দিব্যেন্দু রায়,কাটোয়া(পূর্ব বর্ধমান),১৬ নভেম্বর : নির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে ফের এক সুদের কারবারিকে গ্রেফতার করল পূর্ব বর্ধমান জেলার কাটোয়া থানার পুলিশ । পুলিশ জানিয়েছে ধৃতের নাম বাপ্পাদিত্য ঘোষ ওরফে কুড়ো । তার বাড়ি কাটোয়া শহরের খেপাকালিতলা এলাকায় ৷বুধবার ধৃতকে কাটোয়া মহকুমা এসিজেএম আদালতে তোলা হলে তাকে ৩ দিনের জন্য পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দেন বিচারক । একের পর এক সুদের কারবারি গ্রেফতার হওয়ায় ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে এলাকায় ।
পুলিশ সুত্রে জানা গেছে,অভিযোগকারী ব্যক্তি হলেন কাটোয়া শহরের অনাদিবাবুর বাগান এলাকার বাসিন্দা সুবীর সাহা । পুলিশের কাছে অভিযোগে বছর ছাব্বিশের ওই যুবক জানিয়েছেন,২০২১ সালে করোনা মহামারীর আগে ঠেলা গাড়ি করে খাবার বিক্রির ব্যাবসা করার জন্য তিনি বাপ্পাদিত্য ঘোষের কাছে সুদে ৯ লক্ষ টাকা ঋণ নিয়েছিলেন । তারপর করোনার জন্য লক ডাউন ঘোষণা হলে ব্যবসা বন্ধ হয়ে যায় । ফলে বাপ্পাদিত্যর টাকা শোধ করতে গিয়ে কাটোয়ার রেলগেটের চাউলপট্টির বাসিন্দা সন্দীপ কোনার ও কাটোয়ার টেলিফোন ময়দান এলাকার বাসিন্দা পিযুসকান্তি দে নামে আরও দুই সুদের কারবারির ফাঁদে পড়ে যান । ওই দু’জনের কাছ থেকে তিনি যথাক্রমে সাড়ে ৪ লাখ ও ৩ লাখ টাকা দেনা করেছিলেন ।
সুবীর সাহার অভিযোগ,ওই তিন ব্যবসায়ী মিলে তাঁকে প্রাণে মারার ভয় দেখিয়ে জোর করে টাকা আদায় করত । সুদ আসল বাবদ বাপ্পাদিত্যকে সপ্তাহে ৮৬,০০০ টাকা,সন্দীপকে প্রতিদিন সাড়ে ৭ হাজার টাকা এবং পিযুসকান্তি সপ্তাহে ৩২,০০০ টাকা করে করে দিতে হচ্ছিল । কিন্তু সেই টাকা দিতে না পারায় ২০২১ সালের ১৪ নভেম্বর সুদের কারবারির লোকজন তার বাড়িতে লাঠিসোঁটা নিয়ে চড়াও হয়ে তাকে বেদম মারধর করে । মারের চোটে তিনি অজ্ঞান হয়ে গেলে মরে গেছে মনে করে পালিয়ে যায় হামলাকারীরা । পরে তিনি প্রাণ বাঁচাতে চেন্নাই পালিয়ে । কিন্তু দিন কয়েক আগে তিনি খবরের চ্যানেলে দেখতে পান ওই তিনজনের মধ্যে দু’জনকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে । এরপর সাহস সঞ্চয় করে তিনি বাড়ি ফিরে থানায় অভিযোগ দায়ের করেন ।
জানা গেছে,অভিযোগ দায়ের পর মঙ্গলবার রাতে বাপ্পাদিত্য ঘোষকে গ্রেফতার করে পুলিশ । অবশ্য আগেই কাটোয়া শহরের হরগৌরি পাড়ার বাসিন্দা প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষক অনিমেষ সরকারের অভিযোগের ভিত্তিতে সন্দীপ কোনার, পিযুস কান্তি দে’কে পুলিশ গ্রেফতার করেছিল । ওই দু’জনের পাশাপাশি চঞ্চল কুমার দে ও মৃণালকান্তি সূর নামে আরও দু’জন সুদের কারবারিকে গ্রেপ্তার করেছিল পুলিশ ।।