এইদিন স্পোর্টস নিউজ,১৬ নভেম্বর : দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে শেষ টি-টোয়েন্টি ম্যাচে দুর্দান্ত জয় পেয়েছে ভারত। এই ম্যাচে আফ্রিকা ১৩৫ রানে গুটিয়ে যায়। আফ্রিকায় আজ ঝড়ের গতিতে ব্যাট করেছে ভারতীয় দল। প্রথমে ব্যাট করে ভারতীয় দল ২০ ওভারে মাত্র এক উইকেট হারিয়ে ২৮৩ রান করে। জবাবে আফ্রিকান দল ১৮.২ ওভারে ১৪৮ রানে অলআউট হয়। জোহানেসবার্গের ওয়ান্ডারার্স স্টেডিয়ামে ভারত ও দক্ষিণ আফ্রিকার মধ্যে ৪ ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজের শেষ ম্যাচটি অনুষ্ঠিত হয়েছে। এই ম্যাচে ভারতীয় ব্যাটসম্যানদের বিস্ফোরক ব্যাটিং দেখা গেল। গত ম্যাচের নায়ক তিলক ভার্মা তার দুর্দান্ত ফর্ম অব্যাহত রাখেন এবং এই ম্যাচেও সেঞ্চুরি করেন। এটি তিলক ভার্মার টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় সেঞ্চুরি। গত ম্যাচে ৫১ বলে সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন তিনি। কিন্তু এবার আরও কম বল নিলেন তিলক ।
আফ্রিকান দল ১৮.২ ওভারে ১৪৮ রানে অলআউট হয়ে যায়। আফ্রিকার হয়ে সর্বোচ্চ ৪৩ রান করেন স্টাবস। ভারতীয় দলের হয়ে সবচেয়ে বেশি ৩ উইকেট নেন আরশদীপ সিং। বরুণ চক্রবর্তী ও অক্ষর প্যাটেল পেয়েছেন ২-২টি করে উইকেট । ১টি করে উইকেট নেন হার্দিক পান্ডিয়া, রমনদীপ সিং ও রবি বিষ্ণোই।
জোহানেসবার্গে মাত্র ৪১ বলে সেঞ্চুরি করেন তিলক ভার্মা এবং অপরাজিত ১২০ রান করেন। তার ইনিংসে ছিল ৯টি চার ও ১০টি ছক্কা। এই সময়কালে তিনি ২৫৫.৩১ স্ট্রাইক রেটে রান করেন। এই ইনিংসেও অধিনায়ক সূর্যকুমার যাদবের জায়গায় ব্যাট করতে আসেন তিলক ভার্মা। সূর্যকুমার যাদব টি-টোয়েন্টিতে তিন নম্বরে খেলেন, কিন্তু তিলক ভার্মা গত দুই ম্যাচে সেই নম্বরে খেলছেন এবং দুইবারই সেঞ্চুরি করতে পেরেছেন । এই ইনিংস দিয়ে নিজের নামে বড় রেকর্ডও গড়েছেন তিলক ভার্মা। তিনি দ্বিতীয় ভারতীয় ব্যাটসম্যান হিসেবে পরপর দুটি টি-টোয়েন্টি ম্যাচে সেঞ্চুরি করলেন। এর আগে এই কীর্তি গড়েছিলেন সঞ্জু স্যামসন। সেই সঙ্গে বিশ্বের পঞ্চম ব্যাটসম্যান হিসেবে এই রেকর্ড গড়েন তিনি। এর আগে ফিল সল্ট, গুস্তাভ ম্যাকন এবং রিলি রুসোও টি-টোয়েন্টিতে টানা দুটি সেঞ্চুরি করেছেন।
তিলক ভার্মা ছাড়াও এই ইনিংসে সেঞ্চুরি করেন সঞ্জু স্যামসন। এই দুই খেলোয়াড়ের শক্তিশালী ব্যাটিংয়ে ভারতীয় দল ২০ ওভারে ১ উইকেট হারিয়ে ২৮৩ রান করে। এটি টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে ভারতের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ স্কোর। এই ম্যাচে সঞ্জু স্যামসন ৫৬ বলে ১০৯ রানের অপরাজিত ইনিংস খেলেন। এর সাথে অভিষেক শর্মাও ১৮ বলে ৩৬ রানের অবদান রাখেন। দক্ষিণ আফ্রিকার একমাত্র উইকেট নেন লুথো সিপামালা।
ম্যাচে ভারতীয় দল শুরু থেকেই আক্রমণাত্মক অবস্থান নেয়। সঞ্জু স্যামসন ও অভিষেক শর্মা (৩৬) ওপেনিংয়ে ৭৩ রানের জুটি গড়েন। এরপর তিলক ভার্মার সঙ্গে ৯৩ বলে ২১০ রানের রেকর্ড অপরাজিত জুটি গড়েন সঞ্জু। সঞ্জু স্যামসন ৫১ বলে সেঞ্চুরি এবং তিলক ভার্মা ৪১ বলে সেঞ্চুরি করেন। সঞ্জু স্যামসন ৫৬ বলে ১০৯ রানের দুর্দান্ত ইনিংস খেলেন। যেখানে তিলক ৪৭ বলে ১২০ রান করেন। এটি তার টি-টোয়েন্টি আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারে সঞ্জুর তৃতীয় সেঞ্চুরি, যা তিনি শেষ ৫ ম্যাচে করেছেন। অন্যদিকে, এটি ছিল তিলক বর্মার দ্বিতীয় সেঞ্চুরি। এই সিরিজে টানা দুটি সেঞ্চুরিও করেছেন তিনি।
টি-টোয়েন্টির ইতিহাসে প্রথমবারের মতো, এক দলের দুই ব্যাটসম্যান আইসিসি ফুল নেশন সদস্য দলগুলোর মধ্যে একসঙ্গে সেঞ্চুরি করেছেন। এটাই ইতিহাস। এই ফরম্যাটে তৃতীয়বারের মতো এমন ঘটনা ঘটল। এই ম্যাচে ভারতীয় দল ১ উইকেটে ২৮৩ রান করে। দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে টি-টোয়েন্টিতে এটাই সর্বোচ্চ স্কোর। এর আগে ২০২২ সালের ২ অক্টোবর ৩ উইকেটে ২৩৭ রান করেছিল।দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে শেষ ৬টি দ্বিপাক্ষিক টি-টোয়েন্টি সিরিজের ৩টিতেই জিতেছে ভারত। যদিও ৩টি টি-টোয়েন্টি সিরিজ ড্র হয়েছে। ভারত ও দক্ষিণ আফ্রিকার মধ্যে এখনও পর্যন্ত ৯ টি দ্বিপাক্ষিক টি-টোয়েন্টি সিরিজ খেলা হয়েছে। এই সময়ে ভারত জিতেছে ৪টি এবং আফ্রিকা ২টি। ৩টি সিরিজ ড্র হয়েছে। ভারতীয় দল সর্বশেষ ২০১৫ সালের অক্টোবরে দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে দ্বিপাক্ষিক টি-টোয়েন্টি সিরিজে হেরেছিল। এরপর থেকে হারেনি দলটি। এখন দশম দ্বিপাক্ষিক টি-টোয়েন্টি সিরিজ খেলা হচ্ছে ভারত ও দক্ষিণ আফ্রিকার মধ্যে । এর আগে শ্রীলঙ্কা ও বাংলাদেশকে হারিয়েছে ভারত ।।