২৪) মারা গেছে । তাঁর বয়স হয়েছিল ৮৩ বছর এবং বার্ধক্যজনিত কারণে সে দীর্ঘদিন ধরে অসুস্থ ছিল । উল্লেখ্য, কোয়েম্বাটোর বিস্ফোরণে ৫৮ জনের মৃত্যু হয় এবং আহত হয়েছিল ২৩১ জন । হামলার ঘটনা ঘটে যখন বিজেপি নেতা লালকৃষ্ণ আডবাণী নির্বাচনী প্রচারে পুরমে যাচ্ছিলেন । কোয়েম্বাটোর বিস্ফোরণ মামলায় পুলিশ বাশাসহ ১৬৬ জনকে গ্রেপ্তার করে । বিশেষ আদালত ১৫৮ জনকে দোষী সাব্যস্ত করে ৪৩ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয়। পরে মাদ্রাজ হাইকোর্টে আপিল করে ৪১ জন। হাইকোর্ট নাবালকদের মধ্যে দুজনকে মুক্তি দেয়, ১৭ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড এবং ২২ জনকে খালাস করে । বাশা এবং আল উম্মার অন্যান্য ১৬ সন্ত্রাসীকে এই মামলায় যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছিল।
মিডিয়া রিপোর্ট অনুযায়ী, কোয়েম্বাটুর সিরিজ বিস্ফোরণ মামলায় যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ভোগ করছিল এসএ বাশাকে ২০২৩ সালের অক্টোবরে চিকিৎসার জন্য অস্থায়ী প্যারোল মঞ্জুর করা হয়েছিল, যা তার স্বাস্থ্যের কারণে সরকার দ্বারা বাড়ানো হয়েছিল । চেন্নাইয়ের একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিল ওই সন্ত্রাসবাদী ।
প্রসঙ্গত,নিষিদ্ধ ইসলামি সন্ত্রাসবাদী সংগঠন আল-উম্মার সভাপতি এসএ বাশা, ২০০৩ সালের জুলাইয়ে গুজরাটের তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী যখন কোয়েম্বাটুরে গিয়েছিলেন তখন তাকে হত্যার হুমকিও দিয়েছিল । হিন্দু মুন্নানী নেতা হত্যার মামলায় যাবজ্জীবন কারাদণ্ডে দণ্ডিত হওয়ার পর সাংবাদিকরা কোয়েম্বাটোর আদালত কমপ্লেক্সে দোষীদের সাথে কথা বলার সময় বাশা এবং অন্য আটজন প্রকাশ্যে এই হুমকি দিয়েছিল । বাশা বলেছিল, গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী মোদী যদি কোয়েম্বাটুরে আসেন, তাহলে তাঁকে হত্যা করা হবে।
ডিএমকে সরকার বাশা ও তার সহযোগীদের প্রতি কতটা সদয় ছিল তা এখানে উল্লেখ করাও জরুরি। প্রকৃতপক্ষে, ২০০৬ সালের ২৪ জুলাই, ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস-এ একটি খবর প্রকাশিত হয়েছিল – “ডিএমকে কোয়েম্বাটোর সন্ত্রাসী ঘটনার অভিযুক্তদের জেলকে স্পা-তে রূপান্তরিত করেছে”। সংবাদ প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, “আব্দুল নাসির মাহদানির আয়ুর্বেদিক ম্যাসেজের খরচ সরকার বহন করছিল এবং তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা থাকা সত্ত্বেও তিনি মাহদানির সঙ্গে বিনা বাধায় দেখা করতে পারেন। এই পরিস্থিতিতে, যারা সন্ত্রাসবাদ দমনের প্রয়োজনীয়তার বিষয়ে কঠোর কথা বলে তাদের উপহাস করা যেতে পারে। “মাহদানি ১৯৯৮ সালের কোয়েম্বাটুরে সিরিজ বিস্ফোরণের প্রধান অভিযুক্ত, যেখানে বিজেপি নেতা এল কে আদভানিকে নিশানা করার চেষ্টা করার সময় ৫৮ জনের মৃত্যু হয়েছিল ।”
প্রতিবেদনে আরও লেখা হয়েছে, “করুণানিধি মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেওয়ার পর থেকে মাহদানি এবং আল উম্মার অন্যান্য ১৬৬ জন বন্দীর পরিবেশ, এখানে উচ্চ নিরাপত্তা কারাগারে রাখা হয়েছে, মনোরম। এদের বেশির ভাগকেই কোয়েম্বাটুর বিস্ফোরণে জড়িত থাকার অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়েছে। করুণানিধিকে ধন্যবাদ,১০ জন ম্যাসেজার এবং চারজন সিনিয়র আয়ুর্বেদিক ডাক্তারের একটি দল মাহদানির ‘উচ্চ মানের চিকিৎসা’ শুরু করেছে, যাকে ২০০১ সাল থেকে কারা হাসপাতালে রাখা হয়েছে।”