এইদিন ওয়েবডেস্ক,কলকাতা,২৬ নভেম্বর : আগামী বছর লোকসভার নির্বাচন । তার আগে দেশ জুড়ে চলছে ভোটার তালিকা সংশোধন ও সংযোজনের কাজ । এরাজ্যেও ভোটার তালিকা তৈরির কাজ চলছে । তার মাঝে হাবড়া পঞ্চায়েত সমিতির প্রাক্তন সভাপতি ও কুমরা পঞ্চায়েতের প্রাক্তন সভাপতি তৃণমূল নেত্রী রত্না বিশ্বাসের একটা মন্তব্য রাজ্য জুড়ে আলোড়ন ফেলে দিয়েছে । একটি অনুষ্ঠানে মাইক্রোফোন হাতে নিয়ে রত্না বিশ্বাস দলীয় কর্মীদের উদ্দেশ্যে বার্তা দেন যে বাংলাদেশিদের ভোটার কার্ডের জন্য ‘লিঙ্ক’ করাতে অসুবিধা হলে তারা যেন ‘জাকিরদা’র সঙ্গে যোগাযোগ করেন । উল্লেখ্য রত্না বিশ্বাসের উল্লিখিত এই ‘জাকিরদা’ হলেন হাবড়ার প্রাক্তন পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি জাকির হোসেন।
প্রসঙ্গত,গত ২৩ নভেম্বর বারাসতের তৃণমূল কংগ্রেসের সাংসদ মধ্যমগ্রামের বাসিন্দা কাকলি ঘোষ দস্তিদারের জন্মদিনের অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছিল । ওই অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখছিলেন রত্না বিশ্বাস নামে ওই তৃণমূল নেত্রী । সেই সময়েই দলীয় নেতা কর্মীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন,’আর বাকি তিন মাস। আর তিন মাস বাদেই আমাদের লড়াই লড়তে হবে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, আপনার সবাই দেখেছেন যে তিন মাসের মধ্যেই লোকসভা নির্বাচনের ঘোষণা হবে। এখন ভোটার তালিকায় নাম তোলার কাজ চলছে। এই এলাকায় অনেক বাংলাদেশি আছেন। যদি ভোটার তালিকায় নাম তুলতে লিঙ্কের কোনও সমস্যা হয় তাহলে জাকিরদার (জাকির হোসেন) সঙ্গে যোগাযোগ করুন। ওর ভালো লিঙ্ক আছে। নাহলে এই অফিসে এসে যোগাযোগ করবেন। এই কাজটা অতিদ্রুত করবেন। কারণ আমরা চাই না একটা ভোটও বাইরে থাকে।’
এদিকে হাবড়ার তৃণমূল নেত্রী রত্না বিশ্বাসের ওই ভিডিওটি সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে । উল্লেখ্য,কয়েক বছর আগে বর্ধমানের এক তৃণমূল বিধায়কও প্রকাশ্য জনসভায় বাংলাদেশিদের ভোটার কার্ড তৈরি করে দেওয়ার জন্য দলের নেতাকর্মীদের কাছে আহ্বান জানিয়েছিলেন বলে অভিযোগ উঠেছিল । ফের এক তৃণমূল নেত্রীর একই আহ্বানে তৃণমূলের মানসিকতা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে । অনেকে অভিযোগ তুলছেন যে ভোটব্যাঙ্কের লোভে তৃণমূল কি পরিকল্পিতভাবে রাজ্যের জনবিন্যাসের পরিবর্তন করতে চাইছে ।
এই বিষয়ে কড়া প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন রাজ্য বিজেপির সভাপতি সুকান্ত মজুমদার । তিনি তৃণমূল নেত্রী রত্না বিশ্বাসের ওই বক্তব্যের ভিডিওটি নিজের ফেসবুক পেজে শেয়ার করে লিখেছেন, ‘জাকির দা লিংকের কাজটা ভালো করতে পারে ।’ বাংলাদেশী অনুপ্রবেশকারীদের ভোটাধিকার প্রদানের দায়িত্ব নিয়েছে তৃণমূল। নিজেদের দেশের জনগণের ওপর উন্নয়নের ওপর ভরসা নেই তৃণমূলের? তাই কি বাংলাদেশ থেকে লোক এনে ভোটে জিততে মরিয়া তৃণমূল?তৃণমূলের সুপ্রিমো একদা বাংলাদেশী অনুপ্রবেশকারীদের ভোটাধিকারের বিরুদ্ধে লোকসভায় সোচ্চার হয়ে চোখের জল ফেলেছিলেন, ক্ষমতায় এসে ১৩ বছর ধরে সেই বাংলাদেশী অনুপ্রবেশকারীদের ভোট ব্যাংক হিসেবে ব্যবহার করছে তৃণমূল। এই ধরনের রাষ্ট্রদ্রোহী “লিংকের” কাজে লিপ্ত এই তৃণমূলের নেতা নেত্রীদের বিরুদ্ধে দেশদ্রোহী মামলায় NIA তদন্ত হওয়া দরকার। চুপিসারে পশ্চিমবঙ্গের ডেমোগ্রাফি পরিবর্তনের ষড়যন্ত্র আর কতদিন চলতে পারে?’