এইদিন ওয়েবডেস্ক,তেহেরান,২৭ এপ্রিল : ইরানের প্রভাবশালী শিয়া ধর্মগুরু আয়াতুল্লাহ আব্বাস আলী সোলেইমানিকে (Ayatollah Abbas Ali Soleimani) গুলি করে হত্যা করা হয়েছে । বুধবার তেহরানের প্রায় ২৩০ কিলোমিটার উত্তরে কাস্পিয়ান সাগরের তীরবর্তী বাবোলসার শহরে একজন সশস্ত্র ব্যক্তির হামলায় নিহত হন ৭৫ বর্ষীয় এই ধর্মগুরু । হত্যাকারী একজন ব্যাঙ্ক রক্ষক এবং তার কাছে থাকা আগ্নেয়াস্ত্র দিয়েই সোলেইমানিকে সে গুলি চালিয়ে হত্যা করে বলে জানা গেছে ।
ঘটনার পর হত্যাকারীকে গ্রেফতার করা হয়েছে । তবে স্থানীয় কর্তৃপক্ষের দাবি, এই হত্যাকাণ্ডের পিছনে কোনো রাজনৈতিক উদ্দেশ্য নেই । কিন্তু বিশেষজ্ঞরা সোলেইমানির হত্যাকে কুর্দি তরুনী মাহাসা আমিনির হত্যাকাণ্ডের প্রতিক্রিয়া হিসাবে দেখছেন । প্রসঙ্গত,সঠিকভাবে হিজাব রীতি পালন না করায় আমিনিকে নিজেদের হেফাজতে নিয়ে পিটিয়ে মেরেছিল ইরানের নৈতিকতা পুলিশ । তারপর থেকে বিদ্রোহের আগুনে জ্বলছে গোটা ইরান । এযাবৎ আন্দোলনকারী পাঁচ শতাধিক মানুষকে গুলি করে মেরেছে ইরানি পুলিশ । গ্রেফতার করে কারাগারে অমানবিক ভাবে নির্যাতন চালানো হচ্ছে বলে অভিযোগ । ফলে ইরানের বর্তমান শাসকের বিরুদ্ধে তীব্র রোষ কাজ করছে সাধারণ মানুষের মধ্যে । ইরানের ‘ইসলামী প্রজাতন্ত্রের উৎখাত’-এর দাবি উঠছে । এই পরিস্থিতিতে শিয়া ধর্মগুরু আয়াতুল্লাহ আব্বাস আলী সোলেইমানির হত্যার পিছনে সাধারণ মানুষের রোষ কাজ করছে বলে মনে করছে অভিজ্ঞমহল ।
নিহত সোলেইমানি শুধু একজন প্রবীণ ধর্মীয় নেতাই নন,তিনি ইরানের সুপ্রিম লিডার নিয়োগের দায়িত্বপ্রাপ্ত বিশেষজ্ঞ পরিষদের ৮৮ জন সদস্যের মধ্যে অন্যতম ছিলেন । ইরানের কাউন্সিল অফ গার্ডিয়ান দ্বারা অনুমোদিত প্রার্থীদের একটি গ্রুপ থেকে সরাসরি সার্বজনীন ভোটাধিকার দ্বারা আট বছরের জন্য নির্বাচিত করা হয় তাকে । তিনি সুপ্রিম লিডার নিয়োগ এবং সর্বোচ্চ নেতার কাজ তত্ত্বাবধান করতেন । সাংবিধানিকভাবে তাকে প্রত্যাহার করতে এবং প্রয়োজন মনে করলে একজন নতুন নেতা নিয়োগ করার ক্ষমতাপ্রাপ্ত ছিলেন সোলেইমানি । সোলেইমানি সুপ্রিম লিডার আয়াতুল্লাহ আলী খামেনির একজন প্রতিনিধি ছিলেন । এছাড়া
তেহরান ও ইসফাহানের মধ্যবর্তী একটি কেন্দ্রীয় শহর কাশানে এবং সুন্নি মুসলিম অধ্যুষিত দক্ষিণ-পূর্ব অঞ্চলের সিস্তান-বেলুচিস্তানের রাজধানী জাহেদানে জুমার নামাজের নেতা হিসেবে কাজ করেছেন সোলেইমানি ।
তবে ইরানে শিয়া ধর্মগুরুর হত্যা এই প্রথম নয় । এর আগে ২০২২ সালের এপ্রিলে ইরানের উত্তরপূর্ব মাশহাদ শহরে সন্দেহভাজন জিহাদিদের দ্বারা পরিচালিত একটি আক্রমণের দু’জন শিয়া ধর্মগুরুর মৃত্যু হয়েছিল ।।