এইদিন ওয়েবডেস্ক,তেহেরান,২১ ডিসেম্বর : বাল্যবিবাহের শিকার এক তরুণীকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছে ইরান । সামিরা সাবজিয়ান(Samira Sabzian)কে তার স্বামীকে হত্যার জন্য দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে । নরওয়ে ভিত্তিক ইরান হিউম্যান রাইটস (আইএইচআর) গ্রুপ বুধবার বলেছে,’আজ সকালে স্বামীকে ‘ইচ্ছাকৃত খুনের’ জন্য দোষী সামিরা সাবজিয়ানের(Samira Sabzian) বিরুদ্ধে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়েছে ।’ আইএইচআর আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছ থেকে ইরানে মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের ঊর্ধ্বগতি মোকাবেলার জন্য কঠোর প্রতিক্রিয়ার আহ্বান জানিয়েছে।
আইএইচআর-এর পরিচালক মাহমুদ আমিরি-মোগাদ্দাম বলেছেন,’সামিরা সাবজিয়ান বছরের পর বছর লিঙ্গ বর্ণবৈষম্য, বাল্যবিবাহ এবং গার্হস্থ্য সহিংসতা সহ্য করেছেন । আজ, তিনি একটি অদক্ষ এবং দুর্নীতিবাজ সরকারের মৃত্যুদন্ড কার্যকর করার যন্ত্রের শিকার হলেন । যে সরকার সহিংসতা এবং ভয় দেখানোর মাধ্যমে নিজেকে টিকিয়ে রাখে ।’ তিনি আরও বলেছেন,’সর্বোচ্চ নেতা আলী খামেনি এবং ইসলামিক প্রজাতন্ত্রের অন্যান্য কর্মকর্তাদের এই জঘন্য অপরাধের জন্য অবশ্যই জবাবদিহি করতে হবে ।’
সাবজিয়ান যখন বিয়ে করেছিলেন তখন তার বয়স ছিল মাত্র ১৫ বছর। চার বছর পর ২০১৩ সালে তিনি তার স্বামীকে হত্যা করেন। হত্যার সময় তার সন্তানের বয়স ছিল সাত বছর ছয় মাস । আইএইচআর সূত্রের উদ্ধৃতি দিয়ে বলেছে যে সাবজিয়ান প্রথমে তার স্বামীর পিতামাতার কাছ থেকে ক্ষমা পাওয়ার আশায় কারাগারে তার সন্তানদের সাথে দেখা করতে অস্বীকার করেছিল ।
বাচ্চাদের হেফাজত পৈতৃক আত্মীয়দের কাছে মঞ্জুর করা হয়েছিল। ইসলামিক দণ্ডবিধির অধীনে, হত্যার অভিযুক্তদের সকলকেই মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়, তাদের উদ্দেশ্য এবং অপরাধের পরিস্থিতি নির্বিশেষে।
নিহতের পরিবারকে মৃত্যুদণ্ড গ্রহণ বা আর্থিক ক্ষতিপূরণ বেছে নেওয়ার মধ্যে একটি পছন্দ দেওয়া হয়। সাবজিয়ানের ক্ষেত্রে, তার সন্তানের দাদু ও ঠাকুমা মামলার বাদী ছিলেন এবং মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করার অনুরোধ করেছিলেন ।
প্রসঙ্গত,বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় নারীদের ফাঁসিদাতা হিসাবে পরিচিত কট্টর ইসলামি মৌলবাদী রাষ্ট্র ইরান, ২০২২ সালে কমপক্ষে ১৬ জন মেয়েকে ফাঁসি দেওয়া হয়েছে। চলতি বছর এযাবৎ অন্তত ১৭ জন নারীর মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়েছে । ইরানের আইন অনুযায়ী, নারীরা বিবাহবিচ্ছেদ চাইতে পারে না, এমনকি পারিবারিক সহিংসতার ক্ষেত্রেও ।।