এইদিন ওয়েবডেস্ক,চাঁচল(মালদা),৩০ সেপ্টেম্বর : হিসাব মত আর মাস খানেকের মধ্যে আমন ধান ওঠার কথা । কিন্তু কোনও অজানা রোগে আক্রান্ত হয়ে ধান গাছ থেকে শীষ বের হয়নি এখনও । মালদা জেলার চাঁচল-১ ব্লক জুড়ে বিঘার পর বিঘা জমিতে একই চিত্র দেখা গেছে । ফলে মাথায় হাত পড়ে গেছে চাষীদের । এলাকার সিংহভাগ কৃষক ঋণ নিয়ে চাষ করেছেন । সারা বছর সংসার চালিয়ে কিভাবে সেই ঋণ শোধ করবেন,তা নিয়ে এখন চাষীরা চরম দুঃশ্চিন্তার মধ্য দিয়ে দিন কাটাচ্ছেন । বিগত কয়েক বছর ধরেই ধান গাছে একই সংক্রমন হলেও কৃষি দপ্তরের কোনও ভ্রুক্ষেপ নেই বলে অভিযোগ তুলছেন স্থানীয় চাষিরা । ক্ষতিগ্রস্ত চাষীদের সরকারিভাবে ক্ষতিপূরণের ব্যাবস্থা করা হোক বলে তাঁরা দাবি জানিয়েছেন ।
উত্তর মালদার চাঁচল মহকুমার মৌজাগুলিতে বিপুল পরিমাণে ধানের চাষ হয়। এবার মূলত বিবি ১১,সন্ন মাসুরী,হাজার দশ প্রজাতির ধান চাষ হয়েছে । চাঁচল ১ ব্লকের মৌজাগুলিতে এবারে প্রায় দশ হাজার হেক্টর জমিতে ধান চাষ হয়েছে বলে কৃষি বিভাগ সুত্রে খবর । তবে ফসল তোলার আগেই বিঘার পর বিঘা ধানের আগাছা জমিতে নষ্ট হতে চলছে । কারন অথচ অজানা রোগ পোকার আক্রমনে এখনও পর্যন্ত ধান গাছ থেকে শীষ বের হয়নি । ধান গাছের পাতা তামাটে রঙের হয়ে শুকিয়ে যাচ্ছে । এদিকে ধান হবে না জেনে মূলাইবাড়ি মৌজার কৃষকরা জমির ধান গাছ কেটে নিয়ে যাচ্ছেন বাড়ির গবাদি পশুর খাবারের জন্য ।
মুলাইবাড়ি গ্রামের বাসিন্দা আখতার হোসেন বলেন, ‘এবারে পনেরো বিঘা জমিতে ধান চাষ করেছিলাম ।লক্ষাধিক টাকা ঋণ নিয়েছি । কিন্তু ধানের শিষ আর ফুটলো না । ধান গাছ নেতিয়ে পড়ছে । কোন রোগে ধান গাছ আক্রান্ত হয়েছে বুঝতে পারছি না ।’ তিনি বলেন, ‘সরকারভাবে ক্ষতিপূরণের ব্যাবস্থা না করা হলে পরিবার নিয়ে আমাদের পথে বসতে হবে ।’
স্থানীয় চাষী আসাদ আলী বলেন, ‘প্রায় তিন বছর ধরে এই অজানা রোগের প্রকোপ শুরু হয়েছে ৷ এবার আমার প্রায় আট বিঘা জমির ধান ওই অজানা রোগে সংক্রমিত হয়েছে । আমিও ঋণ নিয়ে চাষ করেছিলাম । এদিকে সামনেই মেয়ের বিয়ে । কিভাবে মেয়ের বিয়ের খরচ বহন করব তা ভেবে কুলকিনারা পাচ্ছি না । কৃষি দপ্তরের এনিয়ে কোনও ভ্রুক্ষেপই নেই ।’
এই বিষয়ে চাঁচল-১ নং ব্লকের কৃষি অধিকর্তা দীপঙ্কর দেব বলেন, ‘ব্যাক্টেরিয়া লিফ ব্লাইট, ধসা,মাজরা পোকা রোগ হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে । একই বীজ বারবার প্রয়োগের ফলেই এই রোগ হয়ে থাকতে পারে । কৃষি দপ্তরের তরফ থেকে ক্ষতিগ্রস্ত জমিগুলি পরিদর্শন করা হয়েছে । বিষয়টি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে ।’ তিনি জানিয়েছেন,চাঁচল-১ ব্লকের প্রায় ২৩ হাজার কৃষক শস্যবীমার আওতায় রয়েছেন । তাই এনিয়ে অযথা আশঙ্কিত হওয়ার কারন নেই ।।