এইদিন ওয়েবডেস্ক,তেহেরান,৩০ জানুয়ারী : ইসরায়েলের গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদের হয়ে গুপ্তচরবৃত্তি করার অভিযোগে চারজনের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করেছে ইরান। ইরানের সুপ্রিম কোর্টে আপিল খারিজ হয়ে যাওয়ার পর সোমবার (২৯ জানুয়ারী ২০২৪) সকালে তাদের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয় । ওই চার হতভাগ্যের নাম মোহাম্মদ ফারামারজি, মোহসেন মাজলুম, ওয়াফা আজারবার এবং পেজমান ফাতেহি । তারা প্রত্যেকেই ইরানি কুর্দিস্তানের কোমলা পার্টির সদস্য বলে জানা গেছে । স্বভাবতভাবেই ওই চারজনের মৃত্যুদণ্ডের প্রতিবাদে সরব হয়েছে কুর্দিস্তানের মানুষ । মানবাধিকার সংস্থা এবং একটি কুর্দি রাজনৈতিক দলের আহ্বানের সাড়া দিয়ে, ব্যস্ত শহরগুলির দোকানের মালিকরা তাদের দরজা বন্ধ করে রেখে দেয় ।
চলতি সপ্তাহের শুরুতে চার কুর্দি রাজনৈতিক বন্দীর মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করার প্রতিবাদে বাসিন্দারা শ্রমিক ধর্মঘট শুরু করার সাথে সাথে আজ মঙ্গলবার ইরানের পশ্চিম কুর্দি শহর জুড়ে প্রতিবাদে সোচ্চার হয় । অনলাইনে প্রচারিত চিত্রগুলিতে ইরানের কুর্দিস্তানের সানন্দাজ, সাক্কেজ, মাহাবাদ, বুকান, দেহগোলানসহ অন্যান্য শহরের রাস্তাগুলি শুনসান এবং দোকানগুলিএ শাটার বন্ধ দেখা যায় ।
এদিকে অশান্তির আশঙ্কায় ইরানের সেনার হেলিকপ্টারগুলি সানন্দাজ এবং কেরমানশাহের উপরে আকাশে টহল দেয় এবং বেশ কয়েকটি শহরে ইন্টারনেট বিঘ্নিত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে । উল্লেখ্য,ইন্টারনেট বন্ধ করা ইরানের মৌলবাদী সরকারের একটি কৌশল যা সাধারণত প্রতিবাদ আন্দোলন মোকাবেলায় ব্যবহার করা হয় ।
গত গ্রীষ্মে ইস্ফাহানে ইসরায়েলের সহযোগিতায় বোমা হামলার পরিকল্পনার অভিযোগে মোহাম্মদ ফারামারজি, মোহসেন মাজলুম, ওয়াফা আজারবার এবং পাজমান ফাতেহির মৃত্যুদণ্ড দেওয়ার একদিন পর ইরানের কুর্দি প্রদেশে উত্তেজনা বৃদ্ধি পেয়েছে ।
অধিকার গোষ্ঠীগুলি ইরানি কর্তৃপক্ষের এই অভিযোগগুলির ব্যাপকভাবে বিরোধিতা করেছে, এবং বলেছে যে পুরুষদের নির্যাতন এবং অন্যান্য দুর্ব্যবহারের অভিযোগে একটি চরম অন্যায় বিচারে সাজা দেওয়া হয়েছে ।
জানা গেছে, ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বরে ওই ৪ জনের মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়। সেই রায়ের বিরুদ্ধে অভিযুক্তদের পক্ষ থেকে আপিল করা হয়েছিল বলে ইরান কর্তৃপক্ষ দাবি করেছে । সুপ্রিম কোর্ট সম্প্রতি তা নাকচ করে দেয় । অভিযোগ উঠছে যে সাজাপ্রাপ্ত চার যুবককে আদপেই আপিলের সুযোগ দেওয়া হয়নি । এমনকি তাদের আইনজীবী নিয়োগ করতে না দিয়ে একতরফা বিচার প্রক্রিয়া চালানো হয়েছে ।।