এইদিন ওয়েবডেস্ক,ঢাকা,২৯ অক্টোবর : বাংলাদেশের কুমিল্লার নানুয়া দীঘির পাড়ের একটি পূজো মন্ডপে কোরান রাখার ঘটনায় গ্রেফতার মূল অভিযুক্ত ইকবাল হোসেন পুলিশি জেরায় তার অপরাধের কথা কবুল করেছে বলে জানিয়েছে পুলিশ । এই ঘটনায় ইকবাল ছাড়াও ধৃত আরও তিন অভিযুক্ত একরাম ও দারোগাবাড়ী মাজারের দুই তত্ত্বাবধায়ক হাফেজ হুমায়ুন ও ফয়সালের পুলিশ হেফাজতের মেয়াদ শেষ হচ্ছে এদিন শুক্রবার । তাদের আদালতে তুলে আরও ৭ দিনের জন্য হেফাজতে চাওয়া হবে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) বিশেষ পুলিশ সুপার খান মোহাম্মদ রেজওয়ান ।
ঘটনাটি ঘটে গত ১৩ অক্টোবর দূর্গাষ্টমীর দিন রাতে । কুমিল্লার নানুয়া দীঘির পাড়ের একটি পূজো মণ্ডপে হনুমানের মূর্তির কোলের উপর একটি কোরান রেখে দেওয়ার পর হনুমানের গদাটা নিয়ে পালিয়ে আসে ইকবাল । প্রথমে হনুমান মূর্তির কোলে কোরান রাখা নিয়ে পুলিশ ধন্দ্বে থাকলেও পরে সিসিটিভি ফুটেজ প্রকাশ্যে আসার পরেই মূল অভিযুক্তর হদিশ মেলে । পরে সেই ছবি মোবাইল ফোনে তুলে সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করে ধর্ম অবমাননার গুজব ছড়ানো হয় । পরের দিন কুমিল্লাসহ গোটা বাংলাদেশ জুড়ে আক্রান্ত হয় সংখ্যালঘু হিন্দুরা । দেশ জুড়ে শতাধিক দূর্গাপূজো মন্ডপ ও প্রতিমায় ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করা হয় । বসতবাড়ি,ব্যাবসায়ী প্রতিষ্ঠানে ভাঙচুর লুটপাট ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে । ঘটে ধর্ষণের ঘটনাও । এক দশ বছরের শিশুকন্যাকেও দূষ্কৃতিদের লালসার শিকার হতে হয় । নোয়াখালির ইসকন মন্দিরে হামলা চালায় একদল ধর্মোন্মাদ মানুষ । পার্থ দাস নামে ইসকনের এক শিষ্যকে নৃসংসভাবে কুপিয়ে খুন করা হয় । দেশ জুড়ে হিংসার শিকার হন নুন্যতম ৭ জন সংখ্যালঘু হিন্দু । বহু মানুষ আহত হন ।
পরে সিসিটিভি ফুটেজের সুত্র ধরে ২১ অক্টোবর ইকবালকে কক্সবাজার থেকে গ্রেফতার করে পুলিশ । পরের দিন সকালে যে ব্যক্তি মুর্তির কোলে কোরান রাখার খবর ৯৯৯ নম্বরে ফোন করে দিয়েছিল, সেই একরামকেও গ্রেফতার করে পুলিশ । গ্রেফতার করা হয় নানুয়া দিধির পূজো মণ্ডপের অনতিদূরে দারোগাবাড়ী মাজারের তত্ত্বাবধায়ক হাফেজ হুমায়ুন ও ফয়সালকেও । সেই সঙ্গে ইকবালের কাছ থেকে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে একটি ঝোপ থেকে হনুমানের গদাটিও উদ্ধার হয় ।
গত ২৩ অক্টোবর ধৃত চারজনকে সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মিথিলা জাহান নিপার আদালতে তুলে ১০ দিনের হেফাজতের আবেদন জানায় সিআইডি । আদালত ধৃতদের ৭ দিনের সিআইডি হেফাজত মঞ্জুর করেন । এদিন ধৃতদের আদালতে তুলে ফের ৭ দিনের হেফাজতের আবেদন জানায় বাংলাদেশ পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ । তবে অভিযুক্ত ইকবালসহ চারজনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আরও পাঁচ দিনের সিআইডি হেফাজত মঞ্জুর করেছেন কুমিল্লার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক ফারহানা সুলতানা ।।