এইদিন ওয়েবডেস্ক,তেহেরান,২২ জুন : ইরানের সংসদ হরমুজ প্রণালী বন্ধের প্রস্তাব অনুমোদন করেছে। তবে, চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত এখন ইরানের সর্বোচ্চ জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদ নেবে। এই পদক্ষেপ এমন এক সময়ে নেওয়া হয়েছে যখন আমেরিকা ইরানের তিনটি পারমাণবিক স্থাপনায় হামলা চালিয়েছে।
এই ঘটনার পর পশ্চিম এশিয়ায় উত্তেজনা উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে এবং বিশ্বজুড়ে তেল সরবরাহ নিয়ে উদ্বেগ বেড়েছে। ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সাঈদ আব্বাস আরাঘচি বলেছেন যে ‘ইরানের কাছে অনেক বিকল্প রয়েছে।’ হরমুজ প্রণালী বন্ধ করাকে এর মধ্যে সবচেয়ে কার্যকর এবং বিপজ্জনক বিকল্প হিসাবে বিবেচনা করা হয় ।
হরমুজ প্রণালী পারস্য উপসাগরকে ওমান উপসাগরের সাথে সংযুক্ত করে এবং এটি বিশ্বের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ তেল বাণিজ্য পথ। এই সংকীর্ণ সমুদ্র পথটি সৌদি আরব, ইরান, সংযুক্ত আরব আমিরাতের মতো দেশগুলি থেকে বিশ্বের অন্যান্য অঞ্চলে তেল এবং গ্যাস পরিবহন করে। এর প্রস্থ তার সংকীর্ণতম স্থানে মাত্র ৩৩ কিলোমিটার, যার ফলে এটি থামানো বা বাধা দেওয়া সহজ।
মার্কিন জ্বালানি তথ্য প্রশাসন (EIA) অনুসারে, ২০২৪ সালে বিশ্বের সমুদ্রপথে তেল বাণিজ্যের ২৫% এবং তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (LNG) প্রায় ২০% এই প্রণালী দিয়ে গেছে । ইরান যদি এই জলপথ বন্ধ করে দেয়, তাহলে বিশ্বব্যাপী তেল সরবরাহ ব্যাহত হবে এবং দামের বিশাল উত্থান ঘটতে পারে।
ভারত বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম তেল আমদানিকারক এবং এর একটি বড় অংশ আসে মধ্যপ্রাচ্য থেকে । ইআইএ এর রিপোর্ট অনুসারে, ২০২৪ সালে হরমুজ প্রণালী দিয়ে যাওয়া তেলের ৬৯% চীন, ভারত, জাপান এবং দক্ষিণ কোরিয়ায় গিয়েছিল। যদি এই পথটি বাধাগ্রস্ত হয়, তাহলে ভারতের জন্য তেল পাওয়া কঠিন হবে না, তবে দাম অবশ্যই বাড়তে পারে।ভারত রাশিয়া, আমেরিকা এবং আফ্রিকার মতো বিকল্প দেশগুলি থেকেও তেল কেনে, তবে দামের ওঠানামা পেট্রোল এবং ডিজেল সহ অন্যান্য পণ্যগুলিতেও প্রভাব ফেলবে। ভারত সরকার এই পরিস্থিতি মোকাবেলায় প্রস্তুতি শুরু করেছে। কেন্দ্রীয় পেট্রোলিয়াম মন্ত্রী হরদীপ পুরী বলেছেন যে ভারত পারস্য উপসাগরের বাইরে থেকে তেল আমদানি করার পরিকল্পনা করছে এবং পরিশোধিত পণ্যের (যেমন পেট্রোল এবং ডিজেল) রপ্তানি কমাবে।।