প্রদীপ চট্টোপাধ্যায়,বর্ধমান,০৫ জুলাই : কোন প্রভাবশালী নেতা বা মন্ত্রী নয় । তবে এবার সরকারি চাকরি করে দেওয়ার নামে প্রতারণার ঘটনায় গ্রেপ্তার হল মা ও ছেলে।ধৃতদের নাম দুর্গা মণ্ডল ও সায়ন মণ্ডল । হুগলীর চুঁচুড়ার বিদ্যাভবন আনন্দমঠ এলাকায় তাদের বাড়ি। পূর্ব বর্ধমানের ভাতা থানার পুলিশ মঙ্গলবার রাতে বাড়ি থেকে তাদের গ্রেপ্তার করে। বুধবার ধৃতদের বর্ধমান সিজেএম আদালতে পেশ করা হয়।আর এদিনই সায়নের বাবা অরূপ মণ্ডল আদালতে আত্মসমর্পণ করেন।
আদালত সূত্রে জানা গিয়েছে, ভাতার থানার নাসিগ্রামের বাসিন্দা অনিল কুমার পাল। তিনি ২০১৯ সালের ২৫ অক্টোবর বর্ধমান সিজেএম আদালতে প্রতারণার কথা জানিয়ে মামলা করেন। সিজেএম প্রতারণা ও অর্থ আত্মসাতের ধারায় মামলা রুজু করে তদন্তের জন্য ভাতার থানার ওসিকে নির্দেশ দেন। আদালতের নির্দেশে পুলিশ কেস রুজু করলেও অভিযুক্তদের এতদিন ধরেনি । প্রভাবশালী যোগ থাকায় পুলিশ অভিযুক্তদের ধরছে না বলে অভিযোগ ওঠে।তদন্তকারী অফিসার অভিযুক্তদের পলাতক দেখিয়েই আদালতে চার্জশিট পেশ করে ।
এরপরেই গ্রেপ্তারি এড়াতে অভিযুক্তরা বর্ধমান জেলা ও দায়রা আদালতে আগাম জামিনের আবেদন করে। সেই আবেদন খারিজ করে দেন জেলা জজ। অভিযুক্তরা ধরা না পড়ায় তাদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে সিজেএম আদালত। তার পরও দীর্ঘদিন কেটে গেলেও অভিযুক্তদের ধরা হয়নি। আদালত নতুন করে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করলে শেষে তা কার্যকর করে পুলিশ দুই অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করে।
অভিযোগকারী অনিল পাল আদালতে অভিযোগ করেন, তিনি হুগলির ব্যান্ডেলে থার্মাল পাওয়ারে চাকরি করতেন। তাঁরই সহকারী অরূপ ও তার স্ত্রী নিজেদের রাজ্যের এক প্রভাবশালী মন্ত্রীর সঙ্গে পরিচয় আছে বলে জানায়। ছেলেকে চাকরি করে দেওয়ার আশ্বাস দিয়ে তারা তাঁর কাছ থেকে কয়েক দফায় চেকে ও অ্যাকাউন্টে ৪ লক্ষ টাকা নেয়। কিন্তু, তাঁর ছেলের চাকরি হয়নি। টাকা চাইতে গেলে তারা প্রভাবশালী মন্ত্রীর নাম করে তাঁকে বারবার ঘুরিয়ে দেওয়া হয়। অবসর নেওয়ার পর টাকা ফেরত পেতে তিনি ব্যান্ডেলের অফিসে পর্যন্ত যান। সেখানে গিয়ে তিনি জানতে পারেন, অভিযুক্তরা বহুজনকে প্রতারিত করেছে। এমনকি এমপ্লয়িজ কো-অপারেটিভের অ্যাকাউন্ট থেকে অরুপ যে কয়েক লক্ষ টাকা তছরুপ করার দায়ে অরূপ সে গ্রেপ্তার হয়েছিল সেটাও জানতে পারেন ।পরো সে ট্রান্সফার নিয়ে পুরুলিয়ার সাঁওতালডিহি থার্মাল পাওয়ার স্টেশনে চলে যায় ।
চাকরি দেওয়ার নাম করে কয়েক কোটি টাকা তছরুপ করে নেওয়ার কথা অনিল বাবু রাজ্য পুলিশের ডিজি ও বর্ধমান জেলার পুলিশ সুপারকে জানান। কিন্তু, পুলিশ কোনও ব্যবস্থা নেয়নি। ধৃতদের আইনজীবী জামিনের সওয়ালে তদন্ত শেষ করে চার্জশিট হয়ে যাওয়ার কথা উল্লেখ করেন।সিজেএম ৩ জনেরই জামিন মঞ্জুর করেন ।।