🌺 “যাঁহারা পাশ্চাত্য সভ্যতার বড়াই করেন, তাহাদের জিজ্ঞাসা করি, ইংলন্ডের জেলে নিম্নশ্রেণির কয়েদী চোর ডাকাত খুনীর এইরূপ আত্মসংযম, দয়াদাক্ষিণ্য, কৃতজ্ঞতা, পরার্থে ভগবদ্ভক্তি কি দেখা যায় ! প্রকৃতপক্ষে য়ুরােপ ভােক্তৃভূমি, ভারত দাতৃভূমি । দেব ও অসুর বলিয়া গীতায় দুই শ্রেণির জীব বর্ণিত আছে । ভারতবাসী স্বভাবতঃ দেবপ্রকৃতি, পাশ্চাত্যগণ স্বভাবতঃ অসুরপ্রকৃতি । কিন্তু এই ঘাের কলিতে পড়িয়া তমােভাবের প্রাধান্যবশত আর্যশিক্ষার অবলােপে দেশের অবনতি, সমাজের অবনতি ও ব্যক্তিগত অবনতিতে আমরা নিকৃষ্ট আসুরিকবৃত্তি সঞ্চয় করিতেছি আর পাশ্চাত্যগণ অন্যদিকে জাতীয় উন্নতি ও মনুষ্যত্বের ক্রমবিকাশের গুণে দেবভাব অর্জন করিতেছে ।
ইহা সত্ত্বেও তাহাদের দেবভাবে কতকটা অসুরত্ব এবং আমাদের আসুরিকভাবের মধ্যেও দেবভাব অস্পষ্টভাবে প্রতীয়মান। তাহাদের মধ্যে যে শ্রেষ্ঠ, সেও অসুরত্ব সম্পূর্ণ হারায় না। নিকৃষ্ট নিকৃষ্টে যখন তুলনা করি, ইহার যথার্থতা তখন অতি স্পষ্টরূপে বােঝা যায় । আজ যখন পাশ্চাত্যের সবচেয়ে অগ্রগণ্য মনীষীরা এক নতুন ও অধিকতর আধ্যাত্মিক ভাবপূর্ণ সভ্যতার আশায় এশিয়ার প্রতিভার দিকেই তাকিয়ে আছেন, তখন একথা চিন্তা করা খুবই আশ্চর্যের হবে যে, আমাদের স্বকীয়তা ও সম্ভাবনাকে পরিত্যাগ করে ইউরােপের বিলীয়মান ও নিস্তেজ অতীতে আস্থা স্থাপন করার চেয়ে ভাল আর কিছুই নেই ।”