এইদিন ওয়েবডেস্ক,তেহেরান,১৮ ডিসেম্বর : বিক্ষোভে সমর্থন করায় জনপ্রিয় অভিনেত্রীকে শনিবার গ্রেপ্তার করেছে ইরানি কর্তৃপক্ষ । অস্কার বিজয়ী সিনেমা ‘দ্য সেলসম্যানের’ তারকা তারানে আরিদোস্তি (Tarane Aridosti) নামে ওই অভিনেত্রী সপ্তাহ খানেক আগে মাহাসা আমিনি হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে বিক্ষোভকে সমর্থন করে ইনস্টাগ্রামে একটি পোস্ট করেছিলেন । রাষ্ট্রীয় মিডিয়ার অফিসিয়াল টেলিগ্রাম চ্যানেলে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে,’তাঁর দাবির সাথে সঙ্গতিপূর্ণ নথি সরবরাহ করতে ব্যর্থ হওয়ায় অ্যারিদোস্তিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে । এছাড়া আরও বেশ কিছু ইরানী সেলিব্রিটিকে “উস্কানিমূলক বিষয়বস্তু প্রকাশের জন্য বিচার বিভাগীয় কর্তৃপক্ষের দ্বারা তলব করা হয়েছে” এবং কয়েকজনকে গ্রেপ্তারও করা হয়েছে বলে রিপোর্টে বলা হয়েছে ।
ইনস্টাগ্রাম পোস্টে ৩৮ বছর বয়সী অভিনেত্রী তারানে আরিদোস্তি লিখেছিলেন,’তাঁর নাম মোহসেন শেখারি। যে সমস্ত আন্তর্জাতিক সংস্থা এই রক্তপাত দেখেও চুপ করে আছে তারা মানবতার জন্য লজ্জাজনক।’ আর এই অপরাধের জন্য তাঁকে গ্রেফতার করল ইরান সরকার । আরিদোস্তির অন্যান্য বিখ্যাত চলচ্চিত্রের মধ্যে রয়েছে ‘বিউটিফুল সিটি’ এবং ‘অ্যাবাউট এলি’। ইনস্ট্রাগ্রামে তারানে আরিদোস্তির প্রায় ৮ মিলিয়ন ফলোয়ার রয়েছে । তাঁর ওই অ্যাকাউন্টটি স্থগিত করা হয়েছে ।
সম্প্রতি প্রতিবাদের সময় সংঘটিত অপরাধের অভিযোগে বেশ কয়েকটি মৃত্যুদন্ড কার্যকর করা হয়েছে। এই তালিকায় নাম রয়েছে ফুটবলার, অভিনেতা এবং প্রভাবশালী সহ সেলিব্রিটিদের । তালিকায় সর্বশেষ সংযোজন তারানে আরিদোস্তি । তেহরানের একটি রাস্তা অবরোধ এবং নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যকে ছুরি দিয়ে আক্রমণ করার অভিযোগে গত ৯ ডিসেম্বর শেখালির মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়েছিল ।গত সপ্তাহে বিক্ষোভের সাথে জড়িত দ্বিতীয় বন্দী মাজিদ্রেজা রাহনাভার্দকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছে । তাঁকে সড়কপথে প্রকাশ্যে ক্রেনের সাহায্যে ঝুলিয়ে দেওয়া হয় । নভেম্বরে সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রতিবাদকারীদের সমর্থন করার জন্য আরও দুই সুপরিচিত ইরানী অভিনেত্রী হেঙ্গামে গাজিয়ানি এবং কাতায়ুন রিয়াহিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল । জাতীয় ফুটবল দলকে অপমান করা এবং সরকারের বিরুদ্ধে অপপ্রচারের অভিযোগে গ্রেফতার হয়েছিল ইরানি ফুটবলার ভল্যা গাফরিকে । যদিও তিনজনকেই গত মাসে মুক্তি দেওয়া হয় ।
নৈতিকতা পুলিশের হাতে আটক হওয়ার পর ২২ বছরের কুর্দি তরুনী মাহসা আমিনির চলতি বছরের ১৬ সেপ্টেম্বর মৃত্যুর পর থেকে ইরান বিক্ষোভে কেঁপে উঠেছে। এরপর থেকে এই বিক্ষোভ ১৯৭৯ সালের ইসলামী বিপ্লব দ্বারা প্রতিষ্ঠিত ইরানি ধর্মতন্ত্রের জন্য সবচেয়ে গুরুতর চ্যালেঞ্জগুলির একটিতে পরিণত হয়েছে । ইরানের মানবাধিকার কর্মীদের মতে, এযাবৎ কমপক্ষে ৪৯৫ জন বিক্ষোভকারীকে গুলি করে বা পিটিয়ে মেরেছে ইরানের নিরাপত্তাবাহিনী । এছাড়া ১৮,২০০ জনেরও বেশি মানুষকে আটক করা হয়েছে ।।