এইদিন ওয়েবডেস্ক,নয়া দিল্লি,০৮ ডিসেম্বর : ‘বিশ্ব বৈষম্য প্রতিবেদন ২০২২’ (‘World Inequality Report 2022’)-এ ভারতকে “দরিদ্র এবং বৈষম্যের দেশ” বলে অবিহিত করা হয়েছে । প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ভারতের ধনসম্পদ অল্প কিছু “বিত্তশালী অভিজাতদের” কাছে কেন্দ্রীভূত রয়েছে । অন্যদিকে কয়েক দশক ধরে দেশের অপেক্ষাকৃত উচ্চ অর্থনৈতিক বৃদ্ধি সত্ত্বেও অর্ধেকের নিচে জনসংখ্যার গড় আয়ের হ্রাস অব্যাহত রয়ে গেছে ।
‘ওয়ার্ল্ড ইনইক্যুইলিটি রিপোর্ট ২০২২’ শিরোনামের প্রতিবেদনটি লিখেছেন লুকাস চ্যান্সেল । লুকাস ‘ওয়ার্ল্ড ইনইক্যুইলিটি ল্যাব’-এর সহ পরিচালক । প্রতিবেদন তৈরিতে তাঁকে সহযোগিতায় করেছেন ফরাসি অর্থনীতিবিদ টমাস পিকেটি অনান্য বিশেষজ্ঞরা । আর্থিক বৈষম্যের নিরিখে শীর্ষ তালিকায় থাকা দক্ষিন আফ্রিকা,ব্রাজিলের মত প্রভৃতি দেশগুলির তালিকায় ভারতকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে এই প্রতিবেদনে ।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ভারত এমন একটি দেশ যেখানে জনসংখ্যার ১০ শতাংশ মানুষের হাতে রয়েছে জাতীয় আয়ের ৫৭ শতাংশ শেয়ার । যেখানে ৫০ শতাংশের বেশি মানুষের মাত্র ১৩ শতাংশ শেয়ার রয়েছে । ভারতের প্রাপ্তবয়স্ক জনসংখ্যার গড় জাতীয় আয় ২,০৪,২০০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছিল । তার মধ্যে নীচের ৫০ শতাংশ জনসংখ্যার আয় ৫৩,৬১০ টাকা । যেখানে শীর্ষ ১১ শতাংশ উপার্জন করেছে ১১,৬৬,৫২০ টাকার চেয়েও বেশি । উভয়ের মধ্যে ব্যবধান প্রায় ২০ গুন । প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, ভারতে লিঙ্গ বৈষম্য অনেক বেশি । নারী শ্রমিকদের আয়ের অংশ মাত্র ১৮ শতাংশ । এটি এশিয়ার গড় থেকে কম (২১ শতাংশ, চীন বাদে ) । এছাড়া ভারতে গড় পরিবারের সম্পদ ৯,৮৩,০১০ টাকা । পরিশেষে বলা হয়েছে, “ভারত একটি দরিদ্র এবং উচ্চবিত্তে ভরা অসম দেশ ।”এই প্রতিবেদনটি ২০২১ সালের উপর ভিত্তি করে তৈরি করা হয়েছে । প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, ২০২০ সালে দেশের বৈশ্বিক আয়ও খুবই নিম্ন পর্যায়ে পৌঁছেছে।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০২১ সালে ভারতে শীর্ষ দশ শতাংশ এবং নীচের ৫০ শতাংশের মধ্যে আয়ের ব্যবধান এক থেকে ২২ এর মধ্যে । যেখানে ব্রিক্সস (BRICS) দেশগুলির মধ্যে দক্ষিণ আফ্রিকা এবং ব্রাজিলের আয়ের বৈষম্য ভারতের তুলনায় বেশি । দশ শতাংশ এবং নীচের ৫০ শতাংশের মধ্যে আয়ের ব্যবধান দক্ষিণ আফ্রিকায় এক থেকে ৬৩ এবং ব্রাজিলে এক থেকে ২৯ শতাংশে দাঁড়িয়েছে । চীন ও রাশিয়া উভয় ক্ষেত্রেই তা এক থেকে ১৪ । সবচেয়ে ধনী দেশ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে অনুপাত এক থেকে ১৭ ।
প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, গত তিন বছরে ভারত সরকার কর্তৃক প্রকাশিত তথ্যের গুণমানের অবনতি হয়েছে, যা সাম্প্রতিক বৈষম্যের পরিবর্তনগুলিকে মূল্যায়ন করা কঠিন করে তুলেছে ।।