প্রদীপ চট্টোপাধ্যায়,বর্ধমান,১৮ মে : বমাল ধরা পড়লো অবৈধভাবে ভারতে ঘাঁটি গেড়ে থাকা ’ইরানি“ বাবা ও ছেলে । তাদের উত্তমমধ্যম দিয়ে পূর্ব বর্ধমানের মন্তেশ্বর থানার পুলিশের হাতে তুলে দেয় স্থনীয় হোসেনপুর এলাকার বাসিন্দারা। পুলিশ দু’জনকেই গ্রেফতার করেছে । পুলিশ জানিয়েছে,ধৃতরা হল আলি মাহাবুবি ও তার ছেলে আমির আব্বাস মাহাবুবি। তাদের বাড়ি ইরানের তেহেরানের খানিয়াবাদে । সুনির্দিষ্ট ধারায় মামলা রুজু করে পুলিশ শনিরার ধৃত বাবাকে কালনা মহকুমা আদালতে এবং ছেলেকে জুভেনাইল জাস্টিস বোর্ডে পেশ করে। বিচারক আলি মাহাবুবিকে জেল হেফাজতে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন। আর তাঁর ছেলে আমির আব্বাস মাহাবুবির ঠাঁই হয়েছে হোমে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে,শুক্রবার রাতে একটি চারচাকা গাড়িতে চড়ে বাবা আলি মাহাবুবি ও ছেলে আমির আব্বাস মাহাবুবি মন্তেশ্বরের হোসেনপুর গ্রামে পৌছায়। এরপর তারা হোসেনপুর গ্রামে থাকা ছোটখাটো একটি সোনার দোকানেকে টার্গেট করেন। খরিদ্দার সেজে ওই সোনার দোকানে গিয়ে তারা নাকছাবি, কানের দুল সহ নানা সোনার অলঙ্কার দেখতে থাকে ।সাথে সাথে দরদামও করতে থাকে ।তারই মধ্যে হঠাৎতই সোনার ৩টি নাকছাবি ও ১টি কানের দুল নিয়ে তারা ছুট মেরে দেয়। এমনটা দেখেই দোকানদার চোর চোর বলে চিৎকার শুরু করে দেন। তা শুনে স্থানীয়রা ছুটে গিয়ে ওই ইরানি বাবা ও ছেলেকে বমাল ধরে ফেলে।
দোকান মালিক বুদ্ধদেব হাজরা জানিয়েছে ,দামি একটি চারচাকা গাড়িতে চড়ে শুক্রবার সন্ধ্যা ৭:৪০ নাগাদ দু’জন তাঁর দোকানে আসে। ভাঙা ভাঙা হিন্দীতে তারা একে অপরের সঙ্গে কথা বলতে থাকে ।তাদেরকে দেখে প্রথমে সন্দেহজনক মনে হয়নি। দু’জনের মধ্যে একজন ব্যক্তি সোনার অলঙ্কার দেখার সময় কথা বলতে বলতে একটি নাকছাবি কায়দা করে সরিয়ে ফেলে । বুদ্ধদেব বাবু বলেন,এমনটা দেখেই তিনি সতর্ক হয়ে যান । এরপর মুহুর্তের মধ্যে কিছু গহনা নিয়ে ওই ব্যক্তিরা ছুটে পালিয়ে যাবার চেষ্টা করে । যদিও এলাকার লোকজন তাদের ধরে ফেলে। তবে গাড়িটি নিয়ে চালক পালিয়ে যায়।অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দায়ের করার কথা বুদ্ধদেব বাবু জানিয়েছেন।
ধৃতদের থানায় নিয়ে গিয়ে ম্যারাথন জিজ্ঞাসাবাদ চালায় মন্তেশ্বর থানার পুলিশ । জিজ্ঞাসাবাদ পুলিশ জানতে পারে,গহনা চুরির উদ্দেশ্যেই ওই দু’জন সোনার দোকানে ঢোকে। তাদের কাছ থেকে দুটি পাসপোর্ট ও প্রায় আড়াই হাজার মার্কিন ডলার উদ্ধার হয়েছে ।পুলিশের আরও দাবি ,ইরানের বাসিন্দা বাবা ও ছেলে ভিসা নিয়ে ভারতে এসেছিল। ভিসার মেয়াদ শেষ হয়ে গেলেও কোন এই উদ্দেশ্যে তারা ভারতেই রয়ে থাকে। দিল্লী সহ ভারতের আরও বেশ কিছু জায়গায় তারা গিয়েছিল বলে পুলিশ জানতে পেরেছে। কালনা মহকুমা পুলিশ আধিকারিক(এসডিপিও) রাকেশ কুমার চৌধুরি জানিয়েছেন,ধৃতদের বিষয়ে আরও খোঁজ খবর নেওয়া হচ্ছে।।

