এইদিন ওয়েবডেস্ক,ইম্ফল,০৯ মার্চ : মিয়ানমারের রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশকারীদের ফেরত পাঠানো শুরু করলো ভারত । উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য মণিপুর থেকে প্রথম দফায় বেশ কয়েকজন রোহিঙ্গাকে ফেরত পাঠানো হয়েছে বলে জানা গেছে । শুক্রবার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এক্স-এ একটি পোস্ট করে এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন মণিপুরের মুখ্যমন্ত্রী এন বীরেন সিং ।তিনি লিখেছেন,’অবৈধভাবে ভারতে প্রবেশ করা মিয়ানমারের নাগরিকদের প্রথম ব্যাচকে আজ ফেরত পাঠানো হয়েছে। যদিও ভারত ১৯৫১ শরণার্থী কনভেনশনে স্বাক্ষরকারী নয়, তারপরও মানবিক বিবেচনায় দীর্ঘদিন ধরে মিয়ানমারের বিপদগ্রস্ত নাগরিকদের আশ্রয় ও সহায়তা দিয়েছে ভারত সরকার ।’
অন্যদিকে মণিপুরের কামজং জেলায় আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের অবাধভাবে ঘুরে বেড়ানোর উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে । কামজংয়ের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট হুঙ্গো ইউরেইকান একটি আদেশ জারি করে জানিয়েছেন যে কামজং জেলায় মিয়ানমারের শরণার্থীদের অবশ্যই শরণার্থী শিবিরে নিজেদেরকে কঠোরভাবে সীমাবদ্ধ রাখতে হবে৷ তারা কোনও ব্যবসা বা বাণিজ্যে জড়িত হওয়া নিষিদ্ধ এবং শ্রমিক / সাহায্যকারী বা অন্য কোথাও কাজ করা থেকে কঠোরভাবে নিষিদ্ধ করা হচ্ছে ৷
প্রসঙ্গত, মিজোরাম, মণিপুর, অরুণাচল ও নাগাল্যান্ড রাজ্যের সঙ্গে প্রায় ১ হাজার ৬৪৩ কিলোমিটার সীমান্ত আছে। নৃতাত্ত্বিক পরিচয়ের দিক থেকেও মিয়ানমারের জনগণ ও ভারতের এই চার রাজ্যের জনগণ নৃতাত্ত্বিক পরিচয় বেশ কাছাকাছি। ২০২১ সালের পয়লা ফেব্রুয়ারী গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত অং সান সু চি’র দলকে হটিয়ে মিয়ানমারের ক্ষমতা দখল করে জেনারেল মিন অং হ্লাইং নেতৃত্বাধীন সামরিক জান্তা। এরপর থেকেই দেশটির বিভিন্ন জায়গায় জোরালো হতে থাকে জান্তাবিরোধী প্রতিবাদ-বিক্ষোভ।
তবে সময়ের ব্যবধানে পাল্টাতে থাকে সেই চিত্র। বিভিন্ন জাতিগত সশস্ত্র গোষ্ঠী তাদের শক্তি আরও বাড়িয়ে পুরো দেশে মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে। এই অবস্থায় জটিল থেকে জটিলতর হচ্ছে মিয়ানমার পরিস্থিতি। দেশটির বিভিন্ন সশস্ত্র গ্রুপের সঙ্গে সীমান্তবর্তী প্রদেশে সামরিক সরকারের লড়াই এখন তুঙ্গে। বিদ্রোহীদের হামলায় শান ও রাখাইন প্রদেশে কোণঠাসা হয়ে পড়েছে সামরিক জান্তা। এমনকি রাখাইনে আরাকান আর্মি যেভাবে শক্তি বাড়িয়ে বিভিন্ন এলাকা দখল করে নিচ্ছে, এতে বিচলিত হয়ে পড়েছে মিয়ানমার সরকার।
সংঘাতের আঁচ থেকে সীমান্তবর্তী চার রাজ্যকে মুক্ত রাখতে গত ফেব্রুয়ারীতে মিয়ানমারের শরণার্থীদের ফেরত পাঠানোর ঘোষণা করেছিল নরেন্দ্র মোদীর সরকার। শুক্রবার থেকে তার বাস্তবায়ন শুরু হল মনিপুর থেকে । যদিও বাংলাদেশের বিভিন্ন ক্যাম্প থেকে লাখ লাখ রোহিঙ্গা সীমান্ত অতিক্রম করে পশ্চিমবঙ্গ, আসাম, ত্রিপুরা প্রভৃতি রাজ্যে অবৈধভাবে বসবাস করতে । ভোটব্যাঙ্ক ভরানোর উদ্দেশ্যে পশ্চিমবঙ্গের শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেসের বিরুদ্ধে রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশকারীদের ভোটার কার্ড করে দেওয়ার অভিযোগ উঠছে ৷।