নীহারিকা মুখার্জ্জী,শিয়ালদহ,০৫ আগস্ট : এও কি সম্ভব, গল্প তাও আবার মাত্র ন’টা শব্দে – অবাক করার মত ঘটনা। বিষয়টি সামনে আসতেই একইসঙ্গে চমকে ওঠেন কবি-সাহিত্যিক সহ সাহিত্য প্রেমী মানুষরা। সবার মনে একটাই প্রশ্ন – যেখানে ন’টা শব্দের মাধ্যমে সম্পূর্ণ মনের ভাব প্রকাশ করার জন্য একটা বাক্য সৃষ্টি করতে অনেক সময় হিমশিম খেতে হয় সেখানে আস্ত একটা গল্প লেখা কি আদৌ সম্ভব ?
আসলে ছোট্ট একটা বীজের মধ্যে যেমন ভবিষ্যতের বৃহৎ বনস্পতি লুকিয়ে থাকে তেমনি এই ন’টা শব্দের মধ্যে লুকিয়ে আছে বৃহৎ গল্প সৃষ্টির সম্ভাবনা। আপন মনের মাধুরী ও কল্পনা মিশিয়ে কবি-সাহিত্যিকের হাত ধরে সেটি পরিণতি লাভ করবে । আন্তর্জাতিক পরমাণু গল্পচর্চা পর্ষদের উদ্যোগে আজ শনিবার দুই বাংলার দেড় শতাধিক কবি-সাহিত্যিকের উপস্থিতিতে শিয়ালদহের কৃষ্ণপদ ঘোষ মেমোরিয়াল ট্রাস্ট ভবনে আয়োজিত হয় ‘পরমাণু গল্প উৎসব ২০২৩’। এটি দ্বিতীয় বর্ষের সম্মেলন।
অনুষ্ঠানে ১৬০ জন কবির লেখা ৪৮০ টি পরমাণু গল্পের সংকলন প্রকাশিত হয়। উদ্যোক্তাদের পক্ষ থেকে হলে উপস্থিত প্রতিটি কবির হাতে তুলে দেওয়া হয় প্রয়াত সাহিত্যিক সমরেশ মজুমদার এর স্মরণে একটি স্মারক, সার্টিফিকেট ও পরমাণু গল্পের সংকলন। এর আগে উদ্বোধনী সঙ্গীতের মাধ্যমে অনুষ্ঠানের শুভ সূচনা করেন বিশিষ্ট সঙ্গীত শিল্পী নবলতা শীল। শুকুর আলী মল্লিক, বাবলু কাজী ও আতিকুর রহমান মিরনের কন্ঠে শোনা যায় বাংলাদেশের জাতীয় সঙ্গীত। ভারতের জাতীয় সঙ্গীতের মধ্যে দিয়ে অনুষ্ঠানটির সমাপ্তি ঘটে ।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন সাহিত্যিক বরুণ চক্রবর্তী, দিলীপ রায়, গোপাল চক্রবর্তী, আবদুস শুকুর আলী মল্লিক, প্রদীপ আচার্য্য, ছড়াকার বকুল বৈরাগী, নিগমানন্দ মণ্ডল, জয়দীপ চট্টোপাধ্যায়, সৈয়দ খায়রুল আলম, হাসিদা মুন, মুর্শিদ উজ জামান, সোহেলী মল্লিক, নুরুল শিপার খান, শাকিল আহমেদ, মাসুদ মিয়া, আতিকুর রহমান মিরন সহ আরও অনেকেই ।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত বিশিষ্ট ব্যক্তিরা পরমাণু গল্প বিষয়টি কী সেটা ব্যাখ্যা করেন। সংকলনে প্রকাশিত ছোট ছোট লাইনগুলি থেকে প্রেক্ষাপট নিয়ে নিজস্ব ভাবনার গল্প লেখার জন্য নবীন প্রতিভাদের তারা পরামর্শ দেন । সমগ্র অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন পরমাণু গল্প ভাবনার উদ্ভাবক তথা বিশিষ্ট কবি-সাহিত্যিক সুশান্ত ঘোষ। আগত কবি- সাহিত্যিকদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে তিনি বললেন – পরমাণু গল্প অনেকটা ভাবসম্প্রসারণের মত। এখানে ন’টা শব্দের ছোট্ট ভাবনার মধ্যেই একটা বড় গল্পের ইঙ্গিত প্রচ্ছন্ন ভাবে লুকিয়ে আছে। এবার সেটার সাহায্য নিয়ে কবিরা আপন মনের মাধুরী মিশিয়ে গল্পের মাধ্যমে নিজস্ব ভাবনা প্রকাশ করতেই পারেন। তাহলেই বাংলা কাব্য জগত সমৃদ্ধ হবে ।।