এইদিন ওয়েবডেস্ক,তেহেরান,০৫ ডিসেম্বর : হিজাব আইন না মানায় চলতি বছরের ১৬ সেপ্টেম্বর ২২ বছর বয়সি কুর্দি তরুনী মাহসা আমিনিকে গ্রেফতার করেছিল ইরানের নীতিপুলিশ । পুলিশের অমানবিক মারধরে তরুনীর মৃত্যু হয় । এরপর থেকে প্রতিবাদের আগুন জ্বলছে ইরান জুড়ে । সরকারের পতনের দাবিতে তীব্র আন্দোলন চলছে । এবার ওই জনরোষকে প্রশমিত করতে নীতিপুলিশের কার্যক্রম বন্ধ করতে যাচ্ছে ইরান । শনিবার ইরানের অ্যাটর্নি জেনারেল মোহাম্মদ জাফর মন্তাজেরি এই সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছে । তিনি বলেছেন,’বিচারবিভাগের সঙ্গে নীতিপুলিশের কোনো সম্পর্ক নেই ।’ তবে নীতিপুলিশের অস্তিত্ব বিলোপ করে কি রূপ দেওয়া হবে তা এখনো স্পষ্ট নয় । কিন্তু নৈতিকতা সংক্রান্ত অপরাধের জন্য মৃত্যুদণ্ডসহ অন্য আইনি প্রক্রিয়াগুলো আগের মতোই বহাল থাকবে বলে জানানো হয়েছে ৷
হিজাবে চুল ঠিকমতো ঢেকে না রাখার অপরাধে চলতি বছরের সেপ্টেম্বরে মাহসা আমিনিকে গ্রেফতার করেছিল তেহেরানের নীতি পুলিশ । হেফাজতে নিয়ে পুলিশ তাঁকে এমন নৃশংসভাবে পিটিয়েছিল যে মেয়েটি কোমায় চলে যায় । পরে ১৬ সেপ্টেম্বর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হয় । এ নিয়ে ইরান সরকারের বিরুদ্ধে দেশ ও দেশের বাইরে বিক্ষোভে ফেটে পড়ে ইরানিরা । এযাবৎ ৩০০-এর অধিক বিক্ষোভকারীকে গুলি করে মেরেছে ইরানের নিরাপত্তাবাহিনী । তবে শনিবার ইরানের নিরাপত্তা সংক্রান্ত রাষ্ট্রীয় সংস্থা প্রথমবারের মতো ২০০ জনের প্রাণহানির কথা স্বীকার করেছে ৷
শনিবার মন্তাজেরি জানান,মহিলাদের হেডস্কার্ফ বা মাথা ঢেকে রাখা পোশাক পরার বাধ্যবাধকতা সংক্রান্ত কয়েক যুগের পুরাতন আইন সরকার পুনর্বিবেচনা করে দেখছে৷ প্রয়োজনে সেটি পরিবর্তন করা হতে পারে বলে ইঙ্গিত দেন তিনি ৷
প্রসঙ্গত,২০০৬ সালে ইরানে ‘নীতিপুলিশ’-এর গঠন হয় । তৎকালীন প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ আহমদিনেজাদের নির্দেশে চালু হয় মহিলার জন্য কঠোর হিজাব আইন । জনসমক্ষে নারী বা বয়ঃসন্ধিকাল অতিক্রম করা মেয়েদের মাথা ঢাকা ও ঢিলেঢালা পোশাক আছে কিনা মূলত তা দেখার দায়িত্ব বর্তায় নীতিপুলিশ-এর উপর ।।