এইদিন ওয়েবডেস্ক,তেহেরান,২২ সেপ্টেম্বর : হিজাব না পরায় এবং নিজের চুল ঢেকে না রেখে প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়ানোয় ২২ বছর বয়সী মাহসা আমিনি নামে এক তরুনীকে সম্প্রতি তেহেরানে পিটিয়ে মেরেছিল ইরানের নৈতিকতা পুলিশ । আর তারপর থেকে ইরান জুড়ে বিক্ষোভের আগুন জ্বলছে । ইরানের মহিলার নিজেদের চুল কেটে এবং হিজাব পুড়িয়ে মাহসা আমিনির হত্যার প্রতিবাদে সরব হচ্ছে । এযাবৎ ৭ জনকে গুলি করে মেরেছে ইরানি পুলিশ । পুলিশের নির্মম মারে আহত হয়েছে ৪৫০ জন প্রতিবাদী মহিলা । বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে ইনস্টাগ্রাম পরিষেবা । কিন্তু কোনো কিছুতেই বিক্ষোভ নিয়ন্ত্রণে আনতে পারছে না পুলিশ । এদিকে নিত্য নৈমিত্তিক ফতোয়া থেকে চিরস্থায়ী মুক্তি পেতে ইরানি মহিলারা ইসলামিক দেশের সর্বোচ্চ নেতা আলী খামেনির মৃত্যুর জন্য প্রার্থনা করেছেন । তাকে স্বৈরশাসক হিসাবে বর্ণনা করে প্রকাশ্য সড়কে পোস্টার হাতে তুমুল বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন মহিলারা ।
প্রসঙ্গত,হিজাব আইনটি আদপে যে মহিলাদের উপর চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে তা মাহসা আমিনি হত্যাকাণ্ডের পর স্পষ্ট হল । বিজেপি নেতা কপিল মিশ্র একটি ভিডিও শেয়ার করে লিখেছেন,’ইরানের সাহসী ইসলামি মহিলারা হিজাব পুড়িয়ে স্বাধীনতার দাবি জানাচ্ছেন ।’ ভিডিওতে দেখা গেছে একটি অগ্নিকুণ্ড ঘিরে দাঁড়িয়ে আছেন শতাধিক মহিলা ও পুরুষ । মহিলারা একে একে হিজাব খুলে আগুনে ফেলছে । এক তরুনীকে হিজাব পুড়িয়ে আনন্দে নাচতে দেখা গেছে ।
এদিকে ইরানি বিক্ষোভকারীদের সমর্থন করেছেন ইসরায়েলি মহিলারা । ইরানি মহিলাদের অধিকার রক্ষায় পাশে এসে দাঁড়িয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রও ।
বুধবার জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে তার ভাষণে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রপতি জো বাইডেন বলেছেন, যে তাঁর দেশ “সাহসী ইরানী নাগরিক এবং নারী যারা তাদের মৌলিক অধিকারের জন্য লড়াই করছে” তাদের পাশে দাঁড়িয়েছে । তার দেশ সর্বদা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অভ্যন্তরে এবং বিশ্বের বিভিন্ন অংশে মানবাধিকার রক্ষা করবে ।
উল্লেখ্য,জিহাব আইন যথাযথ না মেনে চলায় পুলিশ মেহসা আমিনিকে গ্রেফতারের পর তাঁর রহস্যজনক মৃত্যুর ঘটনায় ইরানি নাগরিকদের বিক্ষোভ সারা দেশে ছড়িয়ে পড়েছে। বৃহস্পতিবার সকালেও তাবরিজ, আরাক ও ইস্ফাহান প্রভৃতি শহরগুলিতে বিক্ষোভ শুরু হয় । ইরানের সাংবাদিক আলিনজাদ বলেছেন,ইরানের মেয়েরা যদি ৭ বছর বয়স থেকে তাদের চুল না ঢেকে রাখে তবে তাদের স্কুলে যেতে দেওয়া হয় না । এমনকি চাকরিও পাওয়া যায় না । ইরানের নারীরা এই লিঙ্গ বৈষম্য ব্যবস্থায় বিরক্ত । এবার এই পরিস্থিতি থেকে চিরস্থায়ী মুক্তি পেতে চাইছে ইরানের মহিলারা ।।